AC Price Hike: জুন মাসে ভারতে ফের এসির দাম বাড়ছে, কারণটা জানলে অবাক হবেন

Air Conditioners Price Rise India Explained: ভারতের এসির দাম বাড়ছে। কিন্তু তাতে ভারতের কোনও হাত নেই। অন্য তিনটি দেশের কারণেই ভারতে এসির দাম জুন মাস থেকে আরও 3-5 শতাংশ বাড়তে চলেছে।

AC Price Hike: জুন মাসে ভারতে ফের এসির দাম বাড়ছে, কারণটা জানলে অবাক হবেন
প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 15, 2022 | 8:56 PM

বহু দিন ধরে অপেক্ষা করেছিলেন। ভাবছিলেন এবারে এয়ার কন্ডিশনার (Air Conditioner) একটা কিনেই ফেলবেন। কিন্তু যতবারই আপনি একটা এসি কেনার কথা ভাবেন, ততবারই এসির দাম বেড়ে যায়। আর এবারেও আপনার জন্য সেই দুঃসংবাদটা অপেক্ষা করেই ছিল। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। ফের এসির দাম বাড়ছে (AC Price Hike) ভারতে। আর তার কারণটা বড়ই অদ্ভুত। জ্বালানির খরচ বৃদ্ধি, গ্লোবাল কম্পোনেন্টের ঘাটতি – এসব হাজার একটা দিকের কথা ভেবে ভারতের এয়ার কন্ডিশনার প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির কাছে এসির দাম বাড়ানো ছাড়া দ্বিতীয় আর কোনও উপায় ছিল না। তার উপরে আবার শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল চিনের লকডাউন এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। যার ফলে র মেটিরিয়ালের ঘাটতি আরও বাড়তে থাকে। এই সব দিক মিলিয়েই সামনের মান থেকে এসি কিনতে গেলে আরও ৩ থেকে ৪ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হবে ক্রেতাদের।

জনসন কন্ট্রোলস-হিটাচি এয়ার কন্ডিশনিং ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর গুরমিত সিং বলছেন, “জ্বালানির মাত্রাতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি ও তার সঙ্গে কম্পোনেন্ট শর্টেজ যোগ হওয়ার ফলে র মেটিরিয়ালসের দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এছাড়াও যোগ হয়েছে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, সাপ্লাই চেনে বাধা এবং B2B ও B2C স্পেসে এয়ার কন্ডিশনিং সলিউশনের ব্যাপক পরিমাণে চাহিদা। আর এই সবক’টা বিষয়ই এসির দাম দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী।”

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভারতে এসির দাম ঠিক কতটা বাড়তে পারে? এ বিষয়ে গুরমিত সিংয়ের বক্তব্য, “কনজ়িউমাররা এসির দামের ক্ষেত্রে জুন মাস থেকে আরও ৩-৪ শতাংশ বৃদ্ধি আশা করতে পারেন।” প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে ভারতে প্রায় প্রতিটি কোয়ার্টারে একপ্রকার নিয়ম করেই ইলেকট্রনিক্স সেক্টর তাদের বিভিন্ন প্রডাক্টের দাম বাড়াচ্ছে। মূলত সাপ্লাই চেনের সমস্যার কারণেই ফাস্ট মুভিং কনজ়িউমার গুডস (FMCG) কোম্পানিগুলি একপ্রকার বাধ্য হয়েই দৈনিক ব্যবহারযোগ্য একাধিক প্রডাক্টের দাম বাড়িয়েছে।

তবে ইদানিং ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম বাড়ার সবথেকে বড় কারণটা হল চিনের লকডাউন। সে দেশে লকডাউনের কারণেই কনজ়িউমার ইলেকট্রনিক্স প্রডাক্টের শিপমেন্টে অনেকটাই দেরি হচ্ছে। সুপার প্ল্যাসট্রনিক্স প্রাইভেট লিমিটেডের (SPPL) সিইও অভনীত সিং মারওয়ার কথায়, “চলতি বছরের শুরুতেই ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রির জন্য একের পর এক অঘটন এসেই গিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড পরিস্থিতি ও তার জন্য চিনের লকডাউন এবং ভারতের টাকার মূল্যে আমেরিকান ডলারের থেকে অনেকটাই কমে যাওয়া – এই সব চ্যালেঞ্জ কোম্পানিগুলিকে দাম বাড়াতে বাধ্য করেছে।”

মারওয়া আরও যোগ করে বলছেন, “এই সব কারণের জন্য ব্র্যান্ডগুলির সোর্সিং, প্রডাকশন এবং সাপ্লাই ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত হয়েছে। ফলস্বরূপ, র মেটিরিয়াল এবং কমোডিটি প্রাইস ২০ শতাংশ বেড়েছে। থমসনও একটি ব্র্যান্ড হিসেবে জুন এবং জুলাই মাসে তাদের প্রডাক্টের দাম ৩-৫ শতাংশ বাড়াতে চলেছে।” এই সব নিয়ে আবার বিশেষজ্ঞ মহলের চিন্তা, উৎসবের মরশুমে বিভিন্ন সেল সিজ়নে এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে।

কিন্তু এসবের জন্য কি এয়ার কন্ডিশনারের বিক্রিবাট্টায় ভাঁটা পড়বে? অভনীত সিং মারওয়া বলছেন, “আমাদের দেশে যেহেতু গরম এবং বর্ষাকাল অনেকটা বেশি সময় নিয়ে চলে, তাই B2B এবং B2C সেগমেন্টে এয়ার কন্ডিশনারের চাহিদা ব্যাপক। আর সেই কারণেই যতই দাম বাড়ুক না কেন, বিক্রিবাট্টা সেরকম ভাঁটা পড়ার চান্স নেই।”

এদিকে ভারত সরকার দেশে এসি-সহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স প্রডাক্ট তৈরিতে জোর দিচ্ছে PLI স্কিম ও অন্যান্য আরও প্রকল্প নিয়ে আসার মধ্যে দিয়ে। ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে আরও বেশি করে ইলেকট্রনিক্স প্রডাক্ট তৈরি হলে এই ইন্ডাস্ট্রি এবং আখেরে এই ইকোসিস্টেমটা আরও উন্নত হবে। তখন সাপ্লাই চেন সমস্যা বা র মেটিরিয়াল বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হবে না। ফলে, এসির দামও বারংবার বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।