Chandan Yatra 2022: বৈশাখের এই শুভদিন থেকেই শুরু হয় জগন্নাথদেবের চন্দনযাত্রা! এর কারণ কী?

Jagannath Rath Yatra: দীর্ঘ ২১ দিন ধরে এইভাবে প্রত্যহ পূজারী প্রভু গোপীনাথের শ্রীঅঙ্গে লেপন করলেন। সেইদিন থেকেই চন্দন যাত্রা শুরু হল।

Chandan Yatra 2022: বৈশাখের এই শুভদিন থেকেই শুরু হয় জগন্নাথদেবের চন্দনযাত্রা! এর কারণ কী?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 05, 2022 | 11:55 AM

হিন্দু পুরাণ মতে, অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya) দিন সত্যযুগের অবসান ঘটিয়ে ক্রেতা যুগের সুচনা হয়। অক্ষয় তৃতীয়া হলো চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের তৃতীয়া তিথি, অক্ষয় তৃতীয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি, অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। উৎকলখণ্ডে বর্ণিত আছে, শ্রীজগন্নাথদেব (Lord Jagannath) মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্নকে বৈশাখী শুক্লা অক্ষয় তৃতীয়াতে সুগন্ধি চন্দন দ্বারা জগন্নাথের অঙ্গে লেপন করার নির্দ্দেশ দিয়েছিলেন। সেদিন থেকে শুরু হয় চন্দন যাত্রা (Chandan Yatra) উৎসব। গ্রীষ্ম ঋতুতে শ্রীহরির অঙ্গে কর্পূর চন্দন লেপন করলে ভগবান শ্রীহরি প্রীত হন।

দুই বছর পর ভক্তদের উপস্থিতিতে এবার বিখ্যাত চন্দন যাত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। পুরীর নরেন্দ্রপুকুর চন্দন যাত্রার জন্য সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল। ঐতিহ্য অনুসারে, অক্ষয় তৃতীয়ার অনুষ্ঠান বিশ্ব বিখ্যাত রথযাত্রার রথ নির্মাণের সূচনা করে। চলতি বছরের ১ জুলাই জগন্নাথ রথযাত্রা উৎসব পালন করা হবে।

চন্দ্নযাত্রা

চন্দন যাত্রা চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথিতে শুরু হয়ে ২১ দিন পর্যন্ত চলে। ভগবান শ্রীজগন্নাথদেব এই দিনে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নকে চন্দনযাত্রা মহোৎসবটি পালন করার জন্য সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন। ভগবানের অঙ্গলেপন এক ধরণের ভক্তিমূলক কর্ম এবং চন্দন হল সর্বশ্রেষ্ঠ প্রলেপন। যেহেতু ভারতে বৈশাখ মাস অত্যন্ত উষ্ণ থাকে, তাই চন্দনের শীতল গুণ ভগবানের আনন্দ প্রদান করে। জগন্নাথের দুই চক্ষু ব্যতীত সর্বাঙ্গে চন্দন লেপন করা হয়ে থাকে। এবং উৎসব-মূর্তি বা বিগ্রহগণকে নিয়ে শোভাযাত্রা করা হয় এবং মন্দির পুষ্করিণীতে নৌকাবিহার করা হয়ে থাকে।

শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে দেখা যায়, বৃন্দাবনে পরম বৈষ্ণব শ্রীমাধবেন্দ্র পুরীকে স্বপ্নে তাঁর আরাধ্য শ্রীগোপাল বলছেন, “আমার শরীরের তাপ জুড়োচ্ছে না। মলয় প্রদেশ থেকে চন্দন নিয়ে এসো এবং তা ঘষে আমার অঙ্গে লেপন কর, তা হলে তাপ জুড়োবে।” তার পর বৃদ্ধ মাধবেন্দ্র পুরীপাদ পূর্বভারতে নীলাচলে জগন্নাথধাম পুরীতে এসে রাজার কাছে পূর্ব স্বপ্নগত সমস্ত কথা বললেন। রাজা গোপালের জন্য এক মণ মলয়জ চন্দন, ২০ তুলা কর্পূর এবং এই চন্দন বহে নিয়ে আসার জন্য দুইজন সেবকের ব্যবস্থা করেদিলেন। মাধবেন্দ্র পুরীপাদ রাজার কাছে মলয়জ চন্দন ও কর্পূর নিয়ে বৃন্দাবনে ফিরছিলেন। পথে রেমুণাতে শ্রীগোপীনাথ মন্দিরে আসেন। সেই রাত্রে সেখানে শয়ন কালে স্বপ্ন দেখেন, গোপাল এসে বলছেন, “হে মাধবেন্দ্র পুরী, আমি ইতিমধ্যেই সমস্ত চন্দন ও কর্পূর গ্রহণ করেছি। এখন কর্পূর সহ এই চন্দন ঘষে ঘষে শ্রীগোপীনাথের অঙ্গে লেপন কর। গোপীনাথ ও আমি অভিন্ন। গোপীনাথের অঙ্গে চন্দন লাগালেই আমার অঙ্গ শীতল হবে।” সকালে শ্রীমাধবেন্দ্র পুরিপাদ পূজারীর নিকট রাত্রের স্বপ্নের সমস্ত কথা বলিলেন। পূজারী প্রভু শুনে খুব খুশি হলেন এবং কর্পূর আর চন্দন ঘষে শ্রীগোপীনাথের শ্রীঅঙ্গে লেপন করলেন। দীর্ঘ ২১ দিন ধরে এইভাবে প্রত্যহ পূজারী প্রভু গোপীনাথের শ্রীঅঙ্গে লেপন করলেন। সেইদিন থেকেই চন্দন যাত্রা শুরু হল।