Face-Lift: ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে ‘মুখবদল’, কী এমন আছে ফেস লিফট সার্জারিতে
Face-Lift Surgery: প্লাস্টিক সার্জারি হয়ে যাওয়ার পরও নিয়মিত ভাবে Follow-Up এর প্রয়োজন আছে। যেমনটা হয়ে থাকে অন্যান্য সার্জারির ক্ষেত্রে
বয়স বাড়লেও সকলেই চান সেই বয়সকে ষোলোর ঘরেই আটকে রাখতে। দেহের বয়স বাড়লেও তার ছাপ যাতে শরীরে না পড়ে, তার জন্য বিশেষত চেষ্টায় কোনও রকম খামতি রাখতে চান না মেয়েরা। বরং যত দিন গড়ায়, ততই আকর্ষণ বাড়ে ড্রেসিং টেবিলে থরে-থরে সাজিয়ে রাখা প্রসাধনী সামগ্রীর দিকে। ত্বকের পরতে যতই ক্রিম, লোশন ঘষা হোক না কেন, সব সময় যে মনমতো ফল ফাওয়া যাবে না, একথা অনেকেই মানতে চান না। ‘ত্বকে বলিরেখা এসেছে’, ‘চামড়া গুটিয়ে যাচ্ছে’ এই নিয়ে অনেকেই হীনমন্যতায় ভোগেন। ভাবেন তাঁর সব আকর্ষণ বুঝি হারিয়ে গেল। লন্ডনের বাসিন্দা ৫২ বছরের নার্স ক্রিস্টিন। ক্রিস্টিনের মনে হচ্ছিল, রোজ কাজ আর সংসারের জাঁতাকলে পড়ে তার স্বাভাবিক জৌলুস হারিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে মনে হচ্ছিল তলানিতে ঠেকেছে আত্মবিশ্বাস। ক্রিস্টিনের ২৫তম বিবাহবার্ষিকী তখন ছিল সামনেই। আর তখন তিনি ঠিক করেন মুখের সেই আগের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে ফেস লিফট সার্জারি করাবেন।
নিউ ইয়র্ক থেকে টেক্সাসে বাড়ি ফিরছিলেন ৬৩ বছরের হিল্ডা ব্যাক। ফেরার পথে তাঁর মনে হচ্ছিল নিজেকে নিয়ে তিনি যেন খুব একটা বেশি খুশি নন। তাঁর চোখ, নাক, ঠোট… কোনওটাই যেন ঠিক মনে ধরছে না তাঁর। নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, জীবনে প্রতিপত্তির অভাব নেই। তিনটে বাড়ি, অভিজাত গাড়ি রোলস রয়েস গ্যারেজে থাকার পরও তিনি ডিপ্রেশনে ভুগছেন। কোনও কিছুতেই যেন মনে শান্তি পাচ্ছিলেন না তিনি। সেখান থেকেই ফেস লিফ্ট করানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ডিপ্রেশন কাটাতে তিনি ভারতীয় মুদ্রায় খরচ করেছেন ১ কোটি ৭৯,৫১, ১৭৮ টাকা। শুধুমাত্র হিল্ডা নয়, এই তালিকায় এরকম আরও অনেক মানুষ রয়েছে। আমেরিকার প্লাস্টিক সার্জনরা যেমন জানাচ্ছেন, এমন প্রচুর মানুষ আসেন তাঁদের কাছে, যাদের হাতে অর্থের কোনও অভাব নেই। কোটি-কোটি টাকা তাঁরা খরচা করছেন এই খাতে। ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন এমন বহু মানুষ।
ক্যালিফোর্নিয়ার আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ফেসিয়াল প্লাস্টিক অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারির কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল কেন এই ফেস লিফট সার্জারির খরচা এত বেশি? এর নেপথ্যে রয়েছেন মানুষই। ২২ থেকে ৬৩… সকলেই চাইছেন এই ফেস লিফট সার্জারি করাতে। আর সার্জারির খরচা বাড়ানোর জন্য তাঁরাই দায়ী। কোটি-কোটি টাকা খরচা করতে তাঁদের বিশেষ কোনও মাথাব্যথা নেই। তবে প্লাস্টিক সার্জারি হয়ে যাওয়ার পরও নিয়মিত ভাবে Follow-Up এর প্রয়োজন আছে। যেমনটা হয়ে থাকে অন্যান্য সার্জারির ক্ষেত্রে।
ফেস লিফট সার্জারি কী?
নিজের চেহারা, মুখ একটানা অপরিবর্তিত অবস্থায় দেখতে-দেখতে অথবা মুখে বয়সের ছাপ দেখে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। আবার কিছু মানুষ আছেন যাঁরা নিজের শরীর, ত্বক, নাকের গড়ন, ঠোঁট নিয়ে অনেক বেশি অবসেসড। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁরাই এই অস্ত্রোপচারের সাহায্য নেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে বয়স্ক মানুষদের মধ্যে এই সার্জারির চাহিদা তুলনায় অনেকটাই বেশি। ফেস লিফট পদ্ধতিতে সার্জারির ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগে। মুখ, ঘাড় বরাবর প্রথমে কিছু ডিজাইন তৈরি করা হয়। এবার সেইমতো সার্জারি চলে।
ফেস লিফট সার্জারির সুবিধে:
এমন অনেকেই আছেন যাঁদের হঠাৎ করে ওজন কমে গেলে মুখের পেশি-চামড়া ঝুলে যায়। মুখের পেশি আর চামড়া টানটান হয় এই সার্জারির সাহায্যে। ফলে মুখে রক্ত চলাচলও ঠিক থাকে। এই পুরো সার্জারি শেষ করতে ৪ সপ্তাহ সময় লাগে। কিছু ক্ষেত্রে তার বেশিও লাগতে পারে।
কতটা ব্যয়সাপেক্ষ এই সার্জারি?
নিউ ইয়র্কের প্ল্যাস্টিক সার্জন ডাঃ লারা দেবগন, যাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের ফলোয়ার সংখ্যা ৬,৯০,০০০, তিনি একটি ফেস লিফটের জন্য চার্জ করেন ২০০,০০০ ইউএস ডলার।
নিউ ইয়র্কের প্ল্যাস্টিক সার্জন ডাঃ স্টিভেন লেভাইন ৫০,০০০ থেকে ১১০,০০০ ইউএস ডলার চার্জ করেন ফেস, ব্রো আর নেক-লিফটের জন্য।
বেভারলি হিলস-এর প্ল্যাস্টিক সার্জন ডাঃ চিয়া চি কাও-এর ‘আফটারকেয়ার সেন্টার’-এ পাঁচ দিন, পাঁচ রাত থাকার জন্য ৪৮ বছর বয়সী লিলি বেল খরচ করেছিলেন ২১২,০০০ ইউএস ডলার।