Jadavpur University: ‘জম্মু ও কাশ্মীরের ছেলে যাদবপুরে ভর্তি হতে পারে না’, ছাত্রমৃত্যুতে NIA চাইছেন শুভেন্দু
Suvendu Adhikari: যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য এনআইএ তদন্তের দাবি তুললেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার দাবি, গ্রেফতার হওয়া পড়ুয়াদের মধ্যে একজন জম্মু ও কাশ্মীর থেকে এসেছেন। আর তারপর তাঁকে রেসিডেনশিয়াল সার্টিফিকেট দিয়েছে এ রাজ্যের শাসক দলের নেতা।
কলকাতা: যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হচ্ছে গোটা রাজ্য। উঠছে র্যাগিং-এর তত্ত্ব। কীভাবে ওই পড়ুয়ার মৃত্যু হল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। পুলিশ তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত ৯জনকে গ্রেফতার করেছে। আর এসবের মধ্যেই যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য এনআইএ তদন্তের দাবি তুললেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার দাবি, গ্রেফতার হওয়া পড়ুয়াদের মধ্যে একজন জম্মু ও কাশ্মীর থেকে এসেছেন। আর তারপর তাঁকে রেসিডেনশিয়াল সার্টিফিকেট দিয়েছে এ রাজ্যের শাসক দলের নেতা। বুধবার বিকেলে কলকাতায় ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে এক কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখার সময় এই দাবি করেন শুভেন্দু অধিকারী।
ঠিক কী বললেন বিরোধী দলনেতা? যাদবপুরের পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে দুঃখপ্রকাশ কে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘যাদবপুরের যে ভবিষ্যৎ আমাদের চলে গিয়েছে, সেখানেও আমি NIA-র দাবি করব। আজ জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আসা আজমল বলে একটি ছেলে ধরা পড়েছে। সঙ্গে আরিফ বলে আর একটি ছেলেও ধরা পড়েছে।’ তাঁর বক্তব্য, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের ছেলে যাদবপুরে ভর্তি হতে পারে না। তাঁকে রেসিডেনশিয়াল সার্টিফিকেট দিয়েছে শাসক দলের নেতা। ওবিসি (এ)- করে তাঁকে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আজ তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। এর সঙ্গে কাদের লিঙ্ক আছে, মধ্যযুগীয় বর্বরতা কারা করতে পারে, তা সহজেই আমাদের অনুমেয়। একে একেবারে শিকড় থেকে তুলে ফেলতে হবে, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
এদিকে শুভেন্দুর এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূল যুব নেতা কোহিনুর মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়কে উপাচার্যহীন করে রাখার কারণেই যাবতীয় সমস্যা হচ্ছে। একইসঙ্গে রাজ্যপাল বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছেন বলেও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন তিনি। বললেন, ‘শুভেন্দুর দলের নেতা আমাদের রাজ্যপাল এই বিশ্ববিদ্যালয়কে উপাচার্যহীন করে রেখে দিয়েছেন। উপাচার্যহীন করে রাখার ফলে প্রশাসন মাথার উপর নেই। প্রশাসন মাথার উপর না থাকায় এক ঘটনাগুলি ঘটছে। এখানে বাম-রাম গোটাটাই মিলিত। গোটাটাই সিন্ডিকেট। এখানে শুভেন্দুর দলের লোকও আছে। সুজন-সেলিমদের দলের লোকও আছে।’
একইসঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীর যোগ থেকে এসে যাদবপুরে ভর্তি হওয়া নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী যে অভিযোগ তুলেছেন, সেটিকেও বাড়তি গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূলের যুব নেতা। তাঁর বক্তব্য, ‘শুভেন্দু অধিকারী প্রতি মাসেই একটি করে গল্প ফাঁদেন, একটি করে টুইট করেন। এর কোনও গুরুত্ব বাংলার মানুষ আর দিচ্ছেন না।’
তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া ও আইটি সেলের দায়িত্বে থাকা দেবাংশু ভট্টাচার্য বলছেন, ‘বাইরের রাজ্যের অনেকেই তো এখানে পড়তে আসেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও এখানকার প্রচুর ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করতে যায়। আর বিজেপি জম্মু ও কাশ্মীরকে আলাদা করে দেখছে কেন? প্রথম যে ছেলেটি ধরা পড়ল, সেই সৌরভের ফেসবুকে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আবেদন কেন ছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর শুভেন্দু অধিকারী আগে দিন। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর আগেও সিসিটিভি লাগানোর চেষ্টা করেছিল। তখন হোক কলরব বা অন্যান্য আন্দোলন করে বিষয়টি দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে দেখা যাবে, সেই সময় বিজেপি ওই আন্দোলনে সমর্থন করেছিল।’
শুভেন্দুর এনআইএ-র দাবি নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। তাঁর প্রশ্ন, এনআইএ দিয়ে কী হবে! কুণাল সাফ বক্তব্য, তৃণমূল মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করে না। রাজ্য সরকার ও তৃণমূল চায় ঘটনার ন্যায় বিচার হোক।