লজ্জার হার থেকে বাঁচাল গুরপ্রীতের দস্তানা

ম্যাচের মাত্র ৯ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন রাহুল ভেকে। ম্যাচের ১৭ মিনিটে বল হাতে লাগায় ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় রাহুল ভেকে-কে। একেই প্রতিপক্ষে শক্তিশালী কাতার। তার উপর ১০জন হয়ে যাওয়া দল। গোল আটকানোর লড়াই শুরু ভারতের।

লজ্জার হার থেকে বাঁচাল গুরপ্রীতের দস্তানা
এভাবেই কাতারের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়ল ভারতীয় ডিফেন্স
Follow Us:
| Updated on: Jun 04, 2021 | 2:21 AM

                                                          ভারত – কাতার

                                                               ০   –  ১   (আব্দুল আজিজ ৩৩’)

দোহাঃ  স্কোরলাইন যদি হত, কাতার ৫-০ বা ৬-০ গোলে হারাল ভারতকে(INDIA), তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকত না। কিন্তু সেই লজ্জা থেকে ভারতকে বাঁচাল গুরপ্রীত সিং সান্ধুর (GURPREET SINGH SANDHU)চওড়া দস্তানা। তিনকাঠির তলায় অতন্দ্র প্রহরীর মত একের পর এক আক্রমণের ঝড় ঠান্ডা মাথায় সেভ করে যাওয়া। যার ফল ম্যাচের মাত্র ১৭ মিনিটে ১০জন হয়ে যাওয়া ভারত বাঁচল লজ্জার হার থেকে।

আগামি বছর নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এখানেই বসার কথা বিশ্বকাপ (WORLD CUP)ফুটবলের আসর। বৃহস্পতিবার ভারতের প্রতিপক্ষ যারা, সেই কাতার (QATAR) প্রথমবার নামবে বিশ্বকাপের মত সেরার সেরা মঞ্চে। যার প্রস্তুতি গত প্রায় ৭ বছরে জোরকদমে চলছে। গত ২ বছরে এশীয় ফুটবলের বড় শক্তি হয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া কাতার ফুটবল দল। এদিন ভারতের বিরুদ্ধে যার ইঙ্গিত পাওয়া গেল ম্যাচের প্রথম বাঁশি বাজার পর থেকেই। কাতারের বক্সে হাতে গোনা ভারতের আক্রমণ। শুরু থেকেই ম্যাচ যেন হচ্ছিল ভারতের বক্সের আশেপাশেই। অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী এদিন ছিলেন বেশ নিষ্প্রভ। হবেন নাই বা কেন! কাতারের শক্তিশালী মাঝামাঠের ব্লকিং টপকে বিপিন সিং, গ্ল্যান মার্টিন্সদের কোনও নিঁখুত পাসই এসে জমা পড়েনি সুনীল (SUNIL CHETRI) বা মনবীরের পায়ে। ফল অনেক নীচে থেকে লড়াইয়ের একটা প্রচেষ্টা শুরু করলেন সুনীল ছেত্রী। তবে কাজ হল না। এর মধ্যেই ঘটল ভারতের বিপদ।

ম্যাচের মাত্র ৯ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন রাহুল ভেকে। ম্যাচের ১৭ মিনিটে বল হাতে লাগায় ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় রাহুল ভেকে-কে। একেই প্রতিপক্ষে শক্তিশালী কাতার। তার উপর ১০জন হয়ে যাওয়া দল। গোল আটকানোর লড়াই শুরু ভারতের। আক্রমণ ভুলে। স্টিমাচের স্ট্র্যাটেজি তখন, আগে নিজের গোল সামলাও, তারপর সুযোগ পেলে আক্রমণ করা যাবে। যার সুযোগ নিতে শুরু করল কাতার। বাঁদিকের উইং ধরে কখনও আলমোয়েজ আলি, কখনও আব্দুল আজিজের ঘনঘন আক্রমণ। কাতারের ঝড় সামলাতে সামলাতে জেরবার প্রীতম কোটাল-সন্দেশ ঝিঙ্ঘান-শুভাশিস বসুদের ডিফেন্স। ভারতীয় ডিফেন্স লড়াই চালিয়ে গেল তবুও। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে ভারতীয় বক্সে জটলার মধ্যে গোল করে কাতারকে এগিয়ে দেন আব্দুল আজিজ।

এরপর আক্রমণের আওর ঝাঁঝ বাড়ে কাতারের। প্রথমার্ধে আরও দুটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয়। সৌজন্যে গুরপ্রীতের দুরন্ত পারফরম্যান্স। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সুনীলকে বসিয়ে নামানো হয় উদান্ত সিংকে। তবুও ম্যাচের মোড় ঘুরলনা। দ্বিতীয়ার্ধে ভারতীয় বক্সে আক্রমণ আরও বাড়াতে শুরু করল কাতার। ফের কাতারের নিশ্চিত গোলের একাধিক সুযোগ নষ্ট হল, অতন্দ্র প্রহরী গুরপ্রীতের সৌজন্যে। দ্বিতীয়ার্ধে এক সময় মনে হচ্ছিল লড়াই যেন হচ্ছে কাতার বনাম গুরপ্রীতের।  অবশেষে মাত্র ১-০ গোলেই জয় পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হল কাতারকে।

এদিনের ম্যাচের পর স্টিম্যাচের ফুটবল স্ট্র্যাটেজি নিয়ে উঠে গেল বড়সড় প্রশ্ন। এখনও কেন প্রথম একাদশ স্থির করতে পারলেন না স্টিম্যাচ? কেন দলে রাখা হল না অনিরুদ্ধ থাপার মত তরুণ প্রতিভাকে? কেন স্টিম্যাচ তুলে আনতে পারলেন না সুনীল ছেত্রীর কোনও যোগ্য বিকল্পকে? একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

তবে ম্যাচ শেষে ফুটবলবিশেষজ্ঞদের গলায় গুরপ্রীতের দরাজ প্রশংসা। হারের পর স্বস্তি একটাই, বড় ব্যবধানের লজ্জার হার এড়াতে পেরেছে ভারত।