Kojagari Lakshmi Puja 2022: রাত পোহালেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো, সংসারে শ্রীবৃদ্ধি দ্বিগুণ করতে ভুলেও এই কাজ করবেন না!
Rules Of Lakshmi Puja: প্রতি বৃহস্পতিবারই বাঙালির ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজো করা হয়। তবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর গুরুত্ব একটু আলাদা। এদিনের মাহাত্ম্য ও ঐতিহ্য চলে আসছে বহু প্রাচীন কাল ধরে।
দুর্গাপুজো (Durga Puja 2022) পরেই শুরু হয়ে যায় কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর (Kojagari Lakshmi Puja) তোরজোড়। আশ্বিনের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে মহালক্ষ্মীর আরাধনা করা হয় বলে একে কোজাগরী পূর্ণিমা বা কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো বলা হয়। দেবী লক্ষ্মী (Goddess Lakshmi) হলেন ধনসম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যে দেবী। হিন্দুমতে, এদিন রাত জেগে ঘর আলো করে যে বসে থাকেন, তার ঘরেই লক্ষ্মীর প্রবেশ ঘটে। এদিন ভক্তদের আশীর্বাদ দান করতেই মর্তে নেমে আসেন দেবী লক্ষ্মী। এই তিথিতে যাঁরা রাত জেগে দেবীর আরাধনা করেন, অপেক্ষায় থাকেন, দেবী তাকে বিশেষ কৃপা করেন। এদিন সকলেই নিজের সাধ্য মত লক্ষ্মীপুজো করে থাকেন। এই বিশেষ তিথিতে লক্ষ্মী পুজো ছাড়াও সত্যনারায়ণেরও পুজো করা হয়। কোথাও পটে আবার কোথাও ঘটে কিংবা মূর্তি পুজো করা হয়। লক্ষ্মীর কৃপা পেতে এদিন ভুলেও যে যে কাজগুলি করবেন না, সেগুলি একনজরে জেনে নিন…
প্রতি বৃহস্পতিবারই বাঙালির ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজো করা হয়। তবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর গুরুত্ব একটু আলাদা। এদিনের মাহাত্ম্য ও ঐতিহ্য চলে আসছে বহু প্রাচীন কাল ধরে। এ বছর কবে, কখন মহালক্ষ্মীর পুজো হবে, তা আগে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। এবারের কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো পড়েছে ৯ অক্টোবর, রবিবার। বাংলা পঞ্জিকা মতে, লক্ষ্মীপুজো হবে ২২ আশ্বিন, ১৪২৯। পূর্ণিমার শুরু হবে শনিবার রাত ৩ টে ২৯মিনিট থেকে ও সমাপ্ত হবে ৯ অক্টোবর রাত ২টো ২৫ মিনিট পর্যন্ত।
১. এইদিন গঙ্গা স্নান করে নিজেকে শুদ্ধ করলে তা শুভ বলে মনে করা হয়। এদিন পূর্ণিমার সময় রাত জেগে লক্ষ্মীর অপেক্ষায় থাকলে তা শুভ হয়।
২. কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় দেবীমূর্তি বা পটের কাছে ধানের শীষ অবশ্যই রাখবেন। লক্ষ্মীর অত্যন্ত প্রিয় জিনিস কড়ি রাখতে যেন ভুলবেন না যেন।
৩. লক্ষ্মীর প্রিয় ফুল হল তিলের ফুল। তবে এই ফুল বর্তমানে খুব কমই দেখা যায়। তিলের ফুল না পেলে লাল, হলুদ, গোলাপী রঙের ফুল পুজোয় ব্যবহার করতে পারেন। তবে ভুলেও সাদা রঙের ফুল পুজোর সামগ্রীতে দেবেন না।
৪. লক্ষ্মীপুজোয় কখনও তুলসী পাতা ব্যবহার করা যায় না। পৌরাণিক কাহিনি মতে, তুলসীর সঙ্গে শালগ্রাম শিলার বিবাহ হয়। আর এই শালগ্রাম শিলাকে নারায়ণ বলে মনে করা হয়। অন্যদিকে বিষ্ণুর স্ত্রী হলেন লক্ষ্মী, তাই পুজোয় কখনও তুলসী পাতা ব্যবহার করা হয় না।
৫. তবে পূর্ণিমা চলাকালীন গৃহস্থের তুলসী গাছের পুজো করা শুভ বলে মনে করা হয়। হিন্দুধর্মে তুলসী গাছকে পবিত্র বলে মানা হয়। তাই লক্ষ্মীপুজোর শেষে ধূপ ও ফুল দিয়ে পুজো করা উচিত।
৬. এদিনের লক্ষ্মীপুজোয় সাধারণত কাঁসা, স্টিল বা মাটির পাত্র ব্যবহার করা উচিত। ভুলেও লোহার কোনও জিনিস বা পাত্র পুজোর জায়গায় রাখবেন না।
৭. বাড়ির মহিলাদের এদিন সম্মান দিন। কোনও রকম ঝামেলা না করে শান্তি বজায় রাখুন। বাইরেও কোনও ঝগড়া-ঝামেলা করবেন না। কাউকে অসম্মানজনক কথা ও দুর্ব্যবহার করবেন না। তাতে লক্ষ্মী অসন্তুষ্ট হন।
৮. কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় নৈবেদ্য হিসেবে অবশ্যই চালের পায়েস রান্না করে রাখবেন। পায়েস নিবেদন করলে লক্ষ্মী খুব খুশি হোন। তাতে সংসারে শ্রীবৃদ্ধি ঘটে ও আর্থিক কষ্ট দূর হয়।
৯. কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় দেবীকে তুষ্ট করতে লক্ষ্মীর পাঁচালি অবশ্য পাঠ করতে হবে। দেবী লক্ষ্মী স্বভাবে চঞ্চলা। তাই তাঁকে এক জায়গায় স্থির রাখতে নিজের মনকেও স্থির রাখতে হয়।
১০. ভুলেও লক্ষ্মীপুজোয় ঢাক, ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টা বাজাবেন না। শব্দের কারণে লক্ষ্মী বিরক্ত হতে পারেন। চঞ্চলা হলেও শান্তস্বভাবের লক্ষ্মী কাঁসর-ঘণ্টার আওয়াজ সহ্য করতে পারেন না। তাতে রেগে গিয়ে গৃহত্যাগ করতে পারেন।
১১. কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো মানেই ঘরে ও পুজোর জায়গায় বা মন্দিরে আলপনা দেওয়া হয়। তবে তার আগে অবশ্যই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিন। তারপর আলপনা দিয়ে পুজোর প্রস্তুতি নিন। পুজোর নৈবেদ্যতে নারকেল নাড়ু, তিলের নাড়ু, মোয়া, মুড়ির মোয়া, মুড়কি, পায়েস, সন্দেশ, নারকেলের সন্দেশ অবশ্যই রাখবেন।