Bengal Chess Player : চৌষট্টি খোপের খেলায় বাজিমাত, মৃত্তিকার এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা আর্থিক সমস্যা
U17 Girls National Chess Championship 2023 : জলন্ধরে সদ্য হওয়া অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতায় (Under 17 Open & Girls’ National Chess Championship 2023) চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মৃত্তিকা। চুঁচুড়ার মেয়ে মৃত্তিকার সাফল্যে খুশি তাঁর পরিবার। তবে সেইসঙ্গে তাঁর বাবার আক্ষেপ মেয়েকে যদি বাংলার বাইরে কোনও রাজ্যে নিয়ে গিয়ে খেলাতে পারতেন!
চুঁচুড়া : বুদ্ধির খেলা দাবা। আর এই খেলায় এ বার মাত করলেন চুঁচুড়ার মেয়ে মৃত্তিকা মল্লিক (Mrittika Mallick)। জলন্ধরে সদ্য হওয়া অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতায় (Under 17 Open & Girls’ National Chess Championship 2023) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মৃত্তিকা। চুঁচুড়ার মেয়ে মৃত্তিকার সাফল্যে খুশি তার পরিবার। তবে সেইসঙ্গে বাবার আক্ষেপ, মেয়েকে যদি বাংলার বাইরে কোনও রাজ্যে নিয়ে গিয়ে খেলাতে পারতেন! আসলে মৃত্তিকা এখনও কোনও স্পনসর পায়নি। যে কারণে রাজ্যের বাইরে কোথাও খেলতে যেতে চাইলে নিজেকেই খরচ বহন করতে হবে। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মৃত্তিকার। তাতে খেলার জন্য রাজ্যের বাইরে যাওয়ার খরচ বহন করা কঠিন মৃত্তিকার পরিবারের জন্য। কিন্তু তা বলে মৃত্তিকা গ্র্যান্ড মাস্টার হওয়ার স্বপ্ন দেখা বন্ধ করছে না। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
একের পর এক সাফল্য ধরা দিয়েছে মৃত্তিকার হাতে। ২০২২ সালে জাতীয় স্তরে তিনি অনূর্ধ্ব-১৪-র দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। গত বছর এফআইডিই ওয়ার্ল্ড ইউথ অনূর্ধ্ব-১৪ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পেয়েছিল মৃত্তিকা। শুধু তাই নয়, অনূর্ধ্ব-১৪ মেয়েদের এশিয়ান ইউথ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে রূপো পেয়েছিল। অনূর্ধ্ব-১৬-তে জাতীয় স্তরে রানার্স হয়েছে মৃত্তিকা। এত সাফল্য সত্ত্বেও তার মাথা ঘুরে যায়নি। বরং মৃত্তিকা আরও বেশি করে অনুশীলনে মগ্ন হয়ে পড়েছে।
TV9Bangla-কে মৃত্তিকা জানিয়েছে, সে দিনে ১০-১২ ঘণ্টা করে অনুশীলন করছে। প্রসঙ্গত, জলন্ধরে গত ১-৯ মে অনুষ্ঠিত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতা। সেখানেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চুঁচুড়ার মৃত্তিকা মল্লিক। ১-৯ জুন মহারাষ্ট্রের নাগপুরে বসবে ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যান্ড মাস্টারের আসর। দেশ বিদেশের প্রতিযোগিরা সেখানে অংশ নেবেন। মৃত্তিকাও খেলবে এই টুর্নামেন্টে। চলতি বছরে ওড়িশাতেও রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যান্ড মাস্টার টুর্নামেন্ট।
এ বছর জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে মৃত্তিকা। পাশাপাশি বিদেশেও যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে। তবে বিদেশে খেলতে যাওয়ার খরচের কথা ভেবে চিন্তিত তার বাবা অরিন্দম মল্লিক। তিনি বলেন, ‘এক একটা জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার জন্য ৩০-৪০ হাজার টাকা খরচ। বিদেশে গেলে তো সেই খরচ আরও বেশি। মৃত্তিকা এখনও কোনও স্পনসর পায়নি। জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মহারাষ্ট্রের একটি সংস্থা ওকে এক লক্ষ দু’হাজার টাকা দিয়েছে। আর ওএনজিসি দিয়েছে ৬০ হাজার টাকা। বাংলার দাবাড়ুরা কোনও শুভেচ্ছা বার্তাও দেননি মৃত্তিকাকে।’ এই কথাগুলো বলতে বলতে খানিকটা ক্ষোভ ঝরে পড়ে মৃত্তিকার বাবার গলায়।
বাংলা দাবা সংস্থার সভাপতি, প্রাক্তন দাবাড়ু দিব্যেন্দু বড়ুয়ার কাছেই অনুশীলন করে মৃত্তিকা। এ ছাড়া ইউক্রেনে একজনের কাছেও অনুশীলন করে। যার খরচও অনেক। অরিন্দম বাবু বলেন, ‘আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া খুবই কষ্টের। তবু সাধ্যের বাইরে গিয়ে মেয়ের জন্য চেষ্টা করে চলেছি। দেখা যাক কতদূর কী হয়। তবে সুযোগ পেলে বাইরে কোনও রাজ্যে মেয়েকে নিয়ে যেতে চাই।’ মৃত্তিকার লক্ষ গ্র্যান্ড মাস্টার হওয়া। সেই লক্ষ্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে চুঁচুড়ার মেয়ে।