AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

পৃথিবী সৃষ্টির পরই জন্ম নেয় এই আদিবাসী সমাজ! রয়েছে একটি পৌরানিক কাহিনি

পুরনো ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, উত্তর ভারত থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের ইস্টার আইল্যান্ড অব্দি বিস্তৃত ছিল অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ। আনুমানিক ত্রিশ হাজার বছর আগেই তারা ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়া যায়।

পৃথিবী সৃষ্টির পরই জন্ম নেয় এই আদিবাসী সমাজ! রয়েছে একটি পৌরানিক কাহিনি
| Edited By: | Updated on: Aug 18, 2021 | 6:50 AM
Share

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসের পাতায় সাঁওতাল বিদ্রোহ বা সান্তাল হুল অতিপরিচিত এই ঘটনা। ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ও নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে একজোট হয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল পুরুলিয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠী- সাঁওতাল। সিধু, কানু, চান্দ ও ভৈরবের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এক বছরের মাথায় বিদ্রোহ স্তিমিত হয় বটে। কিন্তু গোটা ভারতের মোহনিদ্রা ভেঙে দিয়ে গেল। জন্ম নেয় অধিকার সচেতনতা। তার দলিল ঠিক পরের বছর থেকেই এই মাটিতে একের পর এক বিদ্রোহ।

পুরনো ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, উত্তর ভারত থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের ইস্টার আইল্যান্ড অব্দি বিস্তৃত ছিল অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ। আনুমানিক ত্রিশ হাজার বছর আগেই তারা ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়া যায়। সেই অস্ট্রিক গোষ্ঠীরই উত্তরাধিকারী বর্তমানের সাঁওতাল উপজাতি। সাঁওত বা সামন্তভূমিতে বাস করার কারণে সাঁওতাল নামে পরিচিত হয়।

ইতিহাস

পৃথিবীর জন্মের আগে সেইসময় শুধু জল আর জলই ছিল। একদিন চন্দ্রের কন্যা স্নান করতে এসে শরীরের ময়লা থেকে সৃষ্টি করলেন দুটি পাখি- হাঁস এবং হাঁসিল। অনেকদিন ভেসে থাকার পর পাখি দুটি ঈশ্বর (ঠাকুরজিউ)-এর কাছে খাবার চাইলো। ফলে ঠাকুরজিউ পৃথিবী সৃষ্টির মনস্থ করলেন। এজন্য যেহেতু মাটির দরকার এবং মাটি সমুদ্রের তলদেশে, তাই বোয়ালকে ডাকা হলো। প্রথমে বোয়াল এবং তারপর কাঁকড়া মাটি আনতে ব্যর্থ হলে এগিয়ে আসলো কেঁচো। কচ্ছপকে পানির উপর ভাসতে বলে কেঁচো নিজের লেজ রাখলো তার পিঠে। তারপর মাটি খেয়ে তা লেজ দিয়ে বের করে কচ্ছপের পিঠে রাখলে জন্ম নিলো পৃথিবী। নরম মাটি শুকানোর জন্য ঠাকুরজিউ পৃথিবীতে ঘাস, শাল ও মহুয়াসহ নানা প্রজাতির বৃক্ষ রোপন করলেন।

কিছুদিন পর মেয়ে পাখিটা দুটি ডিম দিল। নয়মাস দশদিন পর ডিম ফুটে বেরিয়ে এলো একজন পুরুষ ও একজন নারী। এরাই পৃথিবীর প্রথম নরনারী- পিলচু হাড়াম ও পিলচু বুড়ি। হিহিড়ি-পিহিড়ি নামক স্থানে তারা বসবাস করলে লাগল। নাটকীয়ভাবে তাদের সঙ্গম থেকেই জন্ম নেয় সাতটি পুত্র ও আটটি কন্যা। ঠাকুরজিউ এবার পিলচু হাড়ামকে পুত্রদের নিয়ে সিংবীরে এবং পিলচু বুড়িকে কন্যাদের নিয়ে মানবিরে যাবার নির্দেশ দিলেন। আদেশ পালিত হল দ্রুতই। হাড়াম ছেলেদের বারণ করল কখনও মান্বীরে না যেতে৷ বুড়িও কন্যাদের নিষেধ করল সিংবীরে যেতে৷ কিন্ত্ত দৈবক্রমে দেখা হয়ে গেল ভাই বোনদের৷ আত্মপরিচয় না জেনে সাত ভাই বিয়ে করে ফেলল সাত বোনকে৷ উদ্ভব হল সাতটি বংশের- হাঁসদা, মুমু, কিস্কু, হেমব্রম, মারান্ডি, সোরেন ও টুডু৷ কালক্রমে তাদের হল নৈতিক অধঃপতন৷ তারা হয়ে উঠল মনুষ্যত্বহীন, হিংস্র ও আত্মঘাতী৷ সাত দিন ও সাত রাত অবিরাম অগ্নিবৃষ্টিতে ঈশ্বর ধ্বংস করে দিলেন তাদের৷ সৃষ্টি-রক্ষার্থে আবার ডাক পড়ল পিলচু হাড়াম ও পিলচু বুড়ির৷ তাদের সন্তান সন্ততিরা দেবতার কৃপায় সুখে শান্তিতে বাস করতে লাগল চায়চাম্পাতে৷

আরও পড়ুন: অশুভ নাকি কুসংস্কার! কালো বিড়াল কোন দেশে শুভ বলে মানা হয়, জানেন?