AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Baba Mandir in Sikkim: সিকিম গেলে বাবা মন্দির মাস্ট! কিসের টানে পর্যটকদের ভিড় জমে এখানে?

Sikkim Tourism: সিকিম রাজ্যে দুটো বাবা মন্দির রয়েছে। একটি পুরোনো সিল্ক রুটে এবং অন্যটি নাথুলার কাছে। দু'জায়গাতেই বিরাজ করেন হরভজন সিংহ।

Baba Mandir in Sikkim: সিকিম গেলে বাবা মন্দির মাস্ট! কিসের টানে পর্যটকদের ভিড় জমে এখানে?
সিল্ক রুটে অবস্থিত বাবা মন্দির
| Edited By: | Updated on: Mar 10, 2023 | 1:58 PM
Share

প্রথমবার সিকিম বেড়াতে গেলে বাকেটলিস্টে থাকে নাথুলা, চাঙ্গু লেক। সেই তালিকা থেকে বাদ যায় না বাবা মন্দিরও। হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে, নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হলেও কোনওভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না বাবা মন্দির। সিকিমের এই রুটে বেড়াতে গেলে বাবা মন্দিরে বারো মাস পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। মন্দির ঠিকই কিন্তু সেখানে কোনও ঈশ্বরের বাস নেই। তিনি না থেকেও রয়েছেন। তিনি এখনও পাহারা দিয়ে চলেছেন দেশের সীমান্ত। এমনটাই বিশ্বাস করেন ভারতীয় সেনারা। তিনি হলেন বাবা হরভজন সিংহ। তাঁর স্মরণে যে মন্দির সিকিমে গড়ে উঠেছে, যা পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হলেও, ভারতীয় সেনাদের কাছে এর আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।

সিকিম রাজ্যে দুটো বাবা মন্দির রয়েছে। একটি পুরোনো সিল্ক রুটে এবং অন্যটি নাথুলার কাছে। দু’জায়গাতেই বিরাজ করেন হরভজন সিংহ। মূলত হরভজন সিংহের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে এই মন্দির। হরভজন সিংহের জন্ম ১৯৪৬ সালের ৩০ অগস্ট। ১৯৬৫ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পঞ্জাব রেজিমেন্টে যোগ দেন তিনি। ১৯৬৮ সালে ২২ বছর বয়সি হরভজন কর্মরত ছিলেন নাথুলায়। তার বছরখানেক আগে এই অঞ্চল সাক্ষী ছিল ইন্দো-চিন যুদ্ধের। সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি না থাকলেও নাথুলা সবসময় স্পর্শকাতর। তাছাড়া এই জায়গাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত হওয়ার মারাত্মক ঠান্ডা, দুর্গম ও সঙ্কীর্ণ।

১৯৬৮ সালের অক্টোবর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে হরভজন সিংহ রওনা দিয়েছিলেন আউটপোস্টের পথে। কিন্তু শেষ অবধি তিনি তাঁর গন্তব্যে পৌঁছাননি। টানা তিন-চার দিন ধরে খোঁজ চালানোর পরও হরভজনের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তারপর শোনা যায়, তিনি এক সেনা জওয়ান প্রীতম সিংহের স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন এবং বলে দিয়েছিলেন তাঁর দেহ কোথায় পাওয়া যাবে। শোনা যায়, হরভজনের বলে দেওয়া জায়গাতেই তাঁর নিথর দেহ পাওয়া যায়। তারপর পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।

যদিও এখানেই শেষ নয়। শোনা যায়, মৃত্যুর পরও নিজের কর্তব্য পালন করেছেন হরভজন সিংহ। নাইট ডিউটি থাকা কোনও সেনা জওয়ান ঘুমিয়ে পড়লে তাঁকে চড় মেরে জাগিয়ে দেন তিনি। এমনকী শত্রুপক্ষ থেকে আসা আগাম বিপদ সম্পর্কে সেনাদের সতর্ক করে দেন। তাঁর এই অবদানের কারণে তাঁর মাসিক বেতন বাড়িতে পাঠানো হত, বার্ষিক ছুটিও পেতেন তিনি। তাঁর জন্য আলাদা করে ট্রেনে সিট বুক করা হত। তাঁর ব্যাগ গোছানো হত এবং তিনজন সেনা জওয়ান তাঁর বাড়িতে সেটা পৌঁছে দিতেন। ১৪ বছর পর আগেও এই রীতি পালন করা হত।

বাবা মন্দিরে হরভজন সিংহের সামরিক উর্দি, জুতো সযত্নে সংরক্ষণ করা আছে। তাঁর জন্য বিছানাও তৈরি করা রয়েছে। নাথুলায় কর্মরত সেনা জওয়ানদের দাবি, সেখানে মাঝে মাঝে হরভজন সিংহ বিশ্রাম নেন এবং বিছানা এলোমেলো হয়ে যায়। একই জিনিস দেখা যায়, তাঁর জুতোর ক্ষেত্রেও। জুতোতেও মাঝে মাঝে কাদা, ধুলো লেগে থাকে। অথচ হরভজনের কোনও জিনিস একচুল এদিক-ওদিক করা হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই ভারতীয় সেনা জওয়ান থেকে শুরু করে পর্যটকেরা সিকিম গেলেই ঘুরে আসেন বাবা মন্দির।