ATHLETICS : প্রয়াত উষার ‘আবিষ্কারক’ নাম্বিয়ার
পার্কিনসে ভুগছিলেন বেশ কিছু দিন ধরেই। বিছানা থেকে উঠতেই পারতেন না। দ্রোণাচার্য কোচ গত সপ্তাহেই পদ্মশ্রীতে সম্মানিত হয়েছিলেন।
কোঝিকোড়: পিটি ঊষাকে যিনি খুঁজে বের করেছিলেন, সেই ওএম নাম্বিয়ার মারা গেলেন। জনপ্রিয় অ্যাথলেটিক্স কোচের বয়স হয়েছিল ৮৯। শুধু ঊষা নন, সাইনি উইলসন ও বন্দনা রাওদের মতো আন্তর্জাতিক মানের অ্যাথলিটরাও জন্ম নিয়েছিলেন তাঁর কোচিংয়েই।
ঊষার কাছে নাম্বিয়ার শুধু কোচই ছিলেন না। ছিলেন তাঁ। পথপ্রদর্শকও। প্রবীণ কোচকে হারিয়ে ঊষা টুইটারে লিখেছেন, ‘নাম্বিয়ার আমার গুরু, আমার কোচ, আমার পথপ্রদর্শক, যিনি আমাকে আলোয় পৌঁছে দিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যু এক অসীম শূন্যতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে আমাকে। যা কখনওই পূরণ করা সম্ভব হবে না। আমার জীবনে স্যারের অবদান বলে শেষ করতে পারব না। চিরকাল ঋণী থাকব ওঁর কাছে। যেখানেই থাকবেন, ভালো থাকবেন।’
The passing of my guru, my coach, my guiding light is going to leave a void that can never be filled. Words cannot express his contribution to my life. Anguished by the grief. Will miss you OM Nambiar sir. RIP ?? pic.twitter.com/01ia2KRWHO
— P.T. USHA (@PTUshaOfficial) August 19, 2021
১৯৬৮ সালে পাতিয়ালা থেকে এআইএস কোচিং কোর্স করেন নাম্বিয়ার। ১৯৭১ সালে কেরালা স্পোর্টস কাউন্সিলে যোগ দেন কোচ হিসেবে। তারপরই কেরালা জুড়ে খোঁজ চালান নতুন প্রতিভার। যাঁর হাত ধরে আন্তর্জাতিক সাফল্য আসতে পারে। সেই সময়ই ঊষাকে খুঁজে পান তিনি। কোচ হিসেবে পুরনো ধ্যানধারণাই রাখতেন। ভোর থেকে হাড়ভাঙা প্র্যাক্টিস। কোচ কড়া নজর রাখতেন ঊষার উপর। বেড়ে ওঠার ওই দিনগুলোতেই ঊষাকে শিখিয়েছিলেন, সাফল্য আসে, কিন্তু ধরে রাখা কঠিন। আর তার জন্য দরকার দিনের পর দিন কড়া ট্রেনিং এবং সংযম। নাম্বিয়ার না থাকলে ধারাবাহিক সাফল্য পাওয়া হত না তাঁর।
পার্কিনসে ভুগছিলেন বেশ কিছু দিন ধরেই। বিছানা থেকে উঠতেই পারতেন না। দ্রোণাচার্য কোচ গত সপ্তাহেই পদ্মশ্রীতে সম্মানিত হয়েছিলেন। শারীরিক কারণেই সশরীরে হাজির হয়ে পদ্মশ্রী সম্মান নিতে পারেননি। তাঁর ছেলে সুরেশ বলেছেন, ‘বাবা যখন শুনেছিলেন, পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছেন, খুব খুশি হয়েছিলেন। ওঁর অবশ্য মনে হয়েছিল, এই সম্মান অনেক আগেই পাওয়া উচিত ছিল।’
অ্যাথলিট হতে গেলে যে ডায়েট বদলানো দরকার, ভারতীয়দের প্রথম বুঝিয়েছিলেন নাম্বিয়ারই। ঊষা নিরামিষ খাবার খেতেন। কিন্তু কোচের পরামর্শেই ডিম ও আমিষ খাওয়া শুরু করেন। এই ডায়েট বদলই ঊষার শারীরিক সক্ষমতা বাড়িয়েছিল। তার ফল হাতে নাতে পেয়েছিলেন ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিডস্টার।
নাম্বিয়ার পদ্মশ্রী পাচ্ছেন, খবর পেতেই কোচের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন ঊষা। তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন স্মারক। বলেছিলেন, ‘নাম্বিয়ার স্যার সারা দেশের অ্য়াথলিট ও কোচেদের প্রেরণা।’
বৃহস্পতিবার নাম্বিয়ার মারা গেলেও চিরস্মরণীয় থাকবেন ভারতীয় ক্রীড়ামহলে।