Immortal Animals: বয়সের চাকা নিজেই ঘুরিয়ে দিতে পারে এই প্রাণী, জীবনের শেষ পর্বে ফিরিয়ে আনে যৌবন

Axolotl or Mexican Salamander: প্রাণীটির নাম মেক্সিকান স্যালামান্ডার, যা অ্যাক্সোলোটাল বা অ্যাক্সোলোটল (Axolotl) নামেও পরিচিত। মেক্সিকো শহরের দু'টি হ্রদে এটি পাওয়া যায়। হ্রদের ছোট মাছ খেয়ে তারা বেঁচে থাকে। যদিও এটি 'ওয়াকিং মাছ (Walking Fish)' হিসাবেও পরিচিত।

Immortal Animals: বয়সের চাকা নিজেই ঘুরিয়ে দিতে পারে এই প্রাণী, জীবনের শেষ পর্বে ফিরিয়ে আনে যৌবন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 01, 2023 | 4:33 PM

Immortal Fish: “জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে”— আজ থেকে বহু বছর আগেই মাইকেল মধুসূদন দত্ত এই চিরসত্য তুলে ধরেছিলেন তার কবিতার মাধ্যমে। সত্যিই তো! কে-ই বা আর অমর থাকতে পারে। মানুষের পক্ষে তা সম্ভব নয়, এ তো সবাই জানে। কিন্তু তাই বলে কি পৃথিবীতে এমন কোনও প্রাণী নেই, যে অমর? এই গবেষণা বহুদিন ধরেই করছেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে তার উত্তর পেলেন তাঁরা। এমন একটি প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন, যে তার সমস্ত অঙ্গ পুনরুজ্জীবিত করতে পারে নিজে থেকেই। এক কথায়, মৃত্যু ছুঁতে পারে না এই প্রাণীটিকে। প্রাণীটির নাম মেক্সিকান স্যালামান্ডার, যা অ্যাক্সোলোটাল বা অ্যাক্সোলোটল (Axolotl) নামেও পরিচিত। মেক্সিকো শহরের দু’টি হ্রদে এটি পাওয়া যায়। হ্রদের ছোট মাছ খেয়ে তারা বেঁচে থাকে। যদিও এটি ‘ওয়াকিং মাছ (Walking Fish)’ হিসাবেও পরিচিত। বিজ্ঞানীদের মতে, এটি কোনও মাছ নয়, একটি উভচর প্রাণী। প্রজাতিটি মূলত বেশ কয়েকটি হ্রদে পাওয়া গিয়েছিল, যেমন মেক্সিকো সিটির অন্তর্নিহিত জোছিমিলকো হ্রদ। এই প্রজাতি প্রায় বিলুপ্তির পথে। এর বিলুপ্তির প্রধান কারণ হল দূষণ এবং অন্যান্য জীবের আক্রমণ।

কিন্তু এরা অমর কীভাবে?

1964 সালে যখন প্রথমবারের মতো Axolotl নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন, তখন দেখেছিলেন যে, এর মস্তিষ্কের অংশগুলি কখনই নষ্ট হয় না। এমনকী সময় সময়ে তার বিকাশ ঘটে। আপনার মনে হতে পারে, সব প্রাণীরই মস্তিস্ক থেকে শুরু করে সব অংশের বিকাশ ঘটে। তাহলে এর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কীভাবে? এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, একটা নির্দিষ্ট সময় পর, যখন প্রাণীটি তার জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে যায়, তখন সে মস্তিষ্কের অংশগুলি আবার পুনরুজ্জীবিত করে। ফলে সে তার যৌবনে ঠিক যেমন ছিল, তেমনই হয়ে যায়। সাধারণত যে কোনও প্রাণীরই একটা সময় মৃত্যুর সম্মুখীন হয়। মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড ধীরে ধীরে অকেজো হতে শুরু করে। কিন্তু এই অদ্ভুত এই প্রাণীটির জীবনে মৃত্যু বলে কোনও শব্দের অস্তিত্ব নেই। কারণ এই প্রাণীটির বিশেষত্ব হল এটি তার মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, হৃৎপিণ্ড এবং হাত-পা পুনরুজ্জীবিত করে।

কীভাবে সে এই কাজ করে?

অ্যাক্সোলোটাল মস্তিষ্কের কোষগুলিকে পুনরায় বিকাশ করে এবং তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। কিন্তু কীভাবে সে নিজেকে যৌবনে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে? এই উত্তর জানার জন্য বিজ্ঞানীরা এই প্রাণীর হৃৎপিণ্ডের একটি মানচিত্র তৈরি করেছিলেন। তারপর তাঁরা জানতে পারেন, কীভাবে অ্যাক্সোলোটাল মস্তিষ্কের পুনর্বিকাশ করে। তাঁরা জানান, অ্যাক্সোলোটালের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন কোষ বিভিন্ন কাজ করে। বিজ্ঞানীরা প্রাণীটির মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ, টেলেন্সফালন নিয়ে গবেষণা করেছেন। Telencephalon-কে মানুষের মস্তিষ্কের একটি বড় অংশও বলা হয়। এর ভিতরে রয়েছে নিওকর্টেক্স, যা যে কোনও জীবের আচার-আচরণ ও অনুভুতি সম্পর্কে জানায়।

গবেষণায় কী দেখা গিয়েছে?

গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এই প্রাণীর নিওকর্টেক্স অন্যান্য প্রাণীর থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। এটি তার মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়। ধীরে-ধীরে বিজ্ঞানীরা এর মস্তিষ্কের টেলেন্সফালনের একটি বড় অংশ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখেন, Axolotl খুব ধীরে-ধীরে হলেও প্রতি সপ্তাহে তার মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়। আর এই সব কিছুই ধাপে ধাপে ঘটে। তবে এই শক্তি অন্য কোনও জীবের মধ্যে এর আগে দেখা যায়নি।