চুক্তিতে সই করবে না ইস্টবেঙ্গল, সিদ্ধান্ত শুনে হরিমোহন, ‘সই না করলে কিছু যায় আসে না’
যা শুনে দুবাই (Dubai) থেকে শ্রী সিমেন্টের (Shree Cement) কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর (Harimohan Bangur) বলে দিলেন, 'সই না করলে করবে না, তাতে কী এল-গেল। আমি ফুটবলে বিনিয়োগ করতে চাই বলেই এগিয়ে এসেছিলাম। এর মধ্যে কোথাও কোনও চাপের ব্যাপার নেই। ওরা সই না করলে সম্পর্ক থাকবে শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে। তবে আমি এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কিছু জানি না।'
কলকাতা: ইনভেস্টর-ইস্টবেঙ্গল কিসসায় নয়া মোড়। চাপের সামনে কোনও ভাবেই নতিস্বীকার নয়। শ্রী সিমেন্টের চুক্তিপত্রে সই করবে ইস্টবেঙ্গল। পরিষ্কার জানিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল। আর যদি করা হয়, প্রয়োজনে পদত্যাগ করবে লাল-হলুদের কার্যকরী কমিটির সদস্যরা। যা শুনে দুবাই (Dubai) থেকে শ্রী সিমেন্টের (Shree Cement) কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর (Harimohan Bangur) বলে দিলেন, ‘সই না করলে করবে না, তাতে কী এল-গেল। আমি ফুটবলে বিনিয়োগ করতে চাই বলেই এগিয়ে এসেছিলাম। এর মধ্যে কোথাও কোনও চাপের ব্যাপার নেই। ওরা সই না করলে সম্পর্ক থাকবে শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে। তবে আমি এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কিছু জানি না।’
আরও পড়ুন: চুক্তি বিতর্কে জট পাকিয়ে আইএসএল থেকে দূরে সরছে ইস্টবেঙ্গল
চিঠি, পাল্টা চিঠি চালাচালি চলছিল কয়েক দিন ধরেই। শ্রী সিমেন্টের কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর স্পষ্ট ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে। চুক্তিপত্রে সই না করে কেন কর্তারা পুরো ব্যাপারটাকে ঝুলিয়ে রাখছেন, তা নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, অনতিবিলম্বে যদি ক্লাব চুক্তিপত্রে সই না করে, তা হলে ইনভেস্টর হিসেবে তাঁরা আর থাকবেন না। শ্রী সিমেন্টের চিঠি পাওয়ার পর আইনজীবীদের সঙ্গে নতুন করে কথা বলতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু টার্ম শিটে যে শর্তাবলী রাখা হয়েছিল, তা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। মঙ্গলবার কার্যকরী সমিতির সভায় চুক্তির শর্ত নিয়ে আলোচনা করা হয়। তার পরই সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, চুক্তিপত্রে সই করবে ক্লাব। শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, ‘কোনও কোম্পানির চাপের সামনে ক্লাব নতিস্বীকার করবে না কোনও ভাবেই। আর এ ক্ষেত্রে ক্লাবের কার্যকরী সমিতির সিদ্ধান্তই শেষ কথা।’ ঘটনা হল, চুক্তিপত্রে যে সব শর্তাবলী দেওয়া আছে, সেই অনুযায়ী ক্লাব পরিচালনার পুরো ভারই তুলে দিতে হবে ইনভেস্টারের হাতে। স্পোর্টিং সংক্রান্ত ব্যাপার তো বটেই, রোজকার ক্লাব চালাতে গেলেও শ্রী সিমেন্টের অনুমতি লাগবে ক্লাবের। যা নিয়েই চাপানউতোড় শুরু। শ্রী সিমেন্টের তরফে একটা ব্যাপার পরিষ্কার, কোয়েসের মতো কোনও ভুল তাঁরা করতে চাইছেন না। ফুটবল টিম চালাতে গেলে ক্লাবের পরিচালন ক্ষমতাও যে হাতে রাখতে হবে, তা ভালোই বুঝতে পেরেছেন শুরু থেকে। সেই কারণেই টার্ম শিটে এই শর্ত রাখা হয়েছে। শুধু এটাই নয়, টিভি নাইনের হাতে যে টার্ম শিট এসে পৌঁছেছে, তা খতিয়ে দেখা যাচ্ছে, ক্লাবের যাবতীয় সম্পত্তি চলে যাবে কোয়েসের হাতে। যা মানতে নারাজ ক্লাবের কর্তারা। শুধু তাই নয়, ২০ শতাংশের কম শেয়ারেও চুক্তি করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরী সমিতির এই মনোভাবকে সমর্থন করেছেন সচিব কল্যাণ মজুমদারও। লাল-হলুদের কার্যকরীর সমিতির সদস্য সৈকত্ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ কার্যকরী কমিটির সভায় পুরো ব্যাপারটা নিয়ে নতুন করে আলোচনা করা হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। তার পরই ঠিক করা হয়েছে, কোনও ভাবেই ক্লাব সই করবে না চুক্তিপত্রে। ক্লাবের সচিব সমিতির সদস্যদের মনোভাবকে সম্মান জানিয়েছেন।’ যা পরিস্থিতি, তাতে ইনভেস্টর-ইস্টবেঙ্গল জট খোলা তো দূরের কথা, তা আরও জটিল হয়ে উঠছে।