Silicon Statue of Dead Wife: ‘আমার কাছেই রয়েছে’, করোনায় মৃত স্ত্রীর মূর্তি গড়ালেন কৈখালির তাপস

Kolkata: ইন্দ্রাণী শাণ্ডিল্য ও তাপস শাণ্ডিল্যর একইসঙ্গে করোনা হয়েছিল। সেই অতিমারিই স্বামীর থেকে কেড়ে নিল স্ত্রীকে।

Silicon Statue of Dead Wife: 'আমার কাছেই রয়েছে', করোনায় মৃত স্ত্রীর মূর্তি গড়ালেন কৈখালির তাপস
ইন্দ্রাণী শাণ্ডিল্যর সিলিকন মূর্তি। ডানদিকে তাপস শাণ্ডিল্য।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 09, 2023 | 7:30 AM

কলকাতা: করোনা (Covid19) কেড়ে নিয়েছিল স্ত্রীকে। এভাবে স্ত্রীর চলে যাওয়া কিছুতেই মানতে পারেননি কৈখালির ৬৫ বছর বয়সী তাপস শাণ্ডিল্য। প্রতিটা মুহূর্ত স্ত্রীর না থাকা ভীষণভাবে নাড়া দিত তাঁকে। সবসময় ভাবতেন, আরও একবার যদি মুখোমুখি বসা যেত তাঁর। কথা না হোক, অন্তত মুখের দিকে তাকিয়েই না হয় কাটিয়ে দেওয়া যেত সারা বেলা। এরপরই প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা খরচ করে স্ত্রীর সিলিকন মূর্তি তৈরি করান তাপসবাবু। ভিআইপি রোডের বাড়িতে স্ত্রী ইন্দ্রাণীর যে জায়গাটা ছিল সবথেকে বেশি পছন্দের, সেখানেই বসানো হয় সেই মূর্তি। একেবারে যেন জ্যান্ত মানুষ। গা ভরা গয়না, পরণে পরিপাটি অসম সিল্ক, চোখে চশমা, সারাক্ষণ ঘরের কর্ত্রীর নজর চারদিকে। যে অসম সিল্কটি পরা, সেটি তিনি ছেলের বিয়েতে পরেছিলেন। তাপস শাণ্ডিল্য জানান, “চশমাটা ওরই। শাড়িটা আমার ছেলের বিয়ের রিসেপশনে কিনেছিলাম। আমার তখন অসমে পোস্টিং। ২০১১ সালের ঘটনা। আমি তেমনভাবেই মূর্তি তৈরি করতে বলেছিলাম যাতে শাড়ি, ব্লাউজ সবই ব্যবহার করা যায়। এটা আমারও খুব পছন্দের শাড়ি। হাতের বালাটা করিয়ে দিয়েছি। গলার হারটা সোনারও আছে। তবে ওটার ঝুলটা একটু কম। ভাবলাম, ঝুলটা বেশি হলে আরও ভাল দেখাবে। তাই আলাদা নিয়ে আসি।” অনেকে তাপসবাবুকে বলতেন মূর্তি ঘরে থাকলে যদি ভয় লাগে। তাপস শাণ্ডিল্য বলেন, “ভয়ের তো প্রশ্নই নেই। আমি তো মনে করি সে আমার কাছে রয়েছে।”

ইন্দ্রাণী শাণ্ডিল্য ও তাপস শাণ্ডিল্যর একইসঙ্গে করোনা হয়েছিল। সেই অতিমারিই স্বামীর থেকে কেড়ে নিল স্ত্রীকে। কোভিড ধরা পড়ার ২-৩ দিনের মধ্যে সমস্যা দেখা দিল ইন্দ্রাণীদেবীর। তিনি করোমর্বিডিটিতে ভুগছিলেন। লিভার, সুগারের সমস্যা থাকায় অক্সিজেন লেভেল কমে যাচ্ছিল। তবে হাসপাতাল, নার্সিংহোমে বেড পাচ্ছিলেন না সে সময়। পরে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পরে বেড পান।

একদিনের মধ্যেই সব শেষ। বিরাটিতে স্টুডিও রয়েছে শিল্পী সুবিমল দাসের। সেখানেই যোগাযোগ করেন এয়ারপোর্ট অথরিটির অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তাপস শাণ্ডিল্য। সুবিমল দাসের হাতেই নতুন ‘জীবন’ পান ইন্দ্রাণী। ওজন ৩০ কেজির কাছাকাছি। আবারও স্বামীর ঘরে ফেরেন। স্বামীও যেন চোখে হারান স্ত্রীকে। এভাবেই বাকি জীবনটা কাটাতে চান তাপসবাবু।