Earth 2.0: এই পৃথিবীর বাইরে আরও একটা পৃথিবী! সেই ‘আর্থ ২.০’ খুঁজতে মহাকাশের গভীরে যাওয়ার পরিকল্পনা চিনের

An Exoplanet Just Like Earth: পৃথিবীর মতোই আরও পৃথিবী রয়েছে? বিকল্প সেই পৃথিবী বা আর্থ ২.০-এর খোঁজে এবার নতুন মিশনে নামছে চিন। সব দিক ঠিক থাকলে জুন মাসেই এই প্রজেক্টের বাস্তব রূপ দিতে সম্ভবপর হবে বেজিং।

Earth 2.0: এই পৃথিবীর বাইরে আরও একটা পৃথিবী! সেই 'আর্থ ২.০' খুঁজতে মহাকাশের গভীরে যাওয়ার পরিকল্পনা চিনের
প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 15, 2022 | 10:38 PM

চিন (China) কী না পারে! অন্তত যা ভাবে, তার কিছুটা তো করে দেখায়। প্রযুক্তিগত চতুরতা এবং একাধিক সাহসী অভিযানে দেশটি বারংবার সফল ভাবে পাড়ি দিয়েছে চাঁদ, মঙ্গলে। এবার মহাকাশের আরও গভীরে গিয়ে আর একটি পৃথিবীর সন্ধান করতে উঠে পড়ে লেগেছে শি জ়িনপিংয়ের দেশটি। পৃথিবীর বাইরে আর একটা বিকল্প পৃথিবী খুঁজতে চলেছে চিন, যার নাম ‘আর্থ ২.০’ (Earth 2.0)। এমনই একটি মিশনের পরিকল্পনা বেজিং করছে, যা আমাদের সৌরজগতের বাইরে এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান করবে। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির বাসযোগ্য অঞ্চলে আর একটি বিশ্বের খোঁজ করাই চিনের এই অ্যাসাইনমেন্টের মূল উদ্দেশ্য। ‘আর্থ ২.০’ মিশন সম্পর্কে বলা হচ্ছে, আমরা বর্তমানে যে গ্রহে বাস করি তার অনুরূপ আর একটি গ্রহ খুঁজে বের করা। আগামী দশকগুলিতে আমাদের পৃথিবী আরও বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার পূর্বাভাস মিলেছে। আর সেই সময়ে অন্য আর একটা পৃথিবীতে মানুষকে নিয়ে যেতেই চিনের এই প্রচেষ্টা।

সংবাদমাধ্যম দ্য নেচার-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘আর্থ ২.০’-এর পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়েছে চাইনিজ় অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস দ্বারা। আপাতত এই পরিকল্পনাটি প্রাথমিক ডিজ়াইন ফেজ়ে রয়েছে। জুন মাসেই এই পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ শুরু করবে চাইনিজ় অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস। আর তার কারণ হল, বিশেষজ্ঞদের একটি দল প্রস্তাবিত মিশনের পর্যালোচনা করবে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে ডেভেলপমেন্ট ফেজ় শুরু হবে, যেখানে স্যাটেলাইট তৈরি করার জন্য তহবিল জোগাড় করা হবে।

বিকল্প পৃথিবীর খোঁজে চিন

আমাদের জীবনকে উদ্দীপিত করার জন্য দায়ী রাসায়নিক লক্ষণগুলির খোঁজে, সৌরজগতের বাইরে মহাকাশের গভীরে এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান করবে টেলিস্কোপটি। দ্য নেচার-এর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিশনটিতে সাতটি টেলিস্কোপ থাকবে, যা কেপলার মিশনের পর্যবেক্ষণের মতো মহাকাশের একটি প্যাচ স্ক্যান করবে।

‘আর্থ ২.০’-এর মুখ্য জ্যোতির্বিজ্ঞানী জিয়ান জি সংবাদমাধ্য দ্য নেচার-এর কাছে দাবি করেছেন, “কেপলার ফিল্ড খুব সহজেই আমাদের কাছে অনেক তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছে। আমাদের স্যাটেলাইট তার স্কাই-সার্ভেয়িং ক্যাপাসিটির নিরিখে কেপলার টেলিস্কোপের চেয়েও ১০১৫ গুণ বেশি শক্তিশালী হতে পারে।” ট্রানজ়িট পদ্ধতিতে চলবে এই স্পেসক্র্যাফ্ট, যার মাধ্যমে তারাটির উজ্জ্বলতা সম্পর্কিত ছোট ছোট পরিবর্তনও শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে জানা যাবে যে, ওই তারার সামনে দিয়ে কোনও গ্রহ গিয়েছে কি না।

একসঙ্গে এই মিশনের ছয়টি টেলিস্কোপ আকাশের ৫০০ বর্গ-ডিগ্রি প্যাচ জুড়ে একটি বিস্ময়কর ১.২ মিলিয়ন তারা অধ্যয়ন করবে। পাশাপাশি নাসা-র ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট (TESS)-এর চেয়ে ম্লান এবং আরও দূরবর্তী তারা পর্যবেক্ষণ করবে। বোর্ডে থাকা সপ্তম যন্ত্রটি হবে একটি মহাকর্ষীয় মাইক্রোলেন্সিং টেলিস্কোপ, যা নেপচুন বা প্লুটোর মতো তাদের নক্ষত্র থেকে দূরে থাকা দুর্বৃত্ত গ্রহগুলির সার্ভে করার জন্য ব্যবহৃত হবে।

সত্যিই কি অনেক তারা মাঝে লুকিয়ে ‘আর্থ ২.০’

নাসা এখনও পর্যন্ত আমাদের সৌরজগতের বাইরের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ৫০০০ টিরও বেশি বিশ্ব শনাক্ত করেছে, যা এক্সোপ্ল্যানেটগুলির সবচেয়ে বড় ক্যাটালগ এবং সেগুলি অন্বেষণের অপেক্ষায় রয়েছে। এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত ৫০০০টি এক্সোপ্ল্যানেটের গঠন এবং বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিসর রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর মতো ছোট, পাথুরে জগত, বৃহস্পতির চেয়ে বহুগুণ বড় গ্যাসীয় দুনিয়া এবং তাদের নক্ষত্রের চারপাশে থাকা জ্বলন্ত ঘনিষ্ঠ কক্ষপথে উত্তপ্ত বৃহস্পতি।

এই বিশাল ক্যাটালগের মধ্যে রয়েছে ‘সুপার আর্থ’, যা আমাদের নিজেদের থেকে বড় সম্ভাব্য পাথুরে পৃথিবী এবং ‘মিনি-নেপচুন’, যেটি আমাদের সিস্টেমের নেপচুনের থেকে একটি ছোট সংস্করণ। চিনের এই দলটি তাদের অপারেশনের প্রথম কয়েক বছরের মধ্যে অন্তত এক ডজন ‘আর্থ ২.০’ খুঁজে পাওয়ার আশা করছে।

আরও পড়ুন: ‘মার্সিয়ান রেকর্ড’ ভেঙেছে রোভার পারসিভের‍্যান্স, জানাচ্ছে নাসা

আরও পড়ুন: কলার খোসা ছাড়াচ্ছে রোবট! ১৩ ঘণ্টার প্রশিক্ষণে রপ্ত হয়েছে এই টাস্ক, জানাচ্ছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা

আরও পড়ুন: মহাবিশ্বের সবচেয়ে দূরের ছায়াপথের আবিষ্কার, ১৩.৫ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এই গ্যালাক্সি