সাহসী রাহানের জন্য লড়াকু ভারতকে দেখতে পাচ্ছি

বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনের খেলার বিশ্লেষণ, TV9 বাংলা ডিজিটালের জন্য কলম ধরলেন প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়।

সাহসী রাহানের জন্য লড়াকু ভারতকে দেখতে পাচ্ছি
Follow Us:
| Updated on: Dec 26, 2020 | 6:16 PM

শরদিন্দু মুখার্জি

ক্যাপ্টেন একটা টিমের মুখ। ক্যাপ্টেনের মস্তিষ্কের উপর নির্ভর করে একটা টিমের জেতা-হারা। অধিনায়ক যদি সাহসী হয়, অ্যাটাকিং হয়, টিমের পাশে থাকে, বিপক্ষকে ভাঙার অঙ্ক তৈরি রাখে, তা হলে সেই টিমের পারফরম্যান্সে ছাপ পড়তে বাধ্য। মেলবোর্নের প্রথম দিন সাহসী রাহানের জন্য ভারতের মধ্যে সেটাই দেখতে পেলাম। আগের টেস্টেই টিমটা ৩৬ রানে ভেঙে পড়েছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলাটাই ছিল চাপের। মেলবোর্নে রাহানের টিম যেন ওই বিপর্যয়টা ভুলেই মাঠে নেমেছিল। না হলে ওই রকম চমৎকার, চাপহীন পারফর্ম বোলাররা করতে পারত না। অস্ট্রেলিয়াকে ১৯৫ রানে থামিয়ে দেওয়াটা বিরাট কৃতিত্বের। কারণ, লাল বল কিন্তু গোলাপি বলের মতো সারাক্ষণ মুভ করে না। মেলবোর্নের পিচেও জুজু ছিল না। আগেই বলেছিলাম, এই অস্ট্রেলিয়ার দুর্বলতম জায়গা হল ব্যাটিং। ওয়ার্নার না থাকায় শুরু থেকেই রানের গতি তোলার মতো কেউ নেই। যারা আছে, তারা আবার ফর্মে নেই। ফলে টিমটা মার্নাস লাবুসেন আর স্টিভ স্মিথের উপর দাঁড়িয়ে। এই দু’জনকে যদি ফিরিয়ে দেওয়া যায়, অজি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বেই। তাই হয়েছে। লাবুসেনের ৪৮, হেডের ৩৮ বাদ দিলে তো আর কেউ প্রতিরোধই গড়তে পারেনি।

আরও পড়ুন – শুরু থেকেই অজিদের চাপে রাখতে চেয়েছিলেন বুমরারা

অস্ট্রেলিয়াকে ১৯৫-এ বেঁধে ফেলার যাবতীয় কৃতিত্ব কিন্তু ভারতীয় বোলারদের। রাহানের টিম নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিল। মেলবোর্নের পিচে সকালে আর্দ্রতা ছিল। সেটা কাজে লাগানোর জন্য অশ্বিনকে আগেই আক্রমণে নিয়ে চলে এসেছিল রাহানে। একদম ঠিক স্ট্র্যাটেজি। এবং স্মিথের জন্য একটা লেগ স্লিপ রাখা। অশ্বিনের বল যদি টার্নে করে, লাফায়, আর সেটা যদি স্মিথ খেলে, ওখানেই ক্যাচ যাবে বলে। হল তো তাই! লাবুসেনের কিংবা হেডের আউটটাও ওই রকম পরিকল্পনামাফিক ছিল। হেডকে পর পর তিনটে বল ভিতরে খেলাল বুমরা, একটা বাইরে নিয়ে গেল, সেটাতেই উইকেট। তরুণ সিরাজের বলে লাবুসেন লেগ গালিতে ক্যাচ দিয়ে আউট হল ওই কারণেই।

আরও পড়ুন – অভিষেকেই নজর কাড়লেন সিরাজ-শুভমন

বুমরার ৪ উইকেট, অশ্বিনের ৩, সিরাজের ২-এর মধ্যে পরিকল্পনার পাশাপাশি যেটা ছিল, সেটা হল ফিরে আসার তাগিদ। এটা দরকার পড়ে। বিরাট নেই, সামি চোটে ছিটকে গিয়েছে। তার পরও একটা টিম টপক্লাস পারফর্ম করছে, এমনটা কিন্তু অতীতে খুব একটা দেখিনি। আসলে সেরা একটা টিম হারলে প্লেয়ারদের মধ্যে জ্বালাবোধটা বেড়ে যায়। বুমরা-অশ্বিনদের মধ্যে সেটাই দেখতে পেয়েছি। দিনের শেষে ভারত ৩৬-১। মায়াঙ্ক আগরওয়াল (০) ফিরে গিয়েছে। ক্রিজে শুভমন গিলের সঙ্গে চেতেশ্বর পূজারা। শুভমনের ফ্লো দেখে মনে হচ্ছে একটা বড় রান করে দেবে। কাল সকালটা যদি দেখে খেলে দিতে পারে। তবে পূজারাকে আরও অ্যাটাকিং হতে হবে। আমার মনে হচ্ছে, ভারত যদি ১৫০ রানের লিড নিতে পারে প্রথম ইনিংসে, তা হলে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ম্যাচ হারের আতঙ্ক তৈরি হবে।

মেলবোর্নের স্কোর: অস্ট্রেলিয়া ১৯৫ (লাবুসেন ৪৮, হেড ৩৮, ওয়েড ৩০, বুমরা ৪-৫৬, অশ্বিন ৩-৩৫, সিরাজ ২-৪০, জাডেজা ১-১৫)। ভারত ৩৬-১ (শুভমন ব্যাটিং ২৮, পূজারা ব্যাটিং ৭, স্টার্ক ১-১৪)।