Kaushiki Amavasya 2021: এই অমাবশ্যায় দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পাপ থেকে মুক্তি মেলে! দেবীমাহাত্ম্য নিয়ে কিছু কথা, যা আপনি জানেন না…

হিন্দুদের বিশ্বাস এই তিথিতে বিশেষ পূজায় অংশ গ্রহন করে দ্বারকা নদীতে স্নান করলে জীবনের সব পাপ থেকে মুক্ত হওয়া যায়।

Kaushiki Amavasya 2021: এই অমাবশ্যায় দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পাপ থেকে মুক্তি মেলে! দেবীমাহাত্ম্য নিয়ে কিছু কথা, যা আপনি জানেন না...
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 07, 2021 | 10:04 AM

সনাতন ধর্মে নয়, বৌদ্ধতন্ত্র সাধনায় এই তিথিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।যুগ যুগ ধরে এই তিথিতে বিশেষ সাধনা করে অসীম শক্তি লাভ করেন শক্তি সাধকরা। শাস্ত্র মতে, কঠিন তন্ত্র সাধনায় সিদ্ধিলাভ করার ক্ষেত্রে এই তিথি সর্বশ্রেষ্ঠ সময়। কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে সর্বাধিক জাঁকজমক ও জনসমাগম লক্ষ্য করা হয় তারাপীঠে। কারণ শাস্ত্র মতে, এই অমাবস্যার আরেক নাম ‘তারা রাত্রি।

কৌশিকী অমাবস্যা

পৌরাণিক কাহিনি জড়িত এই দিনটির সঙ্গে। ভাদ্র মাসের শুরুতেই যে অমাবস্যা সেই অমাবস্যাই কৌশিকী অমাবস্যা নামে পরিচিত। কৌশিকী অমাবস্যার মহাপবিত্র লগ্নে জগৎজননী তারা মায়ের মন্দির তারাপীঠে মূলত, বিশেষ উপাচারে তারা মায়ের পূজা করা হয়৷ আরাধনা চলে। বিশেষ ভোগ নিবেদিত হয়। শ্মশানে চলে তন্ত্রমন্ত্রের বিশেষ যোগ্য। তন্ত্র মতে, এই রাতকে ‘তারা রাত্রি’ও বলা হয়।এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরক দুইয়ের দরজা মুহূর্তের জন্য খোলে ও সাধক নিজের ইচ্ছা মতো ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি সাধনার মধ্যে আত্মস্থ করেন ও সিদ্ধিলাভ করেন।

মাহাত্ম্য

কথিত আছে বামাক্ষ্যাপা এই কৌশিকী অমাবস্যাতে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। বাংলার মাতৃ সাধকদের অন্যতম তারাপীঠের সাধক বামাক্ষ্যাপা, ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সাধক বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ধ্যানমগ্ন বামাক্ষ্য়াপা এদিন তারা মায়ের আবির্ভাব পান। বৌদ্ধ ও হিন্দু তন্ত্রশাস্ত্রে এই অমাবস্যার রাতের এক বিশেষ মাহাত্ম্য আছে।

পৌরাণিক ইতিহাস

কৌশিকী দেবী আসলে তারা মায়েরই আর এক রূপ । মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে,  মহিষাসুরের অত্যাচারে দেবতারা তখন অতিষ্ট।  তখনই দেবতাদের সাহচর্যে দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করলেন৷ মহিষাসুর বধে দেবতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এল। কিন্তু তা বেশিদিন আর রইল না। ফের এক সমস্যা তাঁদের তাড়া করল। কথিত রয়েছে, এবার শুম্ভ-নিশুম্ভের অত্যাচারে ফের দেবতারা ভয়ে পালাতে শুরু করলেন। এরপর দেবতারা পার্বতীর স্মরণাপন্ন হলেন ৷ তখন দেবতাদের রক্ষা করতে মা মহামায়া তাঁর ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করে, এক দেবীমূর্তির জন্ম দিলেন৷ দেবী কৌশিকী অযোনিসম্ভবা ছিলেন, সেই কারণে কৌশিকী দেবীই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে দেবী কৌশিকীর শরীর থেকে হাজারও যোদ্ধৃ মাতৃকাকুল সৃষ্ট হয় এবং তারাই সমগ্র অসুরকুলকে বিনাশ করে দেয়। এই ঘটনাটি ভাদ্র অমাবস্যায় ঘটায়, পরবর্তীকালে এটি কৌশিকী অমাবস্যা নামে খ্যাত হয়।

আদিশক্তির নানা রূপ। তারা হলেন দশ মহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা। কৌশিকী তাঁরই আর এক রূপ।এই কৌশিকী দেবীই শুম্ভ-নিশুম্ভকে বধ করে দেবতাদের মনে শান্তি ফিরিয়ে এনেছিলেন। সেই থেকে কৌশিকী দেবীমাহাত্ম্য বেড়েছে।

হিন্দুদের বিশ্বাস এই তিথিতে বিশেষ পূজায় অংশ গ্রহণ করে দ্বারকা নদীতে স্নান করলে জীবনের সব পাপ থেকে মুক্ত হওয়া যায়। এই দিন সঠিক উপায়ে তন্ত্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মাধ্যমে জীবনের যাবতীয় বাঁধা বিপত্তি কাটিয়ে ওঠা যায়, অতি সহজেই। তাই প্রতিবছর বহু আশা নিয়ে কয়েক হাজার মানুষ কৌশিকী অমাবস্যার দিন ছুটে আসেন তারাপীঠ মন্দিরে, আসেন বহু জ্যোতিষী ও তন্ত্রসাধক।

আরও পড়ুন: Pithori Amavasya: পিথোরি অমাবস্যার এই পবিত্র দিনে কুশা ঘাসের তাৎপর্য সম্পর্কে জানুন!