Arctic Last Ice Area: বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশার আগেই গলতে শুরু করেছে উত্তর মেরুর এই এলাকার বরফ

উত্তর মেরুর অংশ 'লাস্ট আইস এরিয়া'। বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশার আগেই কেন গলতে শুরু করেছে এই অংশের বরফ? উত্তর খুঁজতে গবেষণা চালাচ্ছেন বৈজ্ঞানিকরা।

Arctic Last Ice Area: বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশার আগেই গলতে শুরু করেছে উত্তর মেরুর এই এলাকার বরফ
উত্তর মেরুর লাস্ট আইস এরিয়া।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 05, 2021 | 11:34 AM

উত্তর মেরুর অংশ ‘লাস্ট আইস এরিয়া’। বিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আশা জিইয়ে রেখেছিল উত্তর মেরুর এই এলাকা। কারণ এই অঞ্চলে সমুদ্রের বরফ এত ঘন, যে জাহাজ যাওয়া তো দূরে থাক, বরং মনে হয় আসলে ভাসমান জমাটবদ্ধ সমুদ্র। গত বেশ কয়েক দশক ধরে বিশ্বের উষ্ণায়ণও এর উপর প্রভাব ফেলতে পারেনি। কিন্তু সম্প্রতি এই অঞ্চলে এমন একটি পরিবর্তন দেখা দিয়েছে, যা দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বিজ্ঞানীরা। গত সামার সিজনে ঘন বরফে জমাট বাঁধা ‘লাস্ট আইস এরিয়া’ সমুদ্রে জল দেখা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, তার পরিমাণ এতটাই যে, অনায়াসে একটি জাহাজ চলে যেতে পারবে। বিগত কয়েক দশকে এমন ছবি নজরে আসেনি। অথচ এবার এমন দৃশ্য দেখা দেওয়ায় চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। তাহলে কি বিশ্ব উষ্ণায়ণের প্রভাব পড়ল এখানেও? এই প্রশ্নই ঘুরছে বৈজ্ঞানিকদের মনে।

উত্তর গ্রিনল্যান্ডের ওয়ান্ডেল সাগরে একটি বরফের চাঁই নজরে এসেছিল বিজ্ঞানীদের। সেটা জুলাই মাসের শেষে এবং অগস্ট মাসের শুরুর দিকে। অনুমান করা হয়েছিল, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এই বরফের চাঁই ওই সাগরে ভাসতে দেখা গিয়েছে। তবে গত কয়েক দশক ধরে বিশ্ব উষ্ণায়ণ এবং আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উত্তর মেরুর ‘লাস্ট আইস এরিয়া’- র সমুদ্রের বরফ ঘন থেকে পাতলা হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে অনেকদিন ধরেই আলোচনা করছেন বিজ্ঞানীরা। জার্নাল কমিউনিকেশন আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট- এর একটি প্রতিবেদন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়েই উত্তর মেরুর অধিকাংশ সমুদ্রের বরফ গলে যাবে। তবে এই আশঙ্কার তালিকায় এতদিন ছিল না ‘লাস্ট আইস এরিয়া’। যদিও হঠাৎ করেই এই এলাকার সমুদ্রের বরফ গলে যাওয়ায় বিজ্ঞানীদের সমস্ত সমীকরণই বদলে গিয়েছে। বৈজ্ঞানিকরা যা ভেবেছিলেন, তার থেকে অনেক আগেই গলতে শুরু করেছে উক্ত অঞ্চলের সমুদ্রের ঘন বরফ। টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাটমোস্ফেরিক ফিজিসিস্ট কেন্ট ম্যুর বলেছিলেন, ২১০০ শতাব্দী শুরুর আগে উত্তর মেরুর ৩ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গ মাইল এলাকা বরফমুক্ত হবে না। কিন্তু ‘লাস্ট আইস এরিয়া’- র সাম্প্রতিক পরিবর্তন এই পরিসংখ্যানকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।

ম্যুরের কথা অনুযায়ী, আক্সমিক ভাবে বরফ গলে যাওয়ার কারণ অত্যধিক শক্তিশালী বায়ু, যা জমাট বাঁধা বরফের চাঁইকে তার নিজস্ব এলাকা থেকে সরিয়ে গ্রিনল্যান্ডের উপকূলের কাছে নিয়ে এসেছে। উক্ত অঞ্চল থেকে এই এলাকা নীচে হওয়ায় সেখানে তাপমাত্রা বেশি। ফলে সহজে গলে গিয়েছে জমাট বাঁধা ঘন বরফে আস্তরণ এবং চাঁই। আগে এই বরফখণ্ড হাওয়ার তীব্র গতি সহ্য করতে পারলেও এখন আর পারছে না। সহজেই ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে ‘লাস্ট আইস এরিয়া’- র আর একটি অংশ যা কানাডার এলসমেয়ার দ্বীপ নামে পরিচিত, সেখানেও ২০২০ সালের জুলাই মাসে বরফ ভাঙার ফলে জলের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তার খোঁজে গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানেরা।

আরও পড়ুন- নতুন স্পেস স্টেশনের বাইরে দুই চিনা নভশ্চরের স্পেস ওয়াক