West Bengal Panchayat Elections 2023: বাংলার হিংসায় রাহুলের ‘চুপ’ নিয়ে সম্বিতের পর প্রশ্ন তুললেন রবিশঙ্করও
West Bengal Panchayat Elections 2023: বলাইবাহুল্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় শাসকদলের বিরুদ্ধে ব্যাপক হিংসার অভিযোগ উঠেছে। খুন হয়েছেন একাধিক বিরোধী দলের কর্মী। তা নিয়ে তপ্ত বাংলা।
কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব মোটের ওপর মিটল। কোনও আশ্চর্যজনক কিছু না ঘটলে, এখনও পর্যন্ত তা হালচাল, তাতে সব জেলা পরিষদ দখলের পথে তৃণমূল, বিরোধীশূন্য অন্তত তিন জেলা। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে ব্যাপক হারে সবুজ ঝড়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনই আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্লট একপ্রকার তৈরি করল। চব্বিশকে লক্ষ্য করেই এগোচ্ছে শাসক শিবির ও যুযুধান প্রতিপক্ষ বিজেপি। চব্বিশকে লক্ষ্য রেখেই অ-বিজেপি জোট তৈরি করতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে ব্যাপারে বেশ কয়েক পদক্ষেপ এগিয়েছেন নেত্রী। নবান্নে বৈঠক সেরেছেন। কিন্তু বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে এত হিংসার কারণ অনুসন্ধানে বাংলায় এসে এবার অ-বিজেপি দলগুলির দিকেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। বাংলার নির্বাচনের হিংসার ক্ষেত্রেও টেনে আনলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। এর আগে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ ইস্যুতে বিজেপি-বিরোধী শক্তিকেই ঐক্যবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে জাতীয় দলগুলির সামনে তৃণমূলের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
রাজ্যে পঞ্চায়েত হিংসার তদন্তে বাংলায় এসেছে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। তারই প্রসাদ রবিশঙ্কর প্রসাদ। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, “বাংলায় যা হিংসা হয়েছে, তা গণতন্ত্রের লজ্জা। রাহুলজি, সীতারামজি আপনাদের কর্মীদের তো মারছে, আপনারা কিছু বলবেন না?” ঠিক একই বিষয়টি উত্থাপন করেছেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্র। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধীর ‘মহব্বত কা দুকান’ কোথায় গেল? বাংলার নির্বাচনে হিংসা নিয়ে রাহুল গান্ধী নিশ্চুপ কেন?” বলাইবাহুল্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় শাসকদলের বিরুদ্ধে ব্যাপক হিংসার অভিযোগ উঠেছে। খুন হয়েছেন একাধিক বিরোধী দলের কর্মী। তা নিয়ে তপ্ত বাংলা।
রবিশঙ্কর বলেন, “৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাও চুপ আপনারা?” হাইকম্যান্ড চুপ থাকলেও বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়েছে যাচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস। আগেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এই নিয়ে মন্তব্য করেছেন। অধীর প্রশ্ন তুলেছেন, “এত লুঠ করেও তৃণমূলের তৃপ্তি নেই। দু একটা সিটে হারলে তো সরকার পড়ত না, তাহলে এত খুন কেন? এত খুন করে মহান হবেন?” সেই একই বিষয়টি আরও একবার উস্কে দিলেন রবিশঙ্কর। তিনি বলেন, “এই সব না করে মমতাজি আপনি কটা আসন পেতেন?” তাঁর সংযোজন, “গোটা নিবাচন লজ্জা হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এই বাংলা কী হাল করেছেন মমতাজি?”
রবিশঙ্কর প্রশ্ন তোলেন, “এত লাভ হয়েছে যখন, তখন কেন এত মারা ,ব্যালটবাক্স ফেলার দরকার কী ছিল? কেন ব্যালট পেপার ছিনতাই করার দরকার ছিল?”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের বিষয়টিকে সামনে রেখেই তৃণমূল একটি অবিজেপি মতাদর্শ খাঁড়া করতে চেয়েছিলেন। রাহুল ইস্যুতে ইয়েচুরির সুরও মিলেছিল মমতার সঙ্গে। এবার বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে সেই একই প্রেক্ষাপট তৈরি করার প্রয়াস চালাচ্ছে বিজেপি।