AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Sailen Manna: ‘চিনের প্রাচীরের’ অমূল্য আবিষ্কার, জন্ম শতবর্ষে মোহনবাগানের ‘মান্না-দা’

Sailen Manna Birth Centenary Year: ফুটবলার হিসেবে অবসর নিলেও ফুটবল থেকে অবসর নেননি। জাতীয় দলের কোচ হয়েছেন, ফুটবল প্রশাসকের ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১২ সালে প্রয়াত হন ভারতীয় ফুটবল তথা মোহনবাগানের এই কিংবদন্তি। অবশ্য, কিংবদন্তিদের সত্যিই মৃত্যু হয় কি?

Sailen Manna: 'চিনের প্রাচীরের' অমূল্য আবিষ্কার, জন্ম শতবর্ষে মোহনবাগানের 'মান্না-দা'
Image Credit: TV9 Bangla Graphics
| Edited By: | Updated on: Sep 01, 2023 | 7:00 AM
Share

কলকাতা: শত শত ঘটনা তাঁকে ঘিরে। শৈলেন মান্না। স্বচ্ছন্দ ছিলেন ‘মান্না-দা’ ডাক শুনতেই। ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি। মোহনবাগান অন্তপ্রাণ। কেরিয়ার শুরু হয়েছিল হাওড়া ইউনিয়ন ক্লাবে। এর পর মোহনবাগানে। সবুজ মেরুন জার্সিতে খেলেছেন কেরিয়ারের শেষ দিন পর্যন্ত। জন্মদিনে দেশের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার শৈলেন মান্না। এ বছর তাঁর জন্মশতবর্ষও। তাঁকে ঘিরে অনেক মুহূর্ত, মিথ। ভারতীয় ফুটবলে চিনের প্রাচীর বললে বুঝতে সমস্যা হয় না, কার কথা বলা হচ্ছে। কিংবদন্তি গোষ্ঠ পালের আবিষ্কার শৈলেন মান্না। জন্মদিন এবং জন্ম শতবর্ষে তাঁকে নিয়ে TV9 Bangla Sports-এর বিশেষ প্রতিবেদন।

রবিবার আরও একটা বড় ম্যাচ। এ মরসুমের দ্বিতীয়। প্রথম ম্যাচে ১-০ ব্যবধানে জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। তার আগে! টানা আটটি ডার্বি জিতেছিল মোহনবাগান। বড় ম্যাচ এলে সবুজ মেরুন সমর্থকরা একটা শাপমুক্তির প্রত্যাশা করেন, ৫-০’র বদলা। ১৯৭৫ সালের আইএফএ শিল্ড ফাইনালে মোহনবাগানকে ৫-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। পরবর্তীতে মোহনবাগান ৫-৩ ব্যবধানে হারায় ইস্টবেঙ্গলকে। কিন্তু ০-৫’এর বদলা কি আর ৫-৩ সন্তুষ্টি মেলে! শৈলেন মান্নার জন্মদিনে হঠাৎ এই প্রসঙ্গ কেন! ৭৫’র সেই ডার্বি হারের পর রণক্ষেত্র পরিস্থিতি। মোহনবাগান ফুটবলাররা ভীত-সন্ত্রস্ত। আবেগী সমর্থকরা ক্ষোভে উন্মত্ত। মোহনবাগান ফুটবলারদের প্রাণ সংশয়ে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের একটাই ভরসা ছিলেন, মান্না দা। সে সময় তিনি ক্লাবের কর্তা। এই পরিস্থিতি থেকে ফুটবলারদের রক্ষা করেন। ভয়-শ্রদ্ধা-সমীহ যে ভাবেই বিচার করা হোক, সবুজ মেরুন সমর্থকদের কাছে তিনি ছিলেন অনন্য একজন।

কিংবদন্তি ডিফেন্ডার গোষ্ঠ পালকে দেখেই ডিফেন্ডার হতে চেয়েছিলেন শৈলেন মান্না। ফুটবলে এমনই একটা পজিশন, যেখানে ভালো খেললে স্পটলাইট থেকে দূরে কিন্তু একটা ছোট্ট ভুলেও সকলের সমালোচনার শিকার হতে হবে। ময়দানে তাঁর আত্মপ্রকাশ হাওড়া ইউনিয়ন ক্লাবে। সালটা ১৯৪০। বড় ক্লাব অবধি সফরে খুব বেশি সময় লাগেনি। কলকাতা লিগের দ্বিতীয় ডিভিশন ম্যাচে তাঁর খেলা দেখে মুগ্ধ করে অনেককেই। একই সঙ্গে খেলতেন কলেজ টিমের হয়েও। কলেজ টিমেরই একটা ম্যাচে তাঁকে আবিষ্কার করেন গোষ্ঠ পাল। তাঁর পরামর্শে দ্রুতই শৈলেন মান্নাকে নেয় মোহনবাগান। ক্লাবের সঙ্গে তাঁর বাঁধন পারিবারিক। কিশোর বয়সের স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবে পরিণত হয়। সবুজ মেরুন জার্সিতে তৈরি হয় ইতিহাস।

মোহনবাগানে যোগ দেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁকে অধিনায়ক করা হয়। শুধু ক্যাপ্টেন্স আর্ম ব্যান্ড পরা একজন নন, হয়ে ওঠেন প্রকৃত অর্থেই লিডার। মোহনবাগানের ঝুরি ঝুরি ট্রফি জয়ে দেওয়াল হয়ে রক্ষণ সামলেছেন শৈলেন মান্না। তাঁর আদর্শ গোষ্ঠ পালের মতোই খালি পায়ে সামলেছেন বুট পরা ব্রিটিশ ফুটবলারদের। ১৯১১ সালের সেই ঐতিহাসিক আইএফএ শিল্ড জয়ের পর কেটে গিয়েছিল অনেকগুলো বছর। শৈলেন মান্নার সময়ে ১৯৪৭ সালে দ্বিতীয় বার শিল্ড চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালে ডুরান্ড কাপ, বছর দুয়েক পর প্রথম বার রোভার্স কাপ জেতে মোহনবাগান।

তিনি কি শুধুই মোহনবাগানের? জাতীয় দলেও তাঁর অবদান অসীম। ১৯৪৮ সালে লন্ডন অলিম্পিক। খালি পায়ে খেলেও দেশের জার্সিতে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অনবদ্য পারফর্ম করেন শৈলেন মান্না। ফ্রান্সের মতো শক্তিশালী দেশের কাছে হার। ব্য়বধান ছিল মাত্র ২-১। দ্রুতই ভারতীয় দলের নেতৃত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। ১৯৫১ এশিয়ান গেমসে তাঁর নেতৃত্বে সোনার পদক জেতে ভারত। ইংল্যান্ড ফুটবল সংস্থা তাঁকে সেরা অধিনায়কদের তালিকায় জায়গা দিয়েছিল। বর্ণময় মুহূর্ত, নানা ইতিহাস গড়ে ১৯৬০ সালে অবসর নেন শৈলেন মান্না।

ফুটবলার হিসেবে অবসর নিলেও ফুটবল থেকে অবসর নেননি। জাতীয় দলের কোচ হয়েছেন, ফুটবল প্রশাসকের ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১২ সালে প্রয়াত হন ভারতীয় ফুটবল তথা মোহনবাগানের এই কিংবদন্তি। অবশ্য, কিংবদন্তিদের সত্যিই মৃত্যু হয় কি?