News9 Plus world exclusive: ISI প্রধান জাভেদ নাসিরের নির্দেশেই হয়েছিল ১৯৯৩ সালের মুম্বই হামলা, বলছেন মার্কিন অধ্যাপক

1993 Mumbai Blast: জঙ্গি হামলা যে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাভেদ নাসিরের নির্দেশেই হয়েছে, তাতে কোনও সন্দেহের অবকাশ খুঁজে পাচ্ছেন না বিশিষ্ট অধ্যাপক ওয়েন এল সির্স।

News9 Plus world exclusive: ISI প্রধান জাভেদ নাসিরের নির্দেশেই হয়েছিল ১৯৯৩ সালের মুম্বই হামলা, বলছেন মার্কিন অধ্যাপক
অধ্যাপক ওয়েন এল সিরস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 11, 2023 | 10:57 PM

নয়া দিল্লি:  তিন দশক আগের কথা। ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ। একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল মুম্বই নগরী। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। বাণিজ্যনগরীতে তখন শুধু হাহাকার আর আর্তনাদ। আর সেই জঙ্গি হামলা যে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাভেদ নাসিরের নির্দেশেই হয়েছে, তাতে কোনও সন্দেহের অবকাশ খুঁজে পাচ্ছেন না বিশিষ্ট অধ্যাপক ওয়েন এল সির্স। বললেন, ‘আমার মনে কোনও সন্দেহ নেই যে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাভেদ নাসির ১৯৯৩ সালের মুম্বই হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং দাউদ ইব্রাহিমের দলবলকে দিয়ে এটি করানো হয়েছিল। কারণ, জেনারেল নাসিরের ব্যক্তিগত চরিত্র যেমন ছিল, তার সঙ্গে এটাই খাপ খায়।’ তবে শুধু নাসিরের নয়, পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তার যে লক্ষ্যগুলি ছিল, তার সঙ্গেও এটি খাপ খায় বলে মনে করছেন তিনি।

কিন্তু তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ কি মুম্বই হামলার পিছনে আইএসআই-এর এই ভূমিকার কথা জানতেন? সেই বিষয়টি নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা থেকেই গিয়েছে। এর একটি অন্যতম কারণ হল, যাকে ইন্টেলিজেন্স স্টাডিজের গবেষকরা বলে থাকেন যুক্তিগ্রাহ্য কোনও উপায়ে কোনও কথাকে অস্বীকার করা। অর্থাৎ, সোজা কথায় বলতে গেলে, যেহেতু তিনি সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তাই আইএসআই-এর গতিবিধির বিষয়ে তিনি যে অবগত ছিলেন, তা নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। কিন্তু এটি নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ নেই।

প্রফেসর ওয়েন বলছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে, আমি বিশ্বাস করি যে পাকিস্তান বা আইএসআই-এর ক্ষেত্রে খুব বেশি বিদ্রোহী কার্যকলাপ নেই। তাই আমি মনে করি জেনারেল জাভেদ নাসির এই অপারেশনটি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে জানিয়েই করেছিলেন। কারণ, শরিফই তাঁকে পাক গুপ্তচর সংস্থার প্রধান হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। তাই নাসির যদি এমন কোনও বিদ্রোহী ব্যক্তি হতেন, তাহলে শরিফ তাঁকে বেছে নিতেন না।’

নাসিরকে কেন পাকিস্তানের তবলিগি জেনারেল বলা হয়?

পাকিস্তানে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের মধ্যে ক্ষমতার লড়়াইয়ের কথা কারও অজানা নয়। অতীতে বিভিন্ন সময়ে দেখা গিয়েছে সেনা প্রধান নিজের পছন্দমতো গুপ্তচর সংস্থার প্রধানকে বেছে নিতে চেয়েছেন। প্রফেসর ওয়েন বলছেন, ‘আমাকে যে বিষয়টি সবথেকে বেশি অবাক করে, তা হল নাসিরকে আইএসআই প্রধান হিসেবে কোনও সেনাপ্রধান বেছে নেননি। তাকে বেছে নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। নাসিরের চরিত্র সম্পর্কে, তার রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে, তিনি আসলে কোন পথে চলতে চাইছেন, সেই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কতটা জানতেন? গুপ্তচর সংস্থায় নাসিরের কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। তিনি সেনায় একজন ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসার ছিলেন। তার উপর আবার তবলিগি জামাতের স্বঘোষিত সদস্যও ছিলেন।’

প্রফেসর ওয়েনের মতে, সেই সময়ে নাসিরের আমলে আইএসআই-এর কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। জেনারেল নাসির আইএসআইকে এমন একটি জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন যে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী মদত দেওয়া এক রাষ্ট্র হিসেবে দেখা হত। ১৯৯৩ সালের মুম্বই জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তান সরকার সব সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিল বলেই মনে করছেন প্রফেসর ওয়েন। বললেন, ‘২০০৮ সালের মুম্বই জঙ্গি হামলা বা পরবর্তী আরও ঘটনাগুলি এই ১৯৯৩ সালের হামলার থেকেই শুরু হয়েছিল। অনেক কিছুতেই মিল ছিল। পাকিস্তানি অনুপ্রবেশ, স্লিপার সেল ব্যবহার, লুকিয়ে রাখা অস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যবহার হয়েছিল। আমি কখনও পাকিস্তান সরকার, বিশেষ করে আইএসআই এর যোগের কথা উড়িয়ে দিতে পারি না। কারণ, কাশ্মীর নিয়ে ভারতের উপর চাপ তৈরির কৌশলে এই হামলা অনুকূল বলে মনে করছিল পাকিস্তান।’

ওয়েন বলছেন, ‘১৯৯৩ সালে এবং ২০০৮ সালের ঘটনায় একটি প্যাটার্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, যা একটি বৃহত্তর যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে উস্কে দিতে পারত।’

নিউজ৯ প্লাসে দেখুন দ্য জিহাদি জেনারেল:

https://www.news9plus.com/webseries/the-jihadi-general