টোকিও অলিম্পিকে হকির পদক চান ৮৬তে পা দেওয়া গুরবক্স

১৯৫৭ সালে মিরাট থেকে কলকাতায় এসেছিলেন দিদির কাছে। এই শহরকে ভালোবেসে তার পর থেকে গিয়েছিলেন। তখন মাত্র ২১ বছর বয়স তাঁর। এই শহর থেকেই অলিম্পিয়ান হয়েছিলেন গুরবক্স।

টোকিও অলিম্পিকে হকির পদক চান ৮৬তে পা দেওয়া গুরবক্স
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 11, 2021 | 2:58 PM
অভিষেক সেনগুপ্ত
৫৭ বছর আগে আগের ইতিহাস কি এ বার টোকিওতে ফিরবে?
১৯৬৪ সালে ওই টোকিও শহরেই সোনা জিতেছিল ভারতীয় হকি টিম। হকির সোনাঝরা দিনগুলোর শরিক ছিলেন যিনি, সেই গুরবক্স সিং অন্য স্বপ্নের কথা শোনাচ্ছেন। টোকিও অলিম্পিকে ভারত যদি শেষ চারে উঠতে পারে, তাতেই খুশি হবেন তিনি।
কেন? গুরবক্সের ব্যাখ্যা, ‘যদি ইতিহাস দেখেন, ১৯৮০ সালের মস্কো অলিম্পিকের পর ভারত ফাইনালে যাওয়া দূরের কথা, সেমিফাইনালেই ওঠেনি। আমার মনে হয়, টোকিওতে ভারত প্রথম চারে ওঠার লক্ষ্য সামনে রেখে এগোক। সেটা করতে পারলে কিন্তু পদকের কাছাকাছি পৌঁছেও যেতে পারে।’
যে গুরবক্স এই টোকিওর স্বপ্নে একাকার, আজ তাঁর জন্মদিন। ৮৬ বছরে পা দিলেন ছয়ের দশকে পর পর দুটো অলিম্পিক খেলা তারকা। ভবানীপুরের বাড়িতে জন্মদিন অবশ্য গুরবক্সের সঙ্গী তাঁর স্ত্রী গুরবক্স কৌরই। গুরবক্স হাসতে হাসতে বলে দিলেন, ‘৮৬ বছরে আর জন্মদিন বলে আলাদা কিছু হয় না। তা ছাড়া, ছেলেমেয়েরা তো সবাই বাইরে। তাই জন্মদিনটা আমরা দু’জন মিলেই পালন করছি।’
১৯৬৪ সালের টোকিও অলিম্পিকে সোনাজয়ী ভারতীয় টিমের অধিকাংশ সদস্যই প্রয়াত। ধরম সিং, হরবিন্দর সিং, দর্শন সিং, ক্যাপ্টেন চরণজিৎ সিংরাই শুধু বেঁচে আছেন। তাঁদের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথাও বলেন গুরবক্স। পুরোনো বন্ধুদের প্রসঙ্গ উঠতেই বলে দিলেন, ‘ধরমের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয়। হরবিন্দরদের সঙ্গেও। ওদের সঙ্গে কথা হওয়া মানেই তো স্মৃতির দিনগুলোতে ফিরে যাওয়া।’
১৯৫৭ সালে মিরাট থেকে কলকাতায় এসেছিলেন দিদির কাছে। এই শহরকে ভালোবেসে তার পর থেকে গিয়েছিলেন। তখন মাত্র ২১ বছর বয়স তাঁর। এই শহর থেকেই অলিম্পিয়ান হয়েছিলেন গুরবক্স। টোকিও অলিম্পিকে সোনা জয় যদি তাঁর সেরা স্মৃতি হয়, তা হলে ১৯৬৮ সালের মেক্সিকো অলিম্পিকে ব্রোঞ্জে থামা এখনও কষ্ট দেয় তাঁকে। গুরবক্স বলছিলেন, ‘সে বারও আমাদের টিমটা দারুণ ছিল। কিন্তু সোনা জিততে পারিনি। এই কষ্টটা কখনও ভুলব না।’
দুটো অলিম্পিক খেললেও কোচ ও ধারাভাষ্যকার হিসেবে গিয়েছেন আরও চারটে অলিম্পিক। ৮৬ বছরের অলিম্পিয়ান এখনও নিয়মিত হকি দেখেন। ভারতের এখনকার টিম সম্পর্কেও যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। বলছিলেন, ‘এখনকার ভারতীয় টিমে তিনটে বিশ্বমানের প্লেয়ার আছে। ক্যাপ্টেন মনপ্রীত সিং, ড্র্যাগ ফ্লিকার হরমনপ্রীত সিং আর কিপার শ্রীজেশ। কিন্তু আমার মনে হয়, এই টিম নিয়েও দারুণ কিছু করা যেতে পারে। আসল হল, ওই দশটা দিন ভারত কী ভাবে নিজেকে মেলে ধরছে। ছোট ছোট লক্ষ্য সামনে রেখে এগোক। ঠিক বড় স্বপ্নপূরণ হয়ে যাবে।’
জন্মদিনে গুরবক্স যেমন ‘দিনগুলো কেটে যাক’ বলছেন, তেমনই, ‘টোকিওতে ভারত যদি পদক পায়, তার থেকে বেশি তৃপ্তি আর হতে পারে এই বয়সে!’