Lionel Messi: সাড়ে লাখি দাম, মেসিকে থোব পরিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাতার
FIFA WC 2022 Final Messi: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পোশাকেও এসেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। সিল্কের সঙ্গে খুব সূক্ষ্ণ ধাতু সোনা বা রুপো মিশিয়ে এই থোব বানানো হয়
বিশ্বকাপের মঞ্চে রূপকথা বুনেছেন লিওলেন মেসি। জেতার পর ড্রেসিং রুমে মেসির উল্লাসের ভিডিয়ো ইতিমধ্যে ভাইরাল। সুন্দর সেই আবেগঘন মুহূর্তে মেসি জড়িয়ে ধরেছেন তাঁর মাকে। ফাইনালে লুসেইল স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে উপস্থিত ছিলেন মেসির স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জো, সন্তান থিয়াগো ও মাতেও এবং তাঁর মা সেলিয়া মারিয়া কুকিতিনি। বিশ্বকাপ জয়ের পর মাঠে নেমে আসেন তাঁরা। ট্রফি নেওয়ার সময় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি আর্জেন্টিনার তারকার কাঁধে বিশট পরিয়ে দেন। তবে কালো রঙয়ের এই বিশট মেসিকে কেন পরানো হল, এই নিয়ে একটা অসন্তোষ সে দিন তৈরি হয়েছিল মেসিভক্তদের মনে। তাঁদের দাবি ছিল, এতে ঢাকা পড়েছে মেসির নীল-সাদা জার্সি। কেন এমন বিশট সে দিন পরানো হল মেসিকে?
আরবের প্রাচীন পোশাক হল এই বিশট। এই পোষাকের উৎপত্তি খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে। আরব বেদুইনরা এবং সেখানকার মেষপালকরা এই পোশাক পরতেন (গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি-র পরিচিত পোশাক) Robe। যেহেতু বেদুইনরা নানা সময় নানা জায়গায় ভ্রমণ করতেন, তীব্র গরম, বালির ঝড় সব কিছুর থেকে তাঁদের এই আচ্ছাদনই সুরক্ষিত রাখত। ফার্সি থেকে এই শব্দটির উৎপত্তি। আরবিতে একে ‘আবা’-ও বলা হয়। স্থানীয় ভাষায় তা ‘থোব’ নামে পরিচিত। থোব হল আরবের জাতীয় পোশাক। উটের চুল দিয়ে তৈরি হয় বিশেষ এই থোব।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পোশাকেও এসেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। সিল্কের সঙ্গে খুব সূক্ষ্ণ ধাতু সোনা বা রুপো মিশিয়ে এই থোব বানানো হয়। আর বিশেষ এই ফ্র্যাব্রিকটি বানানো হয়েছিল মরুভূমির কথা ভেবেই। অর্থাৎ গরমে তা ঠাণ্ডার অনুভূতি দেবে, আর ঠাণ্ডায় গরমের। কালো, বাদামি এবং ধূসর, এই তিন রঙয়েই বানানো হয় বিশট। এই পোশাকে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়াও তুলনায় সহজ হয়।
ষষ্ঠ শতাব্দীতে নবী মহম্মদের সময়কাল পর্যন্ত এই বিশটের প্রচুর ব্যবহার ছিল। পারস্য এবং আরব সাম্রাজ্য বিজয়ের পর সেনানায়কদের এই বিশট পরিয়ে বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়েছিল। এই বিশট বা থোব যত বেশি স্বচ্ছ হয়, ততই তার দাম বেশি। আরবে রাজনীতিবিদদের সম্মান স্মারক হিসেবে সোনার কাজ-করা বিশট পরিয়ে দেওয়া হত। এই থোব বা বিশটের অনেক রকম রয়েছে। এর দাম নির্ভর করে কতটা বেশি স্তর থাকবে এই পোশাকে, তার উপর। বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে কাতার ৩২ রকমের থোব বানিয়েছিল। অংশগ্রহণকারী সব দেশের জন্যই ছিল আলাদা-আলাদা থোব। কাতারের সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে এবং সম্মান স্মারক হিসেবেই মেসিকে পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই বিশেষ উত্তরীয় থোব বা বিশট। কাতার এবং তার আর্থ-সামাজিক ইতিহাস, বর্তমান তুলে ধরার জন্য বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারকে পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ওই বিশট, যা নিয়ে এখনও চলছে চর্চা।
মেসিকে কী পরানো হয়েছিল বিশ্বকাপ ফাইনালের দিন?
আরব দেশে ওই কালো পোশাকের নাম বিশট, যা মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা। বিশটকে কাতারে থোব নামেও ডাকা হয়। আরবিতে বলা হয় ‘আবা’।
কী ভাবে উৎপত্তি এই বিশটের?
আরব এবং তার বালিয়াড়ির জন্য ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা সব সময় তীব্র। যে কারণে বেদুইনরা সে সময় থেকেই মাথা ও শরীর ঢাকা পোশাক পরতে শুরু করেন। এরই নাম বিশট বা থোব।
আধুনিক বিশট কী রকম?
সময়ের সঙ্গে তাল রেখে বিশট বদলেছে আদ্যোপান্ত। ফ্যাশনের কথা মাথায় রেখে থোবে ব্যবহার হয় সোনা-রুপোর সূক্ষ্ম তার। মূলত সাদা রংয়ের হয়। তবে কালো রংয়ের থোব অভিজাতরাই বেশি পরেন।
মেসিকে কেন পরানো হয়েছিল থোব?
বিশিষ্ট নাগরিক, বিদেশি অতিথিকে এই থোব পরিয়েই সম্মান জানানোর রেওয়াজ রয়েছে কাতারে। সেই প্রথা মেনে, সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে মেসিকে পরানো হয়েছিল কালো বিশট বা থোব।