শীতে চুলের যত্ন নেবেন কীভাবে?
চুল ভীষণ রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে গেলে ডগা ফাটতে শুরু করে। ডগা ফেটে গেলে চুল আর বেশি বাড়ে না। তাই যদি দেখেন, চুলের ডগা ফাটছে তাহলে চুলের ডগা যতটা ফেটেছে, ততটা কেটে ফেলবেন।
TV9 বাংলা ডিজিটাল: শীত অনেকের প্রিয়। কিন্তু এই শীত আবার চুল (Hair) ও ত্বকের জন্য খুব একটা সুখকর নয়। বিশেষ করে চুলের জন্য। শীত আসতে না-আসতেই চুলের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। যেমন চুল রুক্ষ হতে শুরু করে, খুসকি বেড়ে যায়, চুলের ডগা ফেটে যায়। তবে বাড়িতেই কিছু নিয়ম মানলে আপনি শীতকালেও আপনার চুলকে করে তুলতে পারেন ঝলমলে, সিল্কি (Hair Care)।
তেল: শীতে চুলের মোক্ষম ওষুধ হল তেল। তবে তেল কখন, কীভাবে ব্য়বহার করতে হয়, সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন শীতকালে চুলে তেল দিয়ে বাইরে না যাওয়াই ভাল। এতে বাইরের ধুলো আরও বেশি করে মাথায় বসে যায়, যার ফলে খুসকি বাড়ে। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন বাড়িতে থাকাকালীন চুলে তেল দিতে। সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায় রাতে ঘুমনোর আগে তেল উষ্ণ গরম করে মাথায় ভাল করে ম্যাসাজ করে পরের দিন সকালে শ্যাম্পু করে নিলে। শীতকালে চেষ্টা করবেন সপ্তাহে অন্তত তিনবার তেল দেওয়ার, তাহলে চুলের রুক্ষভাব অনেকটাই কাটবে।
শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার: যাঁদের চুল ড্রাই, তাঁদের চুল শীতকালে আরও বেশী রুক্ষ হয়ে যায়। তাই তেলের পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার (Shampoo And Conditioner)। বেছে নিতে হবে এমন শ্যাম্পু যাতে ক্ষার কম থাকে এবং চুলে পুষ্টি বেশি যায়। শ্যাম্পুর পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। কন্ডিশনার চুলের রুক্ষভাব অনেকটাই কমিয়ে দেয়, যার ফলে চুল হয়ে ওঠে সফট ও সিল্কি। তবে যাঁদের খুসকি রয়েছে, তাঁরা সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন অ্য়ান্টি-ড্যানড্রফ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
লেবু: শীতকালে অন্যতম বড় সমস্যা হল খুসকি। যাঁদের খুসকির সমস্যা নেই, তাঁদেরও শীতকালে খুসকি হয়। খুসকি কমাতে বাড়িতে থাকা পাতিলেবু আপনাকে অনেকটাই সাহায্য করবে। তেলের মধ্যে লেবুর রস মিশিয়ে তিরিশ মিনিট মত রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। তবে লেবুতে যাদের সমস্যা আছে, তাঁরা টক দই বা পিঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন।
খাদ্য: শুধুমাত্র বাইরে থেকে যত্ন নিলেই হবে না, শরীরের ভিতরকেও রাখতে হবে যত্নে। তার জন্য প্রয়োজন সুখাদ্যের। শীতে প্রচুর রকমের সবজি পাওয়া যায়, চেষ্টা করবেন সব রকমের সবজি খেতে। তাছাড়াও চুলের জন্য আমন্ড খুব ভাল কাজ করে। সকালে খালি পেটে আমন্ড খাওয়া চুল এবং ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
জল: শীতকালে জল কম খাওয়া হয়, যার ফলে চুল ও ত্বক আরও বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। তাই খেয়াল রাখতে হবে সারাদিনে জল খাওয়ার পরিমাণ যেন না কমে। প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে তিন থেকে চার লিটার জল খাওয়া প্রয়োজন।
কম হিট: নানারকম হেয়ার স্টাইলের জন্য অনেকেই ড্রায়ার এবং স্ট্রেইটনার ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু ড্রায়ার ও স্ট্রেইটনারের হিট চুলের অনেকটা ক্ষতি করে, বিশেষ করে শীতকালে। কারণ শীতকালে চুল রুক্ষ হয়ে যায়, তার মধ্যে হিট দিলে চুলের আরও ক্ষতি হয়। তবে আপনি যদি ড্রায়ার বা স্ট্রেইটনার ব্যবহার করে স্টাইল (Hair Styles) করতেই চান, তাহলে হিট প্রোটেক্টর ব্যবহার করবেন। চুল স্টাইলিং-এর আগে হিট প্রটেক্টর পুরো চুলে লাগিয়ে তারপর ড্রায়ার, স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে কম ক্ষতি হয়।
চুল কাটা: চুল ভীষণ রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে গেলে ডগা ফাটতে শুরু করে। ডগা ফেটে গেলে চুল আর বেশি বাড়ে না। তাই যদি দেখেন, চুলের ডগা ফাটছে তাহলে চুলের ডগা যতটা ফেটেছে, ততটা কেটে ফেলবেন। চেষ্টা করবেন তিন থেকে চার মাস অন্তর চুলের ডগা ছেঁটে ফেলার (Hair Cutting)। এতে চুল ভালও থাকে এবং বাড়েও তাড়াতাড়ি।