Vat Purnima 2022: বিবাহিত জীবনে সুখ ও শান্তি আনতে পবিত্র বটবৃক্ষের পুজো করুন, কীভাবে করবেন জানুন…
Banyan Tree: বৈজ্ঞানিক নানা গবেষণাতেও দেখা গিয়েছে বটবৃক্ষের বল্কল, শিকড় এবং ফলের নানা রোগহর ভেষজ গুণ রয়েছে। তাই যুক্তি এবং ভক্তি— উভয় দিক থেকেই বট বৃক্ষের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
সেই প্রাচীনকাল থেকে বটবৃক্ষকে (Banyan Tree) পবিত্র এবং রক্ষাকর্তা হিসেবে মনে করা হয়। বট সাবিত্রী (Savitri Vrat) উপবাসের দিন আরাধনা করা হয় পবিত্র বটবৃক্ষের। সাধারণত বিবাহিত নারীরাই পালন করেন বট সাবিত্রী উপবাস (Vat Purnima 2022। বটবৃক্ষের প্রতি ভক্তিভরে প্রার্থনা করলে তা সংসারে সুখ ও শান্তি আনে। দম্পতির স্বাস্থ্য উন্নত হয়। আয়ু লম্বা হয়। চলতি বছরে আগামী ১৪ জুন দিনটিতে বট সাবিত্রী ব্রতের তিথি পড়েছে। জৈষ্ঠ্য মাসের ওই দিনটিতেই পূর্ণিমা তিথিও বটে। বট সাবিত্রী ব্রতে বটবৃক্ষের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ধর্মীয় উপাখ্যান অনুসারে, সাবিত্রী তাঁর স্বামী সত্যবানের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন বটবৃক্ষের আরাধনা করেই! বটবৃক্ষের নীচেই কঠোর তপস্যায় ব্রতী হয়েছিলেন সাবিত্রী। এই কারণেই যমরাজ তাঁর প্রতি প্রসন্ন হন ও সাবিত্রীকে বর দেন এবং সত্যবানের জীবন ফিরিয়ে দেন।
ধর্মীয় কাহিনি অনুসারে পবিত্র বটবৃক্ষে অধিষ্ঠান করেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। বিষ্ণু থাকেন বল্কলে, ব্রহ্মা মূলে এবং মহাদেব বৃক্ষের ডালে। ফলে এই বৃক্ষ যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, শিবঠাকুর একবার বৃক্ষের তলেই তপস্যায় রত হয়েছিলেন। তাই বট বৃক্ষের দর্শন মানে তা দেবতার দর্শনেরই সমার্থক হয়ে যায়। তাই নানাভাবে বটবৃক্ষের আরাধনা করলে তা জীবনে সুখ এবং শান্তি বয়ে আনে। এমনকী অর্থের অভাব ঘটলে, পূর্ণ ভক্তি নিয়ে বটবৃক্ষের পুজো করলে সেই ঘাটতিও পূরণ হয়।
ধার্মিক গুরুত্ব
ত্রিদেবের অধিষ্ঠান ক্ষেত্রে হওয়ায় প্রতিদিন বটবৃক্ষের পূজা করলে জীবনের সকল বাধা দূরীভূত হয়। বট সাবিত্রী ব্রত এবং উপবাসও তাই বটবৃক্ষের আরাধনার মাধ্যমে জীবনের আশাপূরণ করে। বৈজ্ঞানিক নানা গবেষণাতেও দেখা গিয়েছে বটবৃক্ষের বল্কল, শিকড় এবং ফলের নানা রোগহর ভেষজ গুণ রয়েছে। তাই যুক্তি এবং ভক্তি— উভয় দিক থেকেই বট বৃক্ষের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
ব্রত পালনের সাধারণ কিছু নিয়ম
• উপবাসে থেকে সকালে উঠে স্নান করে লাল শাড়ি পরতে হয়।
• বটবৃক্ষের শিকড়ে জল দিতে হয়। বটবৃক্ষকে প্রদান করতে হয় পিঠে।
• হলুদ ও লাল সুতো দিয়ে বটবৃক্ষের চারিদিকে সাতবার জড়িয়ে দিতে হয়। মনে মনে বলতে হয় ‘যেন সাবিত্রীর মতো হই।’
• সাবিত্রী ব্রতকথা শুনতে হয় ভক্তি সহকারে।
• ব্রাহ্মণ এবং দুঃস্থদের বস্ত্র ও অর্থ দান করতে হয়।
• উপবাস ভঙ্গ করতে হয় সাতটি ভেজানো ছোলা খেয়ে।
সাধারণের আরাধনার নিয়ম
• ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে? প্রতি রবিবারে ঘি দিয়ে একটি প্রদীপ জ্বালান বটবৃক্ষের তলায়।
• পরিবারের প্রত্যেকেরই আনন্দে ও সুখে থাকা উচিত। সবরকম চেষ্টা করার পরেও সকলে নানা কারণে অসুখী থাকলে বুঝতে হবে গৃহে কোনও নেতিবাচক শক্তির প্রভাব চলছে। এক্ষেত্রেও বটবৃক্ষের আরাধনা করুন। প্রণাম করুন। শুভ ফল পাবেন।
• মনের কোনও আশা পূর্ণ হচ্ছে না? সকালে উঠে স্নান করুন। একগাছি সুতো নিন। বটবৃক্ষের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে ওই সুতো জড়িয়ে দিন ও মনে মনে বটবৃক্ষের কাছে বাসনা ব্যক্ত করুন। সুতো বেঁধে দিন। মানস পূরণ হবে নিশ্চয়।
• প্রতিদিন সন্ধেয় ঘি দিয়ে একটি করে প্রদীপ জ্বেলে দিন বটবৃক্ষের নীচে। জীবনের সকল বাধা দূর হবে।
• বটবৃক্ষের নীচে স্থাপিত শিবলিঙ্গের পুজো করলে গৃহে সর্বদা সুখশান্তি বজায় থাকে। সমৃদ্ধি আসে।
• দীর্ঘদিনের অসুস্থতায় কাহিল? এক্ষেত্রে প্রতিদিন বালিশের তলায় বটবৃক্ষের শিকড় রেখে শুলে ব্যাধি থেকে মুক্তি ঘটে।
• বটবৃক্ষের নীচে বসে হনুমান চালিশা পাঠ করলে জীবনের সব বিঘ্ন কাটে। মন থেকে সব ধরনের ভয় দূর হয়।