Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

MS Dhoni, CSK : মধ্যরাতেও ইডেন ডুবে রইল মাহিমোহে!

Kolkata Knight Riders vs Chennai Super Kings : এ সব ধোনির থেকে ভালো আর কে জানেন। জানেন বলেই মধ্য রবিরাতে গ্যালারির উদ্দেশে হাত দেখালেন মাহি। ভরসার হাত। বলে গেলেন হয়তো, 'আমি আছি, ক্রিকেটে, তোমাদের কাছে!'

MS Dhoni, CSK : মধ্যরাতেও ইডেন ডুবে রইল মাহিমোহে!
Image Credit source: IPL
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 24, 2023 | 1:46 AM

অভিষেক সেনগুপ্ত

বাঁ হাঁটুর চোটটা কি সারবে না? নীল রংয়ের লোয়ারের উপর হলুদ টি-শার্ট পরে নামলেন তিনি। সেই ধীর হাঁটা। উত্তাপহীন। যেন অনন্ত সময়ের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন! যে সময় শুধু তাঁরই অপেক্ষায়। পুল ব্যান্ড নিয়ে গা ঘামালেন। খানিক আশঙ্কা তখন, খেলবেন তো? ইডেন এ সবে পাত্তাই দিল না। হলুদ সর্ষে ক্ষেতের মতো অসংখ্য মাথা আন্দোলিত হচ্ছে তখন। কে বলবে, বেগুনি রঙ পেটেন্ট নিয়ে রেখেছে গ্যালারির! যেন ‘থালা’য় চিপক সাজিয়েছে ইডেন! নাকি, ইডেনের ‘গায়ে হলুদ’ বলা উচিত? এই অন্তিম সন্ধে শুধু তাঁর! এতদিন আইপিএল হচ্ছে, গনগনে দুপুর কবে শুঁকেছে ক্রিকেটের গন্ধ? সন্ধের গায়ে বিকেল ঢলে না পড়লে বিনোদনের আঁচ কে কবে নিয়েছে? এই রবিবার ব্যতিক্রমী। এই রবিবার অচেনা। এই রবিবার বিষাদগ্রস্থ! আকুতিতে বিয়াল্লিশের সেই চেনা ‘তরুণ’! সাত নম্বর জার্সি। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।

ইডেন কখনও প্রতিবাদী, কখনও প্রেমিক। কখনও অভিমানী, বিস্ফোরক, আবেগতাড়িত। ‘নো মুস্তাক নো টেস্ট’ স্লোগান তুলেছে। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের হার দেখে গ্যালারিতে আগুন জ্বালিয়েছে। সচিন তেন্ডুলকরের ১৯৯তম টেস্ট দেখার জন্য উপচে পড়েছে গ্যালারি। এই ইডেন শেখাল, কী ভাবে সাজাতে হয় নায়কের বিদায়ী মঞ্চ। ইডেন সেই প্রথম বল থেকে চেঁচাচ্ছে, উই ওয়ান্ট ধোনি… উই ওয়ান্ট ধোনি। সত্তর হাজারি গ্যালারি মোবাইল টর্চ জ্বালাল তিনি মাঠে নামতেই। জোনাকির লেজার শো দেখতে দেখতে বাইশ গজের দিকে এগোলেন। হাতে মাত্র দুটো ডেলিভারি। প্রথম বল নো। দ্বিতীয় বল ফ্রি হিট এবং মিস। সব বলে চার-ছয় হয় না, মহেন্দ্র সিং ধোনি জানেন। নো, ফ্রি হিট পেলেও হয় না। তবু রানের খাতায় রেখে যেতে হয় ছাপ। বরাবরের মতো। শেষ বলে খাতা সচল ২ রান।

আমি বিহার থেকে এসেছি। আমি ওড়িশা থেকে। আমার বাড়ি আসামে। ঝাড়খণ্ড থেকে সাতসকালে নেমেছি। এঁকেবেঁকে চলে যাওয়া লম্বা লাইন হোক, বটতলা ঘিরে ছোট ছোট জমায়েত, ধোনিমোহে একাকার। যেন পূর্বাঞ্চল জোট বেঁধেছে গঙ্গাপারে। ভিনরাজ্যের পাশে কোচবিহার, মালদা, শিলিগুড়ি, আসানসোল, বর্ধমান যেন মানিকতলা, টালিগঞ্জ, ভবানীপুর, সিঁথিমোড়। এত টান? বলতে পারবে সেই ছেলেটা, যে নিয়ে এসেছিল ‘ডিয়ার মাহি টেক মাই লাইফ অ্যান্ড প্লে হান্ড্রেড ইয়ার্স মোর’, প্ল্যাকার্ড। অবাক হবেন না। হারিয়ে যাওয়া, ফুরিয়ে যাওয়া বিধ্বস্ত কোনও ক্রিকেটার যদি ফিরে পেতে চান নিজেকে, তিনিও নিশ্চিত ভাবেই ধোনিকে বাছবেন। কেন? ফর্মে ফেরা অজিঙ্ক রাহানেই উত্তর দেবেন।

MSD SPECIAL COPY INSIDE

বিয়াল্লিশে ব্যাট করা যায়। বল করা যায়। কিন্তু কিপিং। একমাত্র ধোনি পারেন। দস্তানার সঙ্গে ‘দোস্তানা’ এই বয়সেও। আসলে তিনি আছেন। তাঁর মতো, প্রাসঙ্গিক। হাঁটু ইদানীং কথা শুনছে না। কোমরের হাল ভালো নয়। তবু টেনে যাচ্ছেন ধোনি। চেন্নাইয়ের কপালে আরও একবার বসন্ত তিলক পরাবেন বলে! ক্রিকেটে বড় ক্লিশে শব্দ— থামতে জানতে হয়। এই বন্ধনীর বাইরে ছিলেন সচিন। ধোনিরও যেন ইচ্ছামৃত্যু। খেলবেন বলে খেলছেন না। আসলে ক্রিকেট ছাড়ছে না তার প্রিয় ছাত্রকে। না হলে বোধহয় খেলাটারই ক্যারিশমা কমে যাবে! ওই যে উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে চোখ বুজে রিভিউ নেন, উড়ে গিয়ে অবলীলায় ধরেন ক্যাচ, টিমকে অতিসাধারণ দিনেও জয় উপহার দেন, এ সব তো আর মিলবে না। ট্রফি, রান, ক্যাচ, সাফল্য সব অতীত হয়ে যাবে। শুধু থেকে যাবে রাঁচির এক ছেলের অমর গল্প।

এ সব ধোনির থেকে ভালো আর কে জানেন। জানেন বলেই মধ্য রবিরাতে গ্যালারির উদ্দেশে হাত দেখালেন মাহি। ভরসার হাত। বলে গেলেন হয়তো, ‘আমি আছি, ক্রিকেটে, তোমাদের কাছে!’