Government Hospital : ‘OPD-তে ১১টার আগে ডাক্তারদের দেখা যায় না’, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ‘দীর্ঘশ্বাস’ রোগীদের

Government Hospital : রোগীদের বক্তব্য, সকাল ৯টায় ডাক্তারদের আসার কথা থাকলেও ১১টার আগে প্রায় কেউই আসেন না। এটা দেখতেই তাঁরা অভ্যস্ত।

Government Hospital : 'OPD-তে ১১টার আগে ডাক্তারদের দেখা যায় না', দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে 'দীর্ঘশ্বাস' রোগীদের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 07, 2023 | 5:32 PM

কলকাতা : কখনও আশঙ্কাজনক রোগীকে ভর্তি নিতে অস্বীকারের অভিযোগ। কখনও রোগী রেফার নিয়ে টানাপোড়েন। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির (Government Hospital) বিরুদ্ধে বারবারই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ সামনে এসেছে। এবার টিভি-৯ বাংলার অন্তর্তদন্তে উঠে এল একেবারে গ্রাউন্ড জিরোর ছবি। হাসপাতালে (Hospital) রোগীরা হাপিত্যেশ করে বসে রয়েছেন ডাক্তারের অপেক্ষায়। কিন্তু, দেখা নেই ডাক্তারের। আচমকা বারুইপুর হাসপাতালে যেতেই দেখা গেল চাঞ্চল্যকর ছবি। বেরিয়ে পড়ল হাঁড়ির হাল। সম্প্রতি নবান্নের সভাগৃহে সরাকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের গরহাজিরা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের আচমকা হাসপাতাল পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর নির্দেশের পরেও নতুন বছরে সরকারি হাসপাতালের কী অবস্থা? তাঁর খোঁজ নিতে বারুইপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চলে যায় টিভি-৯ বাংলার ক্যামেরা। ঠিক মতো চিকিৎসা পরিষেবা কি মিলছে? কী বলছেন রোগীরা? 

এক রোগী বলেন, “হাড়ের ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম।  দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডাক্তারের দেখা পাই। দীর্ঘ লাইন শেষে ডাক্তার দেখাতে পেরেছি।” আর এক রোগী বলেন, “কালও আমি এসেছিলাম। তবে হাড়ের ডাক্তার আসেননি। আজকে আবার এসেছি। আমরা তো গরিব মানুষ। তাই শারীরিক সমস্যা হলে সরকারি হাসপাতালে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোনও উপায় নেই। কারণ প্রাইভেটে দেখানোর মতো আমাদের ক্ষমতা নেই।” 

এদিকে এই হাসপাতালেই বড়় বড় করে লেখা রয়েছে সকাল ৯টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত খোলা থাকবে বহির্বিভাগ। ১টা ৫৯ মিনিটে যিনি টিকিট কেটেছেন তাঁকে না দেখা পর্যন্ত ওপিডি ছেড়ে যাবেন না ডাক্তারবাবু। তাহলে শিশুরোগ বিভাগ, নাক-কান-গলা বিভাগ, মেডিসিন, জেনারেল ওপিডি সব জায়গায় কেন সময়ে দেখা মিলছে না ডাক্তারদের? উঠছে প্রশ্ন। এদিকে রোগীদের বক্তব্য, সকাল ৯টায় ডাক্তারদের আসার কথা থাকলেও ১১টার আগে প্রায় কেউই আসেন না। এটা দেখতেই তাঁরা অভ্যস্ত। 

এ প্রসঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে এক রোগী বলেন, “২টো পর্যন্ত টিকিট দেয়। তারপর আর টিকিট দেওয়া হয় না। লাইনে ভিড় বেশি দেখলেই আবার ডাক্তাররা রোগী দেখতে চান না। অনেক সময় লাইনে দাঁড়ানোর পর আমরা শুনতে পাই ডাক্তার নেই।” লাইনে দাঁড়িয়েই অপর এক রোগী বলেন, “ডাক্তার তো কখনও ১০টা, কখনও ১১টা বা তারও পরে আসে। কিছু বললেই বলে গেটের বাইরে চলে যাও।”

হাসপাতালের সুপার ধীরাজ রায় বলেন, “আউটডোরের টাইম সর্বদাই সকাল ৯টা। আউটডোরের ডাক্তারবাবুদের ৯টার মধ্যে বসে যাওয়ার কথা। যদি দেখা যায় যে কোনও ডাক্তার ৯টার মধ্যে আসছেন না। যদি লাগাতার ঘটে এ ঘটনা তাহলে সেটা সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পাশাপাশি ম্যানেজমেন্টেরও ব্যর্থতা। তবে আমার হাসপাতালের প্রতিটা ওপিডির ছবি এটা নয়।” ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই তোপ হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে তোপ দাগতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলনে, “পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। সিস্টেমকে কড়া থাকতে হবে। প্রশাসনকে কড়াভাবে সমস্ত অবস্থা হ্যান্ডেল করতে হবে। সে সব এখানে কিছুই নেই।” পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শান্তনু সেন বলেন, “আমাদের মেডিকেল পেশায় কিছু ব্যক্তি আছেন নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এ সব কাজ করেন। আবার খুব কতিপয় অংশ সরকারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কালিমালিপ্ত করার জন্য এসব কাজ করেন। নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে যান। তবে সরকার এ বিষয়ে নজরদারি চালাচ্ছে।”