IPL 2021: সিএসকেকে পুরনো ছন্দে ফেরাচ্ছে ডি-ফ্যাক্টর

সব ছাপিয়ে গিয়ে এই আইপিএলও আর একবার ধোনিতে মুগ্ধ। ফিনিশার ধোনির দেখা এখনও পাওয়া যায়নি। বড় রানের ইনিংসও খেলেননি তিনি। তবু, ধোনির উপস্থিতি এখনও অনেক কিছু পাল্টে দিতে পারে। পাঁচমাস আগের আর পাঁচমাস পরের সিএসকের থেকে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে!

IPL 2021: সিএসকেকে পুরনো ছন্দে ফেরাচ্ছে ডি-ফ্যাক্টর
ছবি-টুইটার
Follow Us:
| Updated on: Apr 29, 2021 | 8:20 AM

অভিষেক সেনগুপ্ত

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৭১/৩ (২০ ওভারে) চেন্নাই সুপার কিংস ১৭৩/৩ (১৮.৩ ওভারে)

ক্রিকেট সার্কিটে বলা হয়, ধোনি যা বলেন, তাই করে দেখান! আমিরশাহির আইপিএলে বিপর্যয়ের পর সিএসকের ক্যাপ্টেন বলেছিলেন, ‘পরের আইপিএলটা অন্য ভাবে শুরু করতে চাই।’ ধোনি তখন সমালোচনায় বিদ্ধ। দেশের হয়ে সদ্য অবসর নিয়েছেন। চরম খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার উপর ব্যাটেও রান ছিল না। ধোনির বলা কথাগুলো তখন কি কেউ শুনেছিলেন? কেউ শুনুন আর নাই শুনুন, ধোনি বোধহয় আইপিএল ১৪-র প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন আমিরশাহি থেকেই। না হলে পাঁচ মাস পর বদলে যাওয়া চেন্নাই সুপার কিংসকে দেখা যেত না।

জেতার জন্য একটা টিমের কী কী লাগে? আত্মবিশ্বাস, দায়বদ্ধতা, ফর্ম, তাগিদ, জেতার খিদে আর টিমগেম। সিএসকে-র ক্ষেত্রে আর একটা জিনিস থাকে, ডি-ফ্যাক্টর। যেখানে ধোনিই আত্মবিশ্বাস দেন, দায়বদ্ধ করে তোলেন সতীর্থদের, ফর্মে ফেরান, আস্থা রাখেন টিমে, সতীর্থদের উপর। ক্যাপ্টেন ধোনি না থাকলে হয়তো অতীতের জেল্লা ফিরত না চেন্নাইয়ে। ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের কথাই ধরা যাক। শুরুতে ছন্দে ছিলেন না। কিন্তু ধোনি আস্থা রেখেছিলেন তরুণ ওপেনারের উপর। এখন প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান দিচ্ছেন টিমকে। বুধবারও হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৭৫ রানের ইনিংস খেলে গেলেন। সুরেশ রায়না, রবীন্দ্র জাডেজা, ফাফ দু প্লেসি, মইন আলি— ধোনি-ফ্যাক্টর কাজ করেছে সবার ক্ষেত্রে। তাই যে-ই নামছেন টিমের হয়ে, নিজের সেরাটা দিয়ে যাচ্ছেন।

প্রথম ম্যাচে হার দিয়ে শুরু করেছিল চেন্নাই। পরের ৫টা ম্যাচ পর পর জয়। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের মগডালে থাকল মহেন্দ্র সিং ধোনির টিম। বুধবার ফিরোজ শাহ কোটলায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ১৭১/৩-র জবাবে ৯ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ শেষ করল ধোনিরা (১৭৩/৩)।

শুরুটা অবশ্য অন্যরকমই মনে হচ্ছিল। যেমন প্রতি ম্যাচে হায়দরাবাদকে দেখে মনে হয়, এবার ঠিক জিতবেন ওয়ার্নাররা। মণীশ পাণ্ডে (৬১) আর ওয়ার্নার (৫৭) হাফসেঞ্চুরি করে টিমকে এগিয়ে নিয়ে দিয়েছিলেন কিছুটা। শেষ দিকে কেন উইলিয়ামসন ১০ বলে নট আউট ২৬ না করলে হয়তো ১৭১/৩-এ পৌঁছত না টিম। দিল্লির ফিরোজ শা কোটলায় জিততে হলে অন্তত ২০০ রান দরকার। না হলে বোলাররা লড়াই-ই করতে পারবেন না। হায়দরাবাদের একমাত্র রশিদ খান ৩টে উইকেট না নিলে আরও আগে জিতে যেত চেন্নাই। ১৭২ রানের টার্গেট সামনে রেখে রান করতে নামা চেন্নাইয়ের কাজটা অনেকটাই সহজ করে দিলেন দুই ওপেনার ঋতুরাজ আর দু প্লেসি। ঋতুরাজ ৭৫ করলেন, দু প্লেসির ৫৬। এবারের এই আইপিএল যেমন বোলারদের, তেমনই ওপেনারদেরও। যে টিমের ওপেনাররা শুরুটা ভালো দিয়ে যাচ্ছেন, সেই টিম সাফল্য পাচ্ছে। দিল্লির শিখর, পৃথ্বী যেমন, আরসিবির দেবদত্ত পাড়িক্কাল, চেন্নাইয়ের ঋতুরাজ-দু প্লেসি তেমন।

আরও পড়ুন:করোনা জটে এ বার নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা

সব ছাপিয়ে গিয়ে এই আইপিএলও আর একবার ধোনিতে মুগ্ধ। ফিনিশার ধোনির দেখা এখনও পাওয়া যায়নি। বড় রানের ইনিংসও খেলেননি তিনি। তবু, ধোনির উপস্থিতি এখনও অনেক কিছু পাল্টে দিতে পারে। পাঁচমাস আগের আর পাঁচমাস পরের সিএসকের থেকে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে!

আইপিএলে ৫০তম পঞ্চাশ করলেন ওয়ার্নার। আইপিএলে এমন রেকর্ড আর কারও নেই। কিন্তু ওয়ার্নার চেনা ছন্দের ধারেকাছে নেই। সংক্ষিপ্ত স্কোর: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৭১/৩ (মণীশ ৬১, ওয়ার্নার ৫৭, উইলিয়ামসন নট আউট ২৬, লুঙ্গি ২/৩৫, স্যাম ১/৩০)। চেন্নাই সুপার কিংস ১৭৩/৩ (ঋতুরাজ ৭৫, দু প্লেসি ৫৬, রায়না নট আউট ১৭, রশিদ ৩/৩৬)।