সচিনের মতোই কভার আর স্ট্রেট ড্রাইভ পছন্দ ৫ বছরের বিস্ময়বালকের
বছর দুয়েক আগে টুইটারে একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। তিন পেরনো এক শিশুর সাবলীয় ব্যাটিং রীতিমতো চমকে দিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বকে। ফক্স ক্রিকেট ওই ভিডিও রি-টুইট করে তাতে ট্যাগ করে দিয়েছিল সচিন তেন্জুলকর, মাইকলেন ভন এবং সদ্য প্রয়াত শেন ওয়ার্নদের মতো প্রাক্তনদের। এক কথায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেছিলেন সবাই। শুধু সচিন তাতে থেমে থাকেননি। মুম্বইয়ে তাঁর অ্যাকাডেমিতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন শাহিদকে।
সৌভিক সরকার
কভার আর স্ট্রেট ড্রাইভ পছন্দ তার। ঠিক যেমন তার গুরু ভালোবাসতেন। টি-টোয়েন্টির যুগেও সিঙ্গলসই বেশি পছন্দ। আর চার কিংবা ছয়? গালে হাত দিয়ে ৫ বছরের বালক একটু ভেবে বলল, ‘ছয়, হ্যাঁ, ছয় মারতেই বেশি ভালো লাগে।’ এক জোড়া প্যাড প্রায় কোমর ছুঁয়ে ফেলেছে। হাতের গ্লাভস কোনও রকমে আঁকড়ে রেখেছে তার কবজি। তবু চড়া রোদে ছাতে চলছে তার অনুশীলন। কারণ, ক্রিকেট তার নেশা। আর জাতীয় টিমের নীল রংয়ের জার্সি তার লক্ষ্য। বয়স যতই কম হোক সরশুনার এই শেখ শাহিদই এখন ভারতীয় ক্রিকেটের শিরোনামে।
বেহালার বীরেন রায় রোড থেকে সরশুনা খুব দূর নয়। এক সময় এই বীরেন রায় রোড থেকে উঠে এসে ভারতীয় ক্রিকেট শাসন করেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। সেই বেহালারই আর এক বিস্ময় প্রতিভাও সে স্বপ্ন দেখছে। হোক না শাহিদের পাঁচ বছর বয়স, সচিন তেন্ডুলকরকে (Sachin Tendulkar) যে পাশে পেয়ে গিয়েছে! সচিনের কথা শুনে ছোট্ট শাহিদের দু’চোখ ঝিকিয়ে উঠল। থেমে থেমে সে বলল, ‘সচিন স্যারের অ্যাকাডেমিতে প্র্যাক্টিস করে এসেছি। স্যার যে ভাবে বলেছেন, সে ভাবেই এগোতে চাই।’
বছর দুয়েক আগে টুইটারে একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। তিন পেরনো এক শিশুর সাবলীয় ব্যাটিং রীতিমতো চমকে দিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বকে। ফক্স ক্রিকেট ওই ভিডিও রি-টুইট করে তাতে ট্যাগ করে দিয়েছিল সচিন তেন্জুলকর, মাইকলেন ভন এবং সদ্য প্রয়াত শেন ওয়ার্নদের মতো প্রাক্তনদের। এক কথায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেছিলেন সবাই। শুধু সচিন তাতে থেমে থাকেননি। মুম্বইয়ে তাঁর অ্যাকাডেমিতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন শাহিদকে। বাবা-মার সঙ্গে শাহিদের যাওয়া, থাকা, খাওয়ার যাবতীয় খরচ দিয়েছিলেন সচিনই। পাঁচ দিনের ট্রেনিংয়ে কী কী করতে হবে, তাই দেখিয়ে ও শিখিয়ে দিয়েছেন সচিন।
শাহিদের বাবা সামশের বলছিলেন, ‘শাহিদের ওই ভিডিওটা ভাইরাল হওয়ার পর সব ভুলেই গিয়েছিলাম। হঠাৎ একদিন মুম্বই থেকে একজন ফোন করে বললেন, আমি সচিন তেন্ডুলকরের ম্যানেজার বলছি। সচিন চান, আপনার ছেলে মুম্বইয়ে ওঁর অ্যাকাডেমিতে এসে ট্রেনিং করুক। এতটা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম যে, কথা বলতে সময় লেগেছিল। তার পর একদিন আবার ফোন করে যাওয়া-আসার দিন জানানো হয়। যাবতীয় ভার নিয়েছিলেন সচিন স্যার। ওঁর মতো কেউ পাশে থাকলে শাহিদের এগোতে অসুবিধা হবে না।’
সচিন কী পরামর্শ দিলেন শাহিদকে? সমশেরের কথায়, ‘সচিন স্যার বলেছেন, শাহিদের প্রতিভা আছে। তবে ওকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। উনি সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা চাই, শাহিদ যেন জাতীয় টিমের হয়ে খেলতে পারে।’
শাহিদও তা-ই চাই। আর তাই, কভার ও স্ট্রেট ড্রাইভকে আরও নিখুঁত করার জন্য দিনের পর দিন প্র্যাক্টিস করে চলেছে বেহালার সরশুনার পাঁচ বছরের ছেলে।