‘কোনও বিধায়ক যে মুখ্যমন্ত্রী হবেন তার কোনও মানে নেই’, কী বোঝাতে চাইলেন দিলীপ?
দিলীপের বক্তব্যে সাফ হয়ে গিয়েছে, বিজেপির যে প্রার্থীরা বিধানসভা নির্বাচন লড়ছেন, তাঁদের মধ্যেই যে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন তার কোনও মানে নেই।
কলকাতা: দ্বিতীয় দফার ভোটের মুখেই বিরাট ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। দীর্ঘ সময় যাবত পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থী পদ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়ে রয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কার্যত আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। দিলীপের বক্তব্যে সাফ হয়ে গিয়েছে, বিজেপির যে প্রার্থীরা বিধানসভা নির্বাচন লড়ছেন, তাঁদের মধ্যেই যে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন তার কোনও মানে নেই।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, দিলীপ ঘোষ এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন যে, “পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি জেতার পর কোনও বিধায়কই যে মুখ্যমন্ত্রী হবেন সেটা আবশ্যক নয়।” রাজ্যের রাজনৈতিক হাওয়া নিয়ে তাঁর আরও বক্তব্য, “বাংলার শেষ দফার ভোট পর্যন্ত হাওয়া বিজেপির পক্ষেই বইবে।”
Not necessary that sitting MLA will become CM when BJP wins in West Bengal, says state party chief Dilip Ghosh
— Press Trust of India (@PTI_News) March 30, 2021
Momentum in favour of BJP will continue till last phase of assembly polls in West Bengal: State party chief Dilip Ghosh to PTI
— Press Trust of India (@PTI_News) March 30, 2021
বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্য যে নানা আঙ্গিকে গুরুত্বপূর্ণ তা আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই বললেই চলে। কেননা, গত ২০১৯ সালে এ রাজ্যে বিজেপি ১৮ টি লোকসভা আসন পাওয়ার পর থেকেই একটা প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে উঠতে শুরু করেছে। বাংলার বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর মুখ কে? সংগঠনের মুখ যে দিলীপ ঘোষ তা নিয়ে কোনও সংশয় কখনই ছিল না। তবে তাঁকে সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও কখনই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তুলে ধরেনি। বরং বিজেপির শীর্ষ নেতারা বারবার ভূমিপুত্রই মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে দাবি করেছেন। এ বছর বিধানসভা নির্বাচনে আবার দিলীপবাবু লড়ছেন না। ফলে দুয়ে দুয়ে চার করতে সময় লাগছে না রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশের। কেননা, সামনেই উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো জলজ্যান্ত উদাহরণ রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে বড় ঘটনা! মমতার গাড়ি ঘিরে উঠল ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান, কিন্তু এবার ঘটল ব্যতিক্রমী ঘটনা…
২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভের পর যোগী আদিত্যনাথকে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করেছিল বিজেপি। তিনি বিধানসভা নির্বাচনে না লড়লেও গোরক্ষপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। একই ভাবে, দিলীপবাবুও বর্তমানে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। তিনিও ভোটে লড়ছেন না। রাজ্যে ২ লোকসভা আসন থেকে ১৮-তে পৌঁছনোর অন্যতম কাণ্ডারীও তিনিই। ফলে রাজনৈতিক মহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কোথাও কি এর মাধ্যমে পরোক্ষে কোনও বার্তা দিতে চাইলেন দিলীপ?
আরও একটি বিষয় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপি অধিকাংশ সময়ই এমন মুখকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেয় যিনি বিধায়ক নন। উত্তর প্রদেশ ছাড়াও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা দেখা দিয়েছে। এ বার বাংলায় বিজেপি একই পদাঙ্ক অনুসরণ করে কিনা সেদিকে নজর রাজনৈতিক মহলের।
আরও পড়ুন: ‘ফোন ট্যাপিং গুরুতর অভিযোগ, কিন্তু নির্বাচনের মুখ ঘোরাতে চাই না’, নন্দীগ্রামে শাহর স্ট্র্যাটেজি