Holi Special Sweets: শুধুমাত্র দোলের ক’দিন বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে পাওয়া যায় এই বিশেষ মিষ্টি
Holi Special Sweets: চেনা শহর কল্লোলিনী কলকাতার অচেনা এই মিষ্টি দেখতে হুবহু আলুর চপের মতো। ভাজা হয় খাঁটি গব্য ঘিয়ে।
দোল রঙের উৎসব, মিষ্টিরও। মঠ, বাতাসা, লাড্ডু, সন্দেশ, নাড়ু, খাজা, গজা, জিলিপি, পায়েস, পেঁড়া, ছানা, দই, ঠাণ্ডাইয়ে মাখামাখি হয়ে বসন্ত যখন জাগ্রত হয় প্রতিবার, তখন ভিড় জমে বৌবাজারের এই ছোট্ট দু’টি দোকানে। ‘শ্রীহরি’ আর ‘রাধারানী সুইটস’। যেন রাধামাধব আর বৃন্দাবন বিলাসিনী রাইয়ের যুগলবন্দি। দোল থেকে পঞ্চম দোল—প্রতিবছর মানুষের ঢল নামে দোকান দু’টোয়। হোলির সময়ে এক বিশেষ মিষ্টি পাওয়া যায় এখানে। শতবর্ষ পার হয়ে গিয়েছে, তবুও একই রকম জনপ্রিয়তা এই দোকানের এই বিশেষ মিষ্টির। নাম ‘ঘি পোয়া’। প্রতি পিসের দাম মাত্র ৬টাকা। চেনা শহরের অচেনা এই মিষ্টির খোঁজ দিচ্ছে TV9 বাংলা। চেনা শহর কল্লোলিনী কলকাতার অচেনা এই মিষ্টি দেখতে হুবহু আলুর চপের মতো। ভাজা হয় খাঁটি গব্য ঘিয়ে।
বৌবাজার, নতুনবাজার, বেহালা আর উত্তর কলকাতার তামাম বনেদি বাড়িতে এই মিষ্টি ছাড়া দোল অচল। কলকাতার বনেদি বাড়িগুলিতে দোল গোবিন্দের আরাধনায় ভোগ নিবেদন হয় ঘি পোয়া দিয়ে। দোল থেকে পঞ্চম দোল ঘি পোয়া ছাড়া প্রসাদ নাকি মুখে রোচে না বনেদি বাড়ির ননীচোরার। তাই সারা শহরে উত্তর থেকে দক্ষিণ যত প্রাচীন বাঙালি বাড়ি আছে, তাঁদের কাছে দোলের এক ঐতিহ্যের সমার্থক হয়ে উঠেছে এই ঘি পোয়া। রজত পাইন বৌবাজারে থাকেন। তিনিই বলছিলেন ঘি পোয়ার এই ট্রাডিশানাল ক্রেজের কথা। দেবমাল্য শীল প্রতিবছর এই মিষ্টির টানে ফিরে-ফিরে আসেন এই দোকানে। দোলের চাঁচড়ের পুজোয় সঞ্জীবকুমার মল্লিকের বাড়িতে পুজো হয়। তার জন্য দু’দিন আগেই তিনি এসে বায়না করে গিয়েছেন ১৫০ পিস ঘি পোয়া, জানালেন শ্রীহরি সুইটসের মালিক কৃষ্ণ গুপ্তা। দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি অনবরত গাওয়া ঘিয়ে ভেজে চলেছেন এই ঘি পোয়া। হালুইকরদেরও ফুরসত নেই। জানালেন তিন প্রজন্ম ধরে চলে-আসা এই ঘি পোয়ার রেসিপি। চালের গুঁড়ো, সুজি, গুড় আর ঘি দিয়ে মেখে মণ্ড তৈরি করা হয়। তারপর হাতের তালুর চাপে চ্যাপ্টা করে গরম ঘিয়ে ভাজা হয় সেই মণ্ডের পোয়া।
কলকাতার বাঙালি বনেদি বাড়িতে দোলে গোপাল সেবায় মাস্ট এই মিষ্টি। আর লাগে মালপোয়া। শ্রীহরি সুইটসের পাশের দোকান রাধারানী সুইটসের নরেশ গুপ্তা বলছিলেন ঘি পোয়ার যোগ নাকি ওড়িশায়। শ্রীক্ষেত্র জগন্নাথধামে ছাপান্ন ভোগের এক ভোগ এই ঘি পোয়া। জগন্নাথের উৎকল থেকে এই খাদ্য সংস্কৃতির আগমন এই বাংলায়। তা-ও শতাব্দীকাল আগে।
পূর্ণিমায় দোল গোবিন্দর ভোগের জন্যই এই মিষ্টির চাহিদা এখন তুঙ্গে। আপনিও যদি চান, চেখে দেখতে চলে আসুন বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রীটের বৌবাজার মার্কেটের সামনের এই দোকান দু’টোয়। গরমাগরম ঘি পোয়া প্রতি পিস মাত্র ৬ টাকা। মুখে দিয়েই বৃন্দাবনের বিলাস। তবে সাবধান, এটা খাবার পর ঠাণ্ডা পানীয় খাবেন না। গরম চা কফি চলতে পারে। খাঁটি ঘিয়ে তৈরি তো, তাই ঠাণ্ডা খেলে বিপত্তি ঘটতেই পারে!
আরও পড়ুন- Organic Gulal: বিরহড়দের বিট-নিম-পলাশের আবির তৈরি হতেই শেষ! আবার শুরু প্রস্তুতি