Rooh Afza Banned: রুহ আফজাকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ! আমাজনকে একহাতে নিল আদালত

Rooh Afza Banned in India: রুহ আফজার অর্থ হল আত্মার শান্তি! ১১৫ বছরের পুরনো এই পানীয় সাক্ষী থেকেছে দেশভাগ এবং ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে একাধিক যুদ্ধের। বর্তমানে হঠাৎ করেই এই পানীয়কে ঘিরে লড়াই জমেছে জোরদার।

Rooh Afza Banned: রুহ আফজাকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ! আমাজনকে একহাতে নিল আদালত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 15, 2022 | 10:27 PM

দিল্লি উচ্চ আদালতের তরফে একটি যুগান্তকারী রায় দেওয়া হয়েছে ভারতে আমাজনের পরিচালকদের জন্য। রায়ে ভারতের গ্রাহকদের জন্য নির্দিষঅট পণ্যের সারিতে পাকিস্তানে প্রস্তুত রুহ আফজা সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। কারণ সম্প্রতি দেশীয় রুহ আফজা প্রস্তুতকারক সংস্থা একটি মামলা করে জানিয়েছে পাকিস্তানে তৈরি পানীয় ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে ভারতীয়দের বিক্রি করা হচ্ছে। রুহ আফজা পানীয়টি ১৯০৭ সালে সর্বপ্রথম তৈরি করেন হাকিম হাফিজ আবদুল মজিদ নামে একজন ব্যক্তি। পুরনো দিল্লীতে তিনি এই পানীয় বিক্রি করতেন। দেশভাগের পর, মজিদ সাহেবের ছোট ছেলে, হাকিম মহম্মদ সৈয়দ পাকিস্তানে চলে যান ও সেখানে ‘হামদর্দ’ খোলেন। অন্যদিকে মজিদ সাহেবের বড় ছেলে আবদুল হামিদ ভারতেই থেকে যান ও একই ব্রান্ডনেম-এ পণ্য প্রস্তুত করতে শুরু করেন।

মামলা

ভারতে স্থিত হামদর্দ ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন আদালতের কাছে একটি আবেদন করে জানান, রুহ আফজা নামে পানীয় আমাজনে বিক্রি হচ্ছে যা ভারতে হামদর্দ ল্যাবরেটরিতে তৈরি নয়। বরং এই পানীয় তৈরি হয় পাকিস্তানে ও সংস্থাটি ভারতের হামদর্দ-এর নেমসেক বা সমনাম। সমস্যা হল পাকিস্তানের রুহ আফজার বোতলে এই ব্যাপারে পূর্ণ তথ্য দেওয়া নেই।

মামলায়, হামদর্দ ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন এবং হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ ইন্ডিয়া বেশ কিছু প্রমাণ দাখিল করে জানান একমাত্র তারাই হামদর্দ ও রুহ আফজার প্রতীকের প্রকৃত স্বত্বাধিকারী। একই সঙ্গে তাঁরা জানান, গত বছর তারা খেয়াল করেছেন বহু সংস্থা আমাজনে রুহ আফজা পণ্যটি বিক্রি করছে।

হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ ইন্ডিয়া আইনি নোটিশ পাঠানোর পরে সংস্থাগুলি তাদের পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দেয়। ফাউন্ডেশনের পক্ষে জানানো হয়েছে, এই রকমই একটি সংস্থা পাকিস্তানে রয়েছে যারা হামদর্দ ল্যাবরেটরির নামে (ডব্লুএকিউএফ) ব্যবসা চালাচ্ছে। ওই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা হাকিম মহম্মদ সৈয়দ।

রায়

বিচারক প্রতিভা এম সিং তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, রুহ আফজা এমন একটি পণ্য যা ভারতের নাগরিক গত ১০০ বছর ধরে সেবন করে আসছেন। বর্তমানে খাদ্য সুরক্ষা আইন এবং গুণমান সংক্রান্ত নিয়মও এই খাদ্য পণ্যের উপর লাগু হয়। অথচ বিদেশের একটি পানীয় এদেশে আমাজনের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে এবং পণ্যের মোড়কে ওই পণ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্যও দেওয়া নেই। আবেদনকারীর দাবি অনুসারে ওয়েবসাইটে মেলা ওই অন্য রুহ আফজা তাদের সংস্থার তৈরির পণ্য নয়। আমাজনের তালিকা থেকে ওই পণ্যগুলির নাম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে ফেলতে হবে।

আদালত এও জানিয়েছে, ক্রেতারা হামদর্দ ল্যাবরেটরির (ডব্লুএকিউএফ) তৈরি পণ্য দেখে বিভ্রান্ত হবেন। এছাড়া এও বলা হয়েছে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে মাধ্যম হিসেবে আমাজন কাজ করে। তাই পণ্যের তালিকায় বিক্রেতার নাম ও যোগাযোগের নম্বর দেওয়া বাঞ্ছনীয়। আমাজনকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি হলফনামা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রুহ আফজা একটি মিষ্টি স্বাদের ঘন লাল বর্ণের ঘন সিরাপজাতীয় পানীয়। ফল, গোলাপ এবং কিছু ভেষজ দিয়ে সিরাপ তৈরি হয়। রুহ আফজার ঠান্ডা অনুভব প্রদানের ক্ষমতা রয়েছে বলে দাবি করা হয়। দুধ, লস্যি, ফিরনি, ফালুদার সঙ্গে মিশিয়ে পান করা যায় রুহ আফজা।

দেশভাগের পর, ভারত ও পাকিস্তান উভয় জায়গাতেই রুহ আফজা তৈরি শুরু হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে তৃতীয় একটি ইউনিটও চালু হয় বাংলাদেশে। একই পরিবারের নানা সদস্য দ্বারা ব্যবসাগুলি চালু আছে। জানা গিয়েছে রুহ আফজা নামের পণ্য বিক্রি করে হামদর্দ ইন্ডিয়া প্রতিবছর ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা করে।