Jamini Roy: লাইব্রেরি আর গ্যালারিতে সেজে উঠবে শিল্পী যামিনী রায়ের বাড়ি, মিউজিয়াম হয়ে ওঠার পথে অপেক্ষা আর মাত্র ১ বছরের
Art Museum: যামিনী রায়ের বাড়িটিকে মিউজিয়াম করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে দিল্লি আর্ট গ্যালারি। ২০২৪ সালের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে সর্বসাধারণ জন্য খুলে দেওয়ার কথা।
বালিগঞ্জ প্লেসের একটা শান্ত গলি যামিনী রায় সরণি। সেখানে ১৮ যামিনী রায় সরণিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে তিনতলা বাড়িটা। একটা সময়ে এই বাড়িতে আড্ডা দিতে আসতেন দেশের নামজাদা লেখক, কবি, চিত্রকর, শিল্পী, পরিচালক এবং রাজনীতিবিদরা। কিন্তু এখন সে বাড়ির বেহাল দশা। সেখানে যে বরেণ্য শিল্পী যামিনী রায় থাকতেন, তা অনেকেরই অজানা। তবে, দ্রুত এই বাড়ি রূপান্তরিত হতে চলেছে মিউজিয়ামে।
১৯৪৯ সালে বাগবাজারের ভাড়া বাড়ি ছেড়ে স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী যামিনী রায় চলেন আসেন দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ প্লেসের এই বাড়িতে। ১৯৭২ সালে চিত্রকরের মৃত্যুর পর বাড়ির দশা বেহাল হয়ে যায়। কিন্তু যামিনী রায় এবং তাঁর ছেলে যে ভাবে যত্ন সহকারে বাড়িটি সুন্দর করেছিলেন। যদিও এখন এই বাড়ির নিচের তলায় একটি ব্যাঙ্ক রয়েছে। এমনকী গুগল ম্যাপে সার্চ করে করলে এখানে সেই ব্যাঙ্কের ঠিকানাই দেখায়। কিন্তু এবার এই বাড়ি আবার ফিরে পাবে তার পুরনো চেহারা। যামিনী রায়ের এই বাড়ি হয়ে উঠছে মিউজিয়াম।
যামিনী রায়ের বাড়িটিকে মিউজিয়াম করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে দিল্লি আর্ট গ্যালারি (DAG)। ২০২৪ সালের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে সর্বসাধারণ জন্য খুলে দেওয়ার কথা। মেক্সিকোতে কাসা আজুল নামে একটি জায়গা রয়েছে। সেখানে দেশ-বিদেশ থেকে ফ্রিদা কাহলোর ফ্যানরা আসেন। যামিনী রায়ের এই বাড়িকে তেমনই একটি মিউজিয়াম হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চায় ডিএজি। ডিএজি যামিনী রায়ের পরিবারের কাছ থেকে বাড়িটা কিনে নিয়েছে এবং সংস্করণের দায়িত্ব নিয়েছে।
চল্লিশের দশকে যখন যামিনী রায় বালিগঞ্জের প্লেসের বাড়িতে এসেছিলেন, তখন এই জায়গার নাম ছিল ডিহি শ্রীরামপুর লেন। সেই সময় এই বাড়িটি কলকাতার অন্যতম আকর্ষণ ছিল। পুরনো বাসিন্দারা ছাড়া এখনকার অনেকেই জানেন না যে, শিল্পী যামিনী রায় একদা এখানে থাকতেন।
পশ্চিমী শৈলীতে প্রশিক্ষিত ছিলেন তিনি। কিন্তু নিজের শিকড়কে কোনওদিন ভোলেননি। বরং তিনি বাংলার লোক ঐতিহ্য থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে কাজ করতেন। যেমন বাঁকুড়ার ঘোড়া, বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির মন্দির, কালীঘাটের পটুয়া ইত্যাদি। যামিনী রায় অল্প টাকায় তাঁর আঁকা ছবি বিক্রি করতেন। তিনি চাইতেন তাঁর কাজ সহজলভ্য হোক। তাই তাঁর বাড়িটাকে এমন ভাবেই সংগ্রহশালায় পরিণত করা হচ্ছে, যাতে মানুষ সহজেই যামিনী রায়ের কাজ ও জীবনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।
এই বাড়ির নীচের তলায় ছিল যামিনী রায়ের স্টুডিও। এখানেই প্রদর্শিত করা হবে শিল্পীর কাজ। এছাড়া এই বাড়ির বাগানে রয়েছে সেই বহু-চর্চিত আম গাছ, যার তলায় বসে অবসর সময়ে ছবি আঁকতেন শিল্পী। সেখানে তৈরি হবে ক্যাফে। বাড়ির উঠোন জুড়ে থাকবে শিল্পীর আঁকা ছবি। বাড়ির প্রথম এবং দ্বিতীয় তলায় তৈরি হবে গ্যালারি। তার সঙ্গে থাকবে লাইব্রেরি, দোকান, ক্যাফেটেরিয়া। বাড়ির খোলা জায়গা ওয়ার্কশপ, লাইভ পারফরম্যান্সের জন্য ব্যবহার করা হবে। তবে এভাবে ১৮ যামিনী রায় সরণি সেজে উঠতে এখনও প্রায় ১ বছর বাকি।