Earthquake: ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল চারপাশ, সতর্কতার জন্য আপনি কী করবেন?

How To Stay Safe: ভূপদার্থবিদ অজয় পাল জানিয়েছেন, আগামী দিনে যে ভূমিকম্পগুলি হবে, সেগুলির কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ বা তার উপরে থাকবে। সেই কম্পনের তীব্রতা কখন, কোথায় অনুভূত হবে, তা অজানা।

Earthquake: ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল চারপাশ, সতর্কতার জন্য আপনি কী করবেন?
প্রতীকী চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 10, 2022 | 4:44 PM

মঙ্গলবার মধ্যরাতে তীব্র কম্পনে (Earthquake in Nepal) কেঁপে ওঠে নেপাল, দিল্ল-সহ উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি এলাকা। রিখটার স্কেলে (Richter scale ) কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৩। যার জেরে এখনও পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়। পরপর ভূমিকম্পে (Earthquake) কেঁপে উঠেছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং অরুণাচল প্রদেশও। বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ১০টা নাগাদ মৃদু কম্পনে কেঁপে উঠেছে অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম সিয়াংয় ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলি। হতাহতের খবর না থাকলেও পরপর মৃদু কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতেও। আতঙ্কিত দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বাসিন্দারা। ভূমিকম্প নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই সতর্কবার্তা দিল বিজ্ঞানীরা।

২০১৫ সালে নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের স্মৃতি উস্কে গত ২দিন ধরে যেভাবে ভারত ও নেপালের বেশ কিছু এলাকা কেঁপে উঠেছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, ভূমিকম্পের সংখ্যা এবং তার কম্পনের মাত্রা—বাড়বে দুই-ই। শুধু তা-ই নয়, হিমালয় এলাকায় বড়সড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনাও প্রবল বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। ভূপদার্থবিদ অজয় পাল জানিয়েছেন, আগামী দিনে যে ভূমিকম্পগুলি হবে, সেগুলির কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ বা তার উপরে থাকবে। সেই কম্পনের তীব্রতা কখন, কোথায় অনুভূত হবে, তা অজানা। ভূমিকম্প কখন, কোথায় হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা অসম্ভব। এক মিনিটের মধ্যে হতে পারে, আবার এক মাস পরেও হতে পারে। আবার ১০০ বছরের মধ্যেও জোরালো ভূমিকম্প হতে পারে। তা-ই যতটা সম্ভব ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিত। তীব্র কম্পনের ফলে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে নিজেদের কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন, তা জেনে রাখা উচিত।

প্রসঙ্গত, ভারত, নেপালের থেকেও অনেক বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা রয়েছে জাপানে। সেখানকার বাসিন্দারা নিজেদের সুরক্ষিত রাখার প্রশিক্ষণ নিয়ে রেখেছেন। ফলে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর মতে, যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গায় কম্পন অনুভূত হতে পারে। তা-ই ভারতের সব রাজ্যের বাসিন্দাদের আসন্ন বিপদ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার মূলমন্ত্রগুলি জেনে রাখা দরকার। ভূমিকম্পের সময় কীভাবে নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে রক্ষা করবেন, তার প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিত। কীভাবে নিজেকে বাঁচাবেন, জেনে নিন…

– ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে পায়ের মাটি নড়ে উঠে। তাই সেই ঝাঁকুনিতে কোনও মানুষেরই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়। তা-ই পড়ে যাওয়ার আগে হাত দিয়ে মাথা যতটা সম্ভব রক্ষা করুন এবং সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়ুন। মাথা নত করে, মাথায় হাত দিয়ে মাটির দিকে নিচু হয়ে বসে পড়া একপ্রকার কৌশল। তাতে হঠাৎ সামনের দিকে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।

– ধারে-কাছে টেবিল বা ডেস্ক থাকলে তার নীচে বসে পড়ুন। যদি বাড়িতে থাকেন, তাহলে টেবিল বা খাটের নীচে ঢুকে পড়া সবসময় নিরাপদ বলে মনে করা হয়। কাছাকাছি কোনও নিরাপদ আশ্রয়স্থল যদি না থাকে, তাহলে আপনার কোমর পর্যন্ত উচ্চতায় যে আসবাব রয়েছে, সেগুলির পাশে লুকিয়ে পড়ুন। তাতে তীব্র ঝাঁকুনিতেও ওইসব আসবাব আপনার উপর পড়ে যাবে না।

– তীব্র কাঁপুনি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনও কিছু ধরে রাখুন। বসে পড়ুন। পাশে যদি কেউ থাকে, তাহলে তার হাত ধরুন। কম্পন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যত্র যাবেন না।

ভূমিকম্পের সময় কী-কী মাথায় রাখবেন…

– কম্পনের মাত্রা মৃদু হলেও শান্ত থাকা বাঞ্ছনীয়। সেই সময় মোমবাতি, দেশলাই বা গ্যাস জ্বালানো থাকলে দ্রুত নিভিয়ে দিন।

কোনও বহুতলের ভিতরে থাকলে কী-কী করবেন, তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

– বহুতলের নিচে থাকলে ভূমিকম্পের সময় এলোমেলোভাবে বাইরে বা ঘরের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করবেন না। যেখানেই থাকুন না কেন, সেখানেই স্থিরভাবে কোনও কিছুকে আঁকড়ে ধরে থাকুন অথবা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ুন। তাতে আহত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

– কম্পনের তীব্রতা জোরালো হলে কাচের জানলা, টেবিল বা সিলিং ফ্যান বা ল্যাম্পের নিচ থেকে সরে যান। এছাড়া বইয়ের তাক, বড় আসবাবপত্রের কাছ থেকে দূরে সরে যান। যে কোনও সময় সেসব হুড়মুড়িয়ে ঘাড়ের উপর পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

– কম্পন অনুভূত হলেই দৌড়ে গিয়ে রান্নাঘরের গ্যাস প্রথমে নিভিয়ে দিন। তাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম হয়।

– দরজার কাছাকাছি দাঁড়াবেন না।

কম্পনের সময় যদি চলন্ত গাড়ির মধ্যে থাকেন, তাহলে কী-কী মাথায় রাখবেন?

-গাড়ি চালাবার সময় কম্পন অনুভূত হলে বিদ্যুতের খঁটি, ওভারহেড থেকে দূরে থাকুন।

– তীব্র কম্পনের সময় গাড়ির ভিতরেই থাকুন। রাস্তার পাশে পার্কিং করে কম্পন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

– জরুরি তথ্য জানার জন্য রেডিয়ো চালু রাখুন।

– অনেক সময় গাড়ির উপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে যায়। এমন ঘটনা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় প্রায়শই ঘটে। এমনটা হলে আতঙ্কিত হবে না। প্রশিক্ষিত কেউ এসে তারটি না সরিয়ে দেওয়া পর্যন্ত গাড়ির ভিতরেই থাকুন।