Coastal Trek: পাহাড় ভাঙা এখন অতীত, বাঙালির নতুন ট্রেকিং রুট এখন পায়ে হেঁটে দিঘা টু চাঁদিপুর

Digha to Chandipur: অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় মানুষ আজ কোথায় পৌঁছে গিয়েছে! পাহাড় ভাঙার কষ্ট সফল না-ই বা হোক, 'নোনবালি তীর ধরে, বহুদূর বহুদূর হেঁটে' আসার স্বপ্নপূরণ হবেই।

Coastal Trek: পাহাড় ভাঙা এখন অতীত, বাঙালির নতুন ট্রেকিং রুট এখন পায়ে হেঁটে দিঘা টু চাঁদিপুর
যাবেন নাকি এই রুটে ট্রেক করতে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 09, 2022 | 9:06 PM

সেই দিন এখন গেছে যখন বাঙালি ‘দী-পু-দা’ ছাড়া কিছু ভাবতো না। তবে এখনও দু’ দিনের ছুটিতে সমুদ্রের তীরে চলে যান অনেকেই। বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি থাকার এটাই তো সুবিধা। তবে সমুদ্রে ছুটি কাটানোর অর্থ আর দিঘা (Digha) বা পুরীতে সীমাবদ্ধ নেই। বেশ কয়েকবছর হয়ে গিয়েছে, বাঙালির শর্ট ট্যুরে যোগ হয়েছে মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর, চাঁদিপুর বা কোণার্কের মতো জায়গাগুলি। এখন আর ওল্ড দিঘার পাড়ে বসে মাছ ভাজা খাওয়ার স্বপ্ন খুব কম মানুষই দেখেন। কিন্তু পায়ে পায়ে পথ চলা তো আর শেষ হয় না। সমুদ্রে পার ধরে বহু দূর হেঁটে যাওয়ার স্বপ্ন এখনও অনেকেই বোনেন।

এই পথ চলার মাঝে উৎরাই চড়াই নেই। পিচ রাস্তাও নেই। নেই পাহাড়ের মতো ঘন সবুজ অরণ্য কিংবা দূরের তুষারাবৃত পাহাড়ের চূড়া। তবু রয়েছে পথ চলা। রয়েছে নীল দিগন্ত। অফুরন্ত জলরাশি। এর মাঝে ঢেউ এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে পা। ভেজা পায়ে জড়িয়ে যাচ্ছে চোরা বালি। এই নতুন সংযোজনের নাম কোস্টাল ট্রেক।

অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় মানুষ আজ কোথায় পৌঁছে গিয়েছে! পাহাড় ভাঙার কষ্ট সফল না-ই বা হোক, ‘নোনবালি তীর ধরে, বহুদূর বহুদূর হেঁটে’ আসার স্বপ্নপূরণ হবেই। আজকাল তো গুগল ম্যাপ হাতের মুঠোয়। সুতরাং সমুদ্রের ঢেউয়ে রাস্তা ভুল করার কোনও সুযোগ নেই।

ছোটবেলায় প্রথমবার যখন দিঘা গিয়েছিলাম, শুনেছিলাম এর পাড় ধরে হাঁটলে পুরী পৌঁছে যাওয়া যায়। কিন্তু যাওয়া হয়নি। তবে এখন প্রায়ই শোনা যায় দিঘা থেকে অনেকেই হাঁটা লাগিয়েছেন অন্য কোনও সমুদ্রতটের দিকে। ভারতবর্ষের বেশ কয়েকটি সমুদ্র-সৈকত রয়েছে যেখানে এই কোস্টাল ট্রেকিং করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম ট্রেকিং রুটটি রয়েছে আমাদের পশ্চিমবঙ্গেই। দিঘা থেকে চাঁদিপুর।

পিঠে ব্যাগ। মাথায় টুপি। আর তাতেই সমুদ্রের পাড় ধরে হেঁটে চলে যাওয়া যায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কিন্তু দিঘা থেকে চাঁদিপুর যাওয়ার অর্থ হল এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পাড়ি দেওয়া। এই কারণেই ভারতের অন্যান্য কোস্টাল ট্রেকিংগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। একটা কোস্টাল ট্রেক নিউ দিঘা থেকে শুরু হয়ে শেষ হচ্ছে প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশার চাঁদিপুরে। মানুষের ভ্রমণের নেশা কত রকমেরই না হয়!

নিউ দিঘা থেকে চাঁদিপুর, এই কোস্টাল ট্রেকটি সম্পন্ন করতে সময় লাগে মোট পাঁচ দিন। কী ভাবছেন? এক রাত্রি ট্রেন জার্নি করলেই যেখানে পৌঁছে যাওয়া যায়, সেখানে পাঁচ দিন ধরে পায়ে হাঁটা! এখানেই তো কোস্টাল ট্রেকিংয়ের মজা। কোথাও ঝাউ বন আবার কোথাও শুধু খোলা প্রান্তর। শুধু সঙ্গ ছাড়বে না নীল দিগন্ত, জলরাশি আর সাদা বালিয়াড়ি। এই বালিতেই রাত কাটাতে হবে চার দিন। তাই যত তাড়াতাড়ি বন্ধুত্ব করে নেবেন, উপকার মিলবে।

বছরের যে কোনও সময় সমুদ্র সৈকতে ছুটি কাটাতে যাওয়ার অর্থ এই নয় যে আপনি যখন ইচ্ছা কোস্টাল ট্রেক করতে পারবেন। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা থাকে। তাই হাওয়া অফিসের থেকে একটু খবর নিয়ে রওনা দেবেন। তাছাড়া মাথার ওপর কড়া রোদ্দুর নিয়ে হাঁটা সম্ভব নয়। আর রাতে সমুদ্রের কাছাকাছি থাকাটা একটু বেশি দুঃসাহসিকতার পরিচয় হয়ে যাবে। তাই সবচেয়ে ভাল হয় যদি অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যে এই কোস্টাল ট্রেক করেন। এতে শারীরিক কষ্টও কম হবে আর আপনি উপভোগ করতে পারবেন সমুদ্রের পাড়ে ট্রেকিং।