‘বাধ্য হয়ে’ প্রথম বিয়ে, চট্টগ্রামের মীনা থেকে বিশ্বের কবরী হয়ে ওঠা হার মানাবে চিত্রনাট্যকেও

আজকের কবরী আর সেদিনের মীনা পালের মাঝের জার্নি হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও। এক মধ্যবিত্ত একান্নবর্তী পরিবার থেকে বড় হয়ে ওঠা কবরীর ব্যপ্তি তো শুধু বাংলাদেশ নয়, তিনি এ দেশের , গোটা বিশ্বের।

| Updated on: Apr 17, 2021 | 7:10 PM
প্রয়াত হয়েছেন সারাহ বেগম কবরী। করোনা কেড়ে নিয়েছে তাঁকে। দুই বাংলা তাঁকে বিদায় জানিয়েছে চোখের জলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে আসছে একের পর এক স্মৃতিচারণ। কিন্তু আজকের কবরী আর সেদিনের মীনা পালের মাঝের জার্নি হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও। এক মধ্যবিত্ত একান্নবর্তী পরিবার থেকে বড় হয়ে ওঠা কবরীর ব্যপ্তি তো শুধু বাংলাদেশ নয়, তিনি এ দেশের , গোটা বিশ্বের।

প্রয়াত হয়েছেন সারাহ বেগম কবরী। করোনা কেড়ে নিয়েছে তাঁকে। দুই বাংলা তাঁকে বিদায় জানিয়েছে চোখের জলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে আসছে একের পর এক স্মৃতিচারণ। কিন্তু আজকের কবরী আর সেদিনের মীনা পালের মাঝের জার্নি হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও। এক মধ্যবিত্ত একান্নবর্তী পরিবার থেকে বড় হয়ে ওঠা কবরীর ব্যপ্তি তো শুধু বাংলাদেশ নয়, তিনি এ দেশের , গোটা বিশ্বের।

1 / 9
ছোট থেকেই নাচ-গানের পরিবেশে বেড়ে ওঠা মীনার সিনেমা জগতে অভিষেক ঘটে ১৯৬৪ সালে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে। ছবির নাম 'সুতরাং'। তাঁর নাম বদল মূলত সিনেমার সূত্রেই। 'সুতরাং'-এর পরিচালক সুভাষ দত্তই তাঁর নাম রেখেছিলেন 'কবরী'। 'প্রথম আলো'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাবেরী বলেছিলেন, "একবার ঠিক হলো যে 'করবী' দেওয়া হবে। কেউ আবার বলল না, 'কবরী'। কোনো কোনো নাম দাদার (সুভাষ দত্ত) পছন্দ হয় না। শেষতক 'কবরী' নামটাই টিকে গেল। আর “মিনা পাল” থেকে আমি হয়ে গেলাম কবরী।"

ছোট থেকেই নাচ-গানের পরিবেশে বেড়ে ওঠা মীনার সিনেমা জগতে অভিষেক ঘটে ১৯৬৪ সালে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে। ছবির নাম 'সুতরাং'। তাঁর নাম বদল মূলত সিনেমার সূত্রেই। 'সুতরাং'-এর পরিচালক সুভাষ দত্তই তাঁর নাম রেখেছিলেন 'কবরী'। 'প্রথম আলো'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাবেরী বলেছিলেন, "একবার ঠিক হলো যে 'করবী' দেওয়া হবে। কেউ আবার বলল না, 'কবরী'। কোনো কোনো নাম দাদার (সুভাষ দত্ত) পছন্দ হয় না। শেষতক 'কবরী' নামটাই টিকে গেল। আর “মিনা পাল” থেকে আমি হয়ে গেলাম কবরী।"

2 / 9
প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেছিলেন নাবালিকা মেয়েটি। এর পর একে একে 'বাহানা', 'জলছবি', 'হীরামন', 'সাত ভাই চম্পা'-- গুণে শেষ করা যাবে না তাঁর ছবির তালিকা। প্রথম সিনেমা 'সুতরাং'-এর পরেই বিয়ে করে নিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য প্রথম আলোর ওই সাক্ষাৎকারেই কবরী জানিয়েছিলেন, বিয়ে তিনি করেননি, তাঁর বিয়ে 'হয়েছিল'।

প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেছিলেন নাবালিকা মেয়েটি। এর পর একে একে 'বাহানা', 'জলছবি', 'হীরামন', 'সাত ভাই চম্পা'-- গুণে শেষ করা যাবে না তাঁর ছবির তালিকা। প্রথম সিনেমা 'সুতরাং'-এর পরেই বিয়ে করে নিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য প্রথম আলোর ওই সাক্ষাৎকারেই কবরী জানিয়েছিলেন, বিয়ে তিনি করেননি, তাঁর বিয়ে 'হয়েছিল'।

3 / 9
তাঁর কথায়, "বিয়ে করতে আমি বাধ্য হয়েছিলাম। বিয়েটা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিবারের কথামতো করতে হয়েছিল। সুতরাং সিনেমার শুটিং শেষ করেছি মাত্র। তখনো অতটা জনপ্রিয়তা পাইনি। জনপ্রিয়তা তো এসেছে সিনেমাটা মুক্তি পাওয়ার পর। সে সময় নিজের পছন্দমতো কিছু করার অবস্থা ছিল না। তার ওপর ছিল পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা। সব মিলিয়ে প্রথম বিয়েটা করতে বাধ্য হই। তাঁর প্রথম স্বামী চিত্ত চৌধুরী।

তাঁর কথায়, "বিয়ে করতে আমি বাধ্য হয়েছিলাম। বিয়েটা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিবারের কথামতো করতে হয়েছিল। সুতরাং সিনেমার শুটিং শেষ করেছি মাত্র। তখনো অতটা জনপ্রিয়তা পাইনি। জনপ্রিয়তা তো এসেছে সিনেমাটা মুক্তি পাওয়ার পর। সে সময় নিজের পছন্দমতো কিছু করার অবস্থা ছিল না। তার ওপর ছিল পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা। সব মিলিয়ে প্রথম বিয়েটা করতে বাধ্য হই। তাঁর প্রথম স্বামী চিত্ত চৌধুরী।

4 / 9
তবে বিয়ে-সংসার অভিনয়ের বাইরেও তাঁর অন্য এক পরিচিতি ছিল। রাজনৈতিক ভাবে সচেতন , দৃঢ়চেতা এক মানুষ। সাল ১৯৭১। শুরু হল মুক্তিযুদ্ধ। ভারতে আসেন অভিনেত্রী। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে জনমত গড়তে যোগ দিতে থাকেন বিভিন্ন সভা-সমাবেশে। আবেদন করেছিলেন সাহায্যের। নিজের আত্মজীবনীতে সে সব কথা সযত্নে গেঁথে রেখেছেন তিনি।

তবে বিয়ে-সংসার অভিনয়ের বাইরেও তাঁর অন্য এক পরিচিতি ছিল। রাজনৈতিক ভাবে সচেতন , দৃঢ়চেতা এক মানুষ। সাল ১৯৭১। শুরু হল মুক্তিযুদ্ধ। ভারতে আসেন অভিনেত্রী। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে জনমত গড়তে যোগ দিতে থাকেন বিভিন্ন সভা-সমাবেশে। আবেদন করেছিলেন সাহায্যের। নিজের আত্মজীবনীতে সে সব কথা সযত্নে গেঁথে রেখেছেন তিনি।

5 / 9
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও শুরু হল তাঁর অভিনেতা জীবন। শুধু ও পারেই নয়, ঋত্বিক ঘটকের 'তিতাস একটি নদীর নাম'-এ তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিল এ পারের মানুষও। ফারুকের সঙ্গে তাঁর 'সুজন সখী', ‘চোরাবালি’, ‘পারুলের সংসার’আজও ভুলতে পারেনি মানুষ। ঠিক যেমন ভুলতে পারেননি তাঁর এবং অভিনেতাআ রাজ্জাকের কেমিস্ট্রি। রাজ্জাকের সঙ্গে অফ স্ক্রিন সম্পর্ক নিয়ে কাবেরী একবার বলেছিলেন, "তিনি ছিলেন বিবাহিত। তাঁর সঙ্গে তো কোনো সম্পর্কের প্রশ্নই আসে না। তিনি আমার সহশিল্পী এবং খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। "

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও শুরু হল তাঁর অভিনেতা জীবন। শুধু ও পারেই নয়, ঋত্বিক ঘটকের 'তিতাস একটি নদীর নাম'-এ তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিল এ পারের মানুষও। ফারুকের সঙ্গে তাঁর 'সুজন সখী', ‘চোরাবালি’, ‘পারুলের সংসার’আজও ভুলতে পারেনি মানুষ। ঠিক যেমন ভুলতে পারেননি তাঁর এবং অভিনেতাআ রাজ্জাকের কেমিস্ট্রি। রাজ্জাকের সঙ্গে অফ স্ক্রিন সম্পর্ক নিয়ে কাবেরী একবার বলেছিলেন, "তিনি ছিলেন বিবাহিত। তাঁর সঙ্গে তো কোনো সম্পর্কের প্রশ্নই আসে না। তিনি আমার সহশিল্পী এবং খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। "

6 / 9
জীবনে বার বার ভালবাসা খুঁজেছেন কবরী। প্রথম বিয়ে ভেঙে যেতে দ্বিতীয়বার নতুন করে ভালবাসার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু সে সম্পর্কও স্থায়ী হয়নি। তাঁর আত্মজীবনীর ছত্রে ছত্রে মনের মানুষ না পাওয়ার যন্ত্রণা। শুধু অভিনেতাই নয়, তিনি ছিলেন পরিচালকও। ২০০৫ সালে 'আয়না' নামক ছবির মধ্য দিয়ে পরিচালনায় হাতেখড়ি হয় তাঁর। যুক্ত হয়েছিলেন রাজনীতির সঙ্গেও।

জীবনে বার বার ভালবাসা খুঁজেছেন কবরী। প্রথম বিয়ে ভেঙে যেতে দ্বিতীয়বার নতুন করে ভালবাসার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু সে সম্পর্কও স্থায়ী হয়নি। তাঁর আত্মজীবনীর ছত্রে ছত্রে মনের মানুষ না পাওয়ার যন্ত্রণা। শুধু অভিনেতাই নয়, তিনি ছিলেন পরিচালকও। ২০০৫ সালে 'আয়না' নামক ছবির মধ্য দিয়ে পরিচালনায় হাতেখড়ি হয় তাঁর। যুক্ত হয়েছিলেন রাজনীতির সঙ্গেও।

7 / 9
২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর নামে চুয়াডাঙ্গা শহরে একটি রাস্তা আছে। নাম 'কবরী রোড'। ১৯৬৯ সালে যখন চুয়াডাঙ্গায় “কখগঘঙ” সিনেমার শুটিং হয় তখন এক বাড়িতে ভাড়া ছিলেন কবরী। প্রায় এক মাস মতো ছিলেন সেখানে। প্রিয় নায়িকাকে দেখতে অনেকেই ভিড় জমাতেন সেখানে। আর সেখান থেকেই ওই কবরী রোড।

২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর নামে চুয়াডাঙ্গা শহরে একটি রাস্তা আছে। নাম 'কবরী রোড'। ১৯৬৯ সালে যখন চুয়াডাঙ্গায় “কখগঘঙ” সিনেমার শুটিং হয় তখন এক বাড়িতে ভাড়া ছিলেন কবরী। প্রায় এক মাস মতো ছিলেন সেখানে। প্রিয় নায়িকাকে দেখতে অনেকেই ভিড় জমাতেন সেখানে। আর সেখান থেকেই ওই কবরী রোড।

8 / 9
মাত্র ১৩ দিনের লড়াইয়ে হার মানলেন তিনি। রেখে গেলেন পাঁচ পুত্র, স্মৃতি, আর ভক্তদের মন উজাড় করা ভালবাসা। অবসান হল কবরী যুগের।  তথ্যঋণ-  তাঁর আত্মজীবনী‘স্মৃতিটুকু থাক’ এবং প্রথম আলো, ছবি- আর্কাইভ ও সংগৃহীত

মাত্র ১৩ দিনের লড়াইয়ে হার মানলেন তিনি। রেখে গেলেন পাঁচ পুত্র, স্মৃতি, আর ভক্তদের মন উজাড় করা ভালবাসা। অবসান হল কবরী যুগের। তথ্যঋণ- তাঁর আত্মজীবনী‘স্মৃতিটুকু থাক’ এবং প্রথম আলো, ছবি- আর্কাইভ ও সংগৃহীত

9 / 9
Follow Us: