হাতের নাগালেই রয়েছে জঙ্গল সফরের সুযোগ! কলকাতার অদূরেই মিলবে শান্তির ঠিকানা

জঙ্গল সফর বলতেই লাটাগুড়ি কিংবা রাজ্যের বাইরে যেতে হবে। না একেবারেই নয়, এমনটাই মনে হয়।। কলকাতার অদূরেই রয়েছে ঘন জঙ্গল ও মেঠো পথের অলিগলি।

হাতের নাগালেই রয়েছে জঙ্গল সফরের সুযোগ! কলকাতার অদূরেই মিলবে শান্তির ঠিকানা
বাঁকুড়ার মেঠো পথ, সবুজ পাহাড়ের একটি অসাধারণ ছবি। ছবি সৌজন্যে গুগলস ইমেজেস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 14, 2021 | 10:43 AM

পাহাড়, সমুদ্র ছেড়ে জঙ্গলে ঘুরে আসতে মন চাইছে? সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হতেই রাজ্যে শিথিল হয়েছে লকডাউন পরিস্থিতি।তাই মন খুলে শান্তি ও নিরিবিলিতে সময় কাটাতে বেছে নিতে পারেন জঙ্গলের পথকে। তবে জঙ্গল সফর বলতেই লাটাগুড়ি কিংবা রাজ্যের বাইরে যেতে হবে, এমনটাই মনে হয়। না একেবারেই নয়। কলকাতার অদূরেই রয়েছে ঘন জঙ্গল ও মেঠো পথের অলিগলি।সবুজে ঘেরা জঙ্গল, পাখিদের কলকাকলি, দূর থেকে ভেসে আসা নদীর জলরাশির কুলকুল শব্দ- সবকিছুই পাবেন নিজের মতো করে। লং ড্রাইভে পার্টনারকে নিয়ে কিংবা পরিবারকে নিয়ে ২দিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন শহর থেকে খানিক দূরের এই জঙ্গলঘেরা এলাকাগুলিতে…

সুন্দরবন- ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে খ্যাত সুন্দরবনের জঙ্গলের সুনাম রয়েছে জগতজোড়া। বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম ব-দ্বীপ এলাকা, গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের মোহনায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখার সুযোগ হাতছাড়া না করাই ভাল। গঙ্গার মোহনার চারিধারে ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরীর ফাঁকে বন্যপ্রাণীদের দেখার সাক্ষী থাকার রোমাঞ্চই আলাদা। এছাড়া সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান, ভগবতপুর কুমির সংরক্ষণ কেন্দ্র ও হেনরি আইল্য়ান্ড ঘুরের আসার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।

সোনাঝুড়ির জঙ্গল-কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে যাওয়ার পথে লাল মেটো পথের চারিপাশে সারি সারি শালবনের জঙ্গল। স্ট্রেস কমাতে বহু বাঙালিই কলকাতা থেকে লং ড্রাইভে শান্তিনিকেতনে চলে যান। এই জায়গাটি বাঙালির খুব কাছের একটি জায়গা। বল্লভপুর বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ কেন্দ্রে পাখিদের কোলাহল যেমন কাঠঠোকরা, মাঝরাঙার সঙ্গে সঙ্গে ব্ল্যাকবাকস, হরিণ,শিয়াল, খ্যাকশিয়ালের মতো জন্তু-জানোয়ারকেও সামনে থেকে দেখতে পারবেন। কবিগুরুর আশ্রম ও কোপাই নদী তো আছেই। শীতের সময় গোটা জঙ্গল জুড়ে সোনালী রঙের সোনাঝুড়ির ফুলের সম্ভার নিয়ে সেজে থাকে শান্তিনিকেতন।

জয়পুর জঙ্গল- সবুজ পাহাড় , পবিত্র ও প্রাচীন মন্দিরের ঘণ্টা, নদীর জলের স্রোতের স্নিগ্ধ শব্দ, বন্যপ্রাণি- নৈসর্গিত প্রাকৃতিক ও গ্রাম্য জীবনে ঘ্রাণ নিতে চাইলে বেড়িয়ে পড়ুন বাঁকুড়া জেলায়। পলাশ, শাল, মহুয়া, কুসুম, সেগুন, নিম গাছে ঘেরা গভীর জঙ্গলে বন্য শিয়াল, হরিণ, হাতিদের বাস। অভয়ারণ্য সফরে পাখিদের কলকাকলিতে মুদ্ধ হবে আপনার মন। বর্তমানে জঙ্গলের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য অভয়ারম্যের ভিতর ইকো-রিসর্ট তৈরি করা হয়েছে। এখানেই রয়েছে ১৭ শতকের প্রাচীন জোড় বাংলা মন্দির, দলমাদল কামান, গোকূলচন্দ মন্দির, শুশনিয়া পাহাড়, মুকুটমণিপুর, জয়রামবাটী ও কামারপুকুর গ্রাম ।

গড় জঙ্গল- দুর্গাপুর শহরের বাইরে ও দেশের সবচেয়ে পুরনো একটি এলাকাটি অবস্থিত এই গড় জঙ্গল। ধর্মগড়ের রাজা সুরাথের নামের জন্য এই এলাকা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। জানা যায়, রাজা সুরাথ এই এলাকায় প্রথম মন্দির স্থাপন করে দুর্গাপুজা শুরু করেন। এছাড়া জঙ্গলের গভীরে রয়েছে শ্যামারম্পা মন্দির। হাতে সময় থাকলে গড় জঙ্গলের অদূরেই দেউল পার্ক রয়েছে, প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে এই জায়গা একেবারেই পারফেক্ট।

ঝাড়গ্রাম- হাওড়া স্টেশনে থেকে ট্রেনে করে ঝাড়গ্রাম পৌঁছাতে বেশি সময় লাগে না। তিন ঘণ্টার মধ্যেই আপনার গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারবেন। রয়্যাল রাজবাড়ি, জঙ্গল সাফারি ও এলাহি খাওয়া-দাওয়ার সুবন্দোবস্ত রয়েছে এই ঝাড়গ্রামে। অভয়ারণ্যে রোমা়ঞ্চকর অনুভূতি সঞ্চয় করতে ঝাড়গ্রেমের বন্যপথকে বেছে নেন অনেকেই। সুবর্ণরেখা নদী, বেলপাহাড়ির মেঠো গন্ধ আপনাকে গ্রাম ও প্রকৃতির মেলবন্ধনে অন্যজগতে নিয়ে যেতে পারে। এখানে যাওয়ার প্ল্যান করলে আগে থেকে কটেজ বা রাজবাড়ির ঘর বুকিং করে রাখতে পারেন।

আরও পড়ুন: ভূস্বর্গ ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন? পহেলগাঁও- অনন্তনাগে যেতে হলে মানতে হবে এই নিয়মগুলি…