Mamata Banerjee: তিন মাসের মধ্যেই কেন পার্থের ‘সত্য’ জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী? কী বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা

Mamata on ED: শনিবারই বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষরা জানিয়ে দিয়েছেন, অভিযোগ না প্রমাণ হওয়া অবধি পার্থের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নয়।

Mamata Banerjee: তিন মাসের মধ্যেই কেন পার্থের 'সত্য' জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী? কী বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 25, 2022 | 11:31 PM

কলকাতা: এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতির শিরোনামে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে শনিবার (২৩ জুলাই)। এই বিষয়টি নিয়ে প্রথম থেকেই তৃণমূল তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। শনিবারই বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষরা জানিয়ে দিয়েছেন, অভিযোগ না প্রমাণ হওয়া অবধি পার্থের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নয়। সোমবার নজরুল মঞ্চে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘ঘটনা না রটনা’, তা জানতে বিচার প্রক্রিয়ায় আস্থা রয়েছে তাঁদের। তবে একইসঙ্গে এদিন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, তিন মাসের মধ্যে বিচার চান তিনি। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইডি তদন্ত শেষ করুক, চান মমতা। কিন্তু এই সময় বেঁধে দেওয়ার কারণ কী?

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “উনি যেমন কথা ছুঁড়ে দেন, তেমনই ছুঁড়ে দিয়েছেন। ভাবখানা এমন, উনি সবই তিন মাসের মধ্যে করতে পারেন। আমরাও তো চাই, বিচার দ্রুত হোক। বরং দ্রুততম হোক। সরকার কি সেটা চায়? যদি চাইত রাজ্যের কমিশনের রিপোর্টগুলোই তো এখনও রাজ্য সরকার পেশ করতে পারেনি।”

একই সুর সিপিএমের শতরূপ ঘোষের গলাতেও। তাঁর কথায়, “আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একমত। তিন মাসের মধ্যেই শেষ করতে হবে। পারলে তিন সপ্তাহের মধ্যে শেষ করুক। এ তো ৮-৯ বছরের দুর্নীতি। কেন এতদিন দেরী হল, সেটাই তো কথা। আসলে উনি মনে হয় দলের ভাঙনটা রুখতে এখন তিন মাসের কথা বলছেন।” এ নিয়ে অবশ্য বিজেপির তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভময় মৈত্র বলেন, “ভারতবর্ষের আইন ব্যবস্থায় যে ধরনের দীর্ঘসূত্রিতার কথা আমরা জানি, তাতে কোনও বিচারই যে তিন মাসে সম্ভব না তা সকলেই জানেন। আমাদের দেশের এক একটি কেস তো বছরের পর বছর চলে। শুধু আর্থিক নয়, সার্ভিস ম্যাটার থেকে শুরু করে খুন জখম সব ক্ষেত্রে বহু বছর ধরে চলে। এই ক্ষেত্রে এটা বলার মানে, আইন ব্যবস্থা ভীষণভাবেই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিচ্ছে। সুতরাং সেই ব্যবস্থাটার উপর চাপ তৈরি করা। এটা রাজনৈতিক কৌশল। আইন ব্যবস্থার উপর চাপ দেওয়া, যাতে এতে কোনও দুর্নীতি হয়েছে কি না, অপরাধ আছে কি না তা আইন দ্রুত বের করুক।”

একইসঙ্গে এই মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে রাজনৈতিক তাৎপর্যও খুঁজে পাচ্ছেন শুভময় মৈত্র। পঞ্চায়েত ভোট পরের বছরই। শুভময় মৈত্রের কথায়, “এ জায়গা থেকেই, ওনারা হয়ত বলবেন কেউ যদি দুর্নীতি করে থাকেন, তার দায় দলের নয়। ওনারা বলছেনও তেমনটাই। অর্থাৎ তৃণমূল সম্পর্কে মানুষের মধ্যে যাতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সেটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই মূলত এরকম বক্তব্য। আইন ব্যবস্থার দিকে প্রশ্নটা তুলে দেওয়া। অন্যের কোর্টে বল ঠেলে দেওয়া। একটা যুক্তির পাল্টা যুক্তি দেওয়াই কিন্তু রাজনৈতিক কৌশল। আইন ব্যবস্থার যে দুর্বলতা ভারতবর্ষে চিরকালীন, দীর্ঘসূত্রিতা, সেটা বলেই আইন ব্যবস্থাকে চাপে ফেলে জনগণের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা।”