উইকেন্ড ট্রাভেল ডেস্টিনেশন: ভাগীরথীর তীরে অম্বিকা মন্দির
সড়কপথে কলকাতা থেকে জি টি রোড ধরে ব্যান্ডেল পৌঁছে সেখান থেকে আসাম-লিঙ্ক রোড ধরে কালনা প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ। রাত্রিবাসের জন্য রয়েছে পুরসভার টুরিস্ট লজ।
ভাগীরথীর তীরে অম্বিকা দেবীর মন্দির হতে পারে আপনার সপ্তাহান্তের ট্রাভেল ডেস্টিনেশন (travel)। বিশেষত বাড়ির বয়স্কদের নিয়ে বেড়াতে যেতে চাইলে এই জায়গার প্ল্যান করতে পারেন। গাড়ি নিয়ে গেলে একদিনেই ফিরে আসা সম্ভব। এখানে অম্বিকা দেবীর মন্দির ও সংলগ্ন রাসমঞ্চ পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকে। দেবীর নামেই এই জায়গার নামকরণ হয়েছে। মধ্যযুগের স্থাপত্য ও ভাস্কর্য শিল্পের বহু নিদর্শন এখানে রয়েছে।
স্থানীয় অনেকের বিশ্বাস, অম্বিকা দেবীর মন্দির আদতে জৈন মন্দির। এক সময় এখানে জৈন দেবতা ছিলেন। কালনার মুসলমান যুগের নিদর্শনগুলি তুর্কি আফগান রাজত্বকালের। এই সময় ইসলাম সংস্কৃতির প্রসিদ্ধ কেন্দ্র হয়ে ওঠে কালনা। পাঁচশো বছর আগে তৈরি ফিরোজ শাহের মসজিদ।
আরও পড়ুন, বেড়াতে যাওয়ার আগে মেয়েদের কী কী মনে রাখতেই হবে?
শিলালেখ অনুযায়ী, ১৫৩৩ সালে ফিরোজ শাহের আমলে তৈরি। মসজিদের মাথার গম্বুজ ও মিনারগুলি এখন ভেঙে পড়েছে। নসরৎ শাহের মসজিদ এবং মজলিশ সাহেবের মসজিদের খিলান স্থাপত্যশিল্পের উৎকর্ষ প্রমাণ করে মুসলিম সংস্কৃতির কথা। একই সময় কালনা বৈষ্ণব সংস্কৃতিরও প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে শ্রীচৈতন্য ও নিত্যানন্দের প্রভাবে।
কথিত রয়েছে, রাজা চিত্রসেন ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে সিদ্ধেশ্বরী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। চারচালাবিশিষ্ট মন্দিরটির গঠনশৈলী অত্যন্ত সুন্দর। দেবী দারুনির্মিত ও চতুর্ভুজা। তার পর প্রতিষ্ঠিত হয় কালনার বিখ্যাত শিবমন্দির। এখানেও ১০৮টি শিবমন্দির রয়েছে এবং মন্দিরের শিবের রঙ শুভ্র। বর্ধমান রাজবংশের আরও বহু কীর্তি আছে কালনায়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য লালজির মন্দির ও তার কারুকার্য, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির ও জলেশ্বর মন্দির।
আরও পড়ুন, ডেস্টিনেশন বেনারস: কোন কোন ঘাট মিস করবেন না?
সাধারণত মন্দিরগুলি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে বেশ কিছু মন্দিরের গর্ভগৃহ দুপুরে অল্প সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়। কলকাতা থেকে লোকাল ট্রেনে অম্বিকা-কালনা পৌঁছনো যায়। হাওড়া বা শিয়ালদহ কাটোয়া লোকাল ধরতে পারেন। সড়কপথে কলকাতা থেকে জি টি রোড ধরে ব্যান্ডেল পৌঁছে সেখান থেকে আসাম-লিঙ্ক রোড ধরে কালনা প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ। রাত্রিবাসের জন্য রয়েছে পুরসভার টুরিস্ট লজ। আগে থেকে বুকিং করে যাওয়াই ভাল।
আরও পড়ুন, ডেস্টিনেশন বিষ্ণুপুর: কোন জায়গাগুলো উইশ লিস্টে রাখবেন?