Curiosity Rover: টানা ৯ বছর পর মঙ্গলে সফল অবতরণ নাসার এই মহাকাশযানের
প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি কিলোমিটার পেরিয়ে মঙ্গলে সফল অবতরণ করা রোভার কিউরিওসিটির মিশনের উদ্দেশ্য মঙ্গলের আবহাওয়া ও প্রাণের অস্তিত্ব অনুসন্ধান। ইতোমধ্যেই কিওরিসিটি পৃথিবীর বুকে মঙ্গলপৃষ্ঠের নতুন ছবি পাঠাতে শুরু করেছে।
লালগ্রহে প্রাণের সন্ধানে এক বৈপ্লবিক মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে তৈরি করা হয়েছিল অত্যাধুনিক মহাকাশ যান কিউরিওসিটি। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে ছোট্ট গাড়ির আকারে এই রোভারটি মঙ্গলের আকাশে পাঠিয়েছিল নাসা।অবশেষে ২০২১ সালে ৫ অগস্ট মঙ্গলে অবতরণ করে ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটায়। মঙ্গলের আকাশে টানা ৯ বছর পূর্ণ করে আপাতত গ্যালে ক্রেটারের মাটিতে পা রেখেছে নাসার মহাকাশযানটি।
এই নয় বছর মঙ্গল গ্রহে আকাশে প্রদক্ষিণ করার সময় পৃথিবীতে প্রচুর ছবি পাঠিয়েছে কিউরিওসিটি রোভার। লালগ্রহে ৯ বছর রোভারের অভিযানের কথা প্রসঙ্গে নাসা থেকে জানানো হয়েছে, এই বিশেষ মহাকাশযানে পরিচালনাকারী দলের জন্য এতগুলি বছর দারুণ ছিল। ৯ বছরে প্রায় ২৫.৯৮ কিমি ভ্রমণ করেছে ও আগামী কয়েক বছরে ধরে এটি এখনও অভিযান চালিয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে। নাসার বিজ্ঞানীদের মতে, এটি এখনও ১৪ বছর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ছবি ও তথ্য পৃথিবীতে পাঠাতে সক্ষম। মহাকাশযানের পারমাণবিক শক্তি ব্যবস্থাই যে দায়ী তা এককথায় স্বীকার করেছেন তাঁরা। মঙ্গল গবেষণার ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত নাসার বিজ্ঞানীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
মঙ্গলে এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য কী?
কিউরিওসিটি ৫ অগস্ট ভোর পাঁচটা ৩২ মিনিটে মঙ্গল গ্রহের একটি পর্বতের জ্বালামুখের ভেতরে সফল অবতরণ করে মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করে। কিউরিওসিটি পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছাতে সময় নিয়েছে নয় বছর । এটি ২০১১ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে যাত্রা শুরু করে এবং ৫৭ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছায়।
লাল গ্রহের বিশাল আকৃতির আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ গেইলের ভূতত্ত্ব সম্পর্কে জানা। রোবটটি এর লেজার ব্যবহার করে সেখানকার শিলাখণ্ড ছিদ্র করে গ্রহের প্রাচীন আবহাওয়া ও জলবায়ু জানার চেষ্টা করবে। এতে জানা যাবে, মঙ্গল কখনও আনুবীক্ষণিক জীব বসবাসের উপযোগী ছিল কি না এবং এখন সেখানে জীবনধারণের মতো পরিবেশ আছে কি না বা ভবিষ্যতে সে অবস্থা তৈরির সম্ভাবনা আছে কি না। এক কথায়, প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি কিলোমিটার পেরিয়ে মঙ্গলে সফল অবতরণ করা রোভার কিউরিওসিটির মিশনের উদ্দেশ্য মঙ্গলের আবহাওয়া ও প্রাণের অস্তিত্ব অনুসন্ধান। ইতোমধ্যেই কিওরিসিটি পৃথিবীর বুকে মঙ্গলপৃষ্ঠের নতুন ছবি পাঠাতে শুরু করেছে। কিউরিওসিটি যে ছবি পাঠিয়েছে তাতে ধরা পড়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, মরুভূমির মতো বিস্তৃত রুক্ষ প্রান্তর যা কিনা অনেকটা পৃথিবীর মরুভূমির মতোই মঙ্গলের এই মরুভূমি। লালগ্রহে জলের অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে কিউরিওসিটি। নাসার তরফে দাবি করা হয়েছে, কিউরিওসিটি মঙ্গলগ্রহের যেখানে অবতরণ করেছে সেই এলাকা দিয়ে একসময় বয়ে যেত জলের ধারা। ক্রেটারের উত্তরদিকে মাউন্ট শার্প এলাকায় একটি পাথরের খণ্ডের ছবি পৃথিবীতে পৌঁছনোর পরেই উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: রাশিয়ান মডিউলের ধাক্কায় বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেল আন্তর্জাতির স্পেস স্টেশন!