EURO FINAL 2021 :’প্রতিবার শুধু ১ সেন্টিমিটার করে এগোও’, মানচিনির দর্শনেই বদলে গিয়েছে ইতালি
CHAMPION ITALY : চিয়েল্লিনি জানান, "প্রথমে যখন কোচ এসে আমাদের বলেন,তোমরা সবাই নিজেদের মানসিকভাবে প্রস্তুত কর। ইউরো চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। শুনে আমরা বলাবলি শুরু করেছিলাম, কোচ কি পাগল নাকি? কিন্তু মাঝের এই ৩ বছরে ধীরে ধীরে সেটাই আমাদের মানসিকতায় ঢুকিয়ে দিলেন কোচ। যারজন্য আমরা আজ এই জায়গায়।"
লন্ডনঃ ম্যানচেস্টার সিটির যখন কোচ ছিলেন রবার্তো মানচিনি,তখন তাঁর একটা মন্তব্য ছিল বেশ জনপ্রিয়। মানচিনি প্রায়ই বলতেন, “আমি সবসময় ১-০ গোলে জিততে পছন্দ করি। যদি তুমি গোল না খাও, আর তোমার দলে ডেকো, কার্লোস তেভেজ আর ডেভিড সিলভার মত ফুটবলার থাকে, তবে সেই দলের জয়ের সম্ভাবনা ৯০%।প্রয়োজনে ২ বা ৩ ম্যাচ বোরিং ফুটবল খেলি। কিচ্ছি যায় আসেনা। আমার ১-০ গোলে জিতলেই হবে।” কখনই দৃষ্টি নন্দন ফুটবলের কথা ভাবেননি মানচিনি। বরং জিততে গেলে প্রয়োজন এফেক্টিভ ফুটবল। সেই স্ট্র্যাটেজিকেই জপ করেছেন ইতালির ইউরোজয়ী কোচ।
২০১৮ সালে যখন বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে না পেরে বিমর্ষ ইতালি ফুটবল, তখনই দায়িত্ব দেওয়া হল মানচিনিকে। কঠিন সময়ে দায়িত্ব। ফুটবলাররা যেন ভুলেই গিয়েছেন সাফল্য কিভাবে আনতে হয়। মানচিনি দলের সঙ্গে যোগ দিয়েই বুঝেছিলেন, এই ইতালি কুঁকড়ে গিয়েছে। যাঁদের ফুটবলের স্ট্র্যাটেজি বোঝানোর আগে প্রয়োজন মানসিকভাবে চাঙ্গা করা। আর ঠিক সেই পথেই হাঁটা শুরু করলেন আজকের ইউরোজয়ী কোচ। ২০১৮ সালে দায়িত্ব নিয়েই চিয়েল্লিনি-বোনুচ্চিদের প্রথম যে কথা বলেন তা হল, আমাদের ২০২০ সালে ইউরো কাপে চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। কোচের এই মন্তব্য শুনে ফুটবলাররা হতবাক! এ কোচ বলে কি! বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি, ইনি ইউরো জয়ের কথা বলছেন?
অধিনায়ক চিয়েল্লিনি কয়েকদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে সেই কথা প্রকাশ্যেও এনেছেন। চিয়েল্লিনি জানান, “প্রথমে যখন কোচ এসে আমাদের বলেন,তোমরা সবাই নিজেদের মানসিকভাবে প্রস্তুত কর। ইউরো চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। শুনে আমরা বলাবলি শুরু করেছিলাম, কোচ কি পাগল নাকি? কিন্তু মাঝের এই ৩ বছরে ধীরে ধীরে সেটাই আমাদের মানসিকতায় ঢুকিয়ে দিলেন কোচ। যারজন্য আমরা আজ এই জায়গায়।”
চিয়েল্লিনির মন্তব্যেই স্পষ্ট, মানচিনির কোচিং দর্শনের ভঙ্গিটা। ফাইনালের আগে উয়েফাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চিয়েল্লিনি জানান কোচের দর্শনের কথা। চিয়েল্লিনি জানান, ” ইউরো কাপের প্রতি ম্যাচের পর কোচ বলেন, সবসময় একবার ১ সেন্টিমিটার এগোনোর কথা ভাবো। তারপরের ম্যাচে আরও ১ সেন্টিমিটার এগোবে।এইভাবে এগোবে। আর স্বপ্নপূরণের জন্য আমাদের বাকি আর ১ সেন্টিমিটার।”
সেই ১ সেন্টমিটার পথও পেরিয়ে এলেন মানচিনি। ইংল্যান্ডকে ঘরের মাঠে হারিয়ে তৈরি করলেন ইতিহাস। যেই ইতিহাস বলবে, এই মানচিনিই বদলে দিয়েছিল ভাঙাচোরা এক ইতালিকে। সেই ইতালি যারা জিততে পারে এই বিশ্বাসটাই চলে গদিয়েছিল। আর এখন সেই ইতালিই স্বপ্ন দেখছে আগামি বছর বিশ্বকাপটাও ঘরে তুলতে। ২০০৬ সালে ক্যানাভারোদের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর।