Mamata Banerjee: উপাচার্যরা বোসের ‘বন্ধু’! কটাক্ষ মমতার, বললেন, ‘বিজেপি সেলের প্রেসিডেন্ট যাদবপুরের VC’
Vice Chancellor Appointment: যাদবপুরের উপাচার্য নিয়োগ ঘিরেও আপত্তি রয়েছে মমতার। সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস।
কলকাতা: সরকারের সঙ্গে ‘পাঙ্গা’ নয়, রাজভবনকে ফের কড়া বার্তা দিয়ে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশ থেকে নাম না করে বাংলার সাংবিধানিক প্রধানকে একপ্রকার হুঁশিয়ারিই দিয়ে রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। বিশেষ করে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপাল যে পন্থায় উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন, তা নিয়ে ঘোর আপত্তি মমতার। বললেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের টালমাটাল অবস্থা। নিজের বন্ধুকে এনে উপাচার্য করে বসিয়ে দিচ্ছেন।’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, তিনি রাজ্যপালের পদকে সম্মান করেন। কিন্তু রাজ্যপাল যেভাবে ‘সংবিধান উলঙ্ঘিত করছেন’ তা একেবারেই না পসন্দ মমতার।
উল্লেখ্য, রাজ্যের আচার্য বিল সেই জগদীপ ধনখড়ের আমল থেকে রাজভবনে থমকে রয়েছে। সি ভি আনন্দ বোস নতুন রাজ্যপাল হয়ে আসার পরও সেই জট কাটেনি। উল্টে বিগত দিনগুলিতে দেখা গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত চরমে উঠেছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তী উপচার্য করা হয়েছিল। তারপর অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস এম ওয়াহবকে আনা হয়েছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে। প্রাক্তন পুলিশকর্তাকে উপাচার্য করা নিয়ে এদিন তীব্র আপত্তির কথা শোনালেন মমতা। বললেন, ‘নিজের বন্ধুকে এনে বসিয়ে দিচ্ছেন উপাচার্য করে। অন্তত ১০ বছর প্রফেসর হতে হয় উপাচার্য হতে। একজন আইপিএস, তিনি কোনওদিন প্রফেসরির ট্রেনিং-ই নেননি। তাঁকে নিয়ে এসে বসিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য করে।’
যাদবপুরের উপাচার্য নিয়োগ ঘিরেও আপত্তি রয়েছে মমতার। সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। এদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ থেকে মমতা বললেন, ‘যাদবপুরে বিজেপি সেলের প্রেসিডেন্টকে উপাচার্য করে বসিয়ে দিয়েছেন।’ উল্লেখ্য, যাদবপুরের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া বুদ্ধদেব সাউ রাজনৈতিকভাবে বিজেপির ঘনিষ্ঠ বলে আগেও বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠছে, তিনি বিজেপিপন্থী অধ্যাপক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। যদিও অতীতে আবুটা কিংবা ওয়েবকুপার মতো সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। যদিও নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর বুদ্ধদেব সাউয়ের দাবি, তিনি একজন শিক্ষক পরিচিতি নিয়েই কাজ করতে চান। এক্ষেত্রে রাজনীতির রং না লাগানোর পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন তিনি।
বাংলার সাংবিধানিক প্রধানকে এদিন এক্তিয়ারও স্মরণ করিয়ে দিলেন মমতা। বললেন, ‘আপনার এক্তিয়ারে আমরা যাচ্ছি না। দয়া করে আমাদের এক্তিয়ারে আসার চেষ্টা করবেন না।’ রাজ্যপাল যে মনোনীত এবং সরকার যে নির্বাচিত, এই ফারাকটাও এদিন স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে যেন পাঙ্গা না নেওয়া হয়।’ মমতার সাফ বক্তব্য, এটা ‘মগের মুলুক’ নয় এবং যা ইচ্ছে তাই করা যাবে না।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন,’মুখ্যমন্ত্রীর এই বেনজির ভাষায় রাজ্যপালকে আক্রমণ, বাংলার সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ বিচার করবেন। এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু, ধীরে ধীরে আক্রমণের তীব্রতা বাড়ছে এবং যে ধরনের শব্দচয়ন করছেন, তা একজন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য মানানসই নয়।’