মঙ্গলের বুকে সফল Ingenuity, ১২তম উড়ানের পরেও চাঙ্গা মার্স হেলিকপ্টার, বাড়ছে অভিযানের মেয়াদ

নাসার মার্স রোভার পারসিভের‍্যান্সের সফর সঙ্গী হয়েছে হেলিকপ্টার Ingenuity। মঙ্গলগ্রহের বুকে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না তা জানতেই খোঁজ চালাচ্ছে রোভার পারসিভের‍্যান্স। 

মঙ্গলের বুকে সফল Ingenuity, ১২তম উড়ানের পরেও চাঙ্গা মার্স হেলিকপ্টার, বাড়ছে অভিযানের মেয়াদ
লালগ্রহের বুকে নাসার মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 5:28 PM

মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশে পাঁচবার ওড়ার কথা ছিল নাসার মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity- র। কিন্তু ইতিমধ্যেই নয় নয় করে একডজন অর্থাৎ ১২টি উড়ান সম্পূর্ণ করেছে নাসার মার্স হেলিকপ্টার। এখনও অভিযানে অব্যাহতি দিতে রাজি নয় সে। শুধু তাই নয়, লালগ্রহের বুকে ইতিমধ্যেই ছয় মাস কাটিয়ে ফেলেছে এই হেলিকপ্টার Ingenuity। এ যাবৎ মোটামুটি সফল ভাবেই অভিযান করেছে নাসার মার্স হেলিকপ্টার। আর মার্কিন স্পেস এজেন্সি তাই হেলিকপ্টার Ingenuity- র অভিযানের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নাসার মার্স রোভার পারসিভের‍্যান্সের সফর সঙ্গী হয়েছে হেলিকপ্টার Ingenuity। মঙ্গলগ্রহের বুকে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না তা জানতেই খোঁজ চালাচ্ছে রোভার পারসিভের‍্যান্স।

Ingenuity- র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং দলের প্রধান Josh Ravich জানিয়েছেন, সবকিছুই ভীষণ ভালভাবে হচ্ছে। মঙ্গলের মাটিতে আমরা যা অনুমান করেছিলাম তার থেকে অনেক ভাল ভাবে কাজ করছে হেলিকপ্টার Ingenuity। প্রায় ১০০ জন সদস্য নিয়ে হেলিকপ্টার Ingenuity- র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং টিম তৈরি হয়েছিল। এখন অবশ্য হাতেগোনা কয়েকজন প্রতিদিন নজর রাখেন Ingenuity- র কার্যকলাপ ও গতিবিধির উপর। জানা গিয়েছে, Josh Ravich এই দলে যোগ দিয়েছিলেন পাঁচ বছর আগে।

গত ১৯ এপ্রিল প্রথমবারের জন্য মঙ্গলের মাটিতে উড়েছিল হেলিকপ্টার Ingenuity। এই প্রথম পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহে এভাবে হেলিকপ্টার ওড়ানো হয়েছে। Ingenuity মূল কাজ হল ভালভাবে লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশ পর্যবেক্ষণ করা এবং ছবি তুলে নাসার বিজ্ঞানীদের কাছে পাঠানো। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্পেসফ্লাইটের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে Ingenuity। তাকে স্পেস ড্রোনের সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে। ৪ পাউন্ডের এই কপ্টারের চারটি কার্বন-ফাইবার ব্লেড রয়েছে। এক মিনিটে ২৫০০ বার ঘুরতে পারে এই ব্লেড, তাও আবার উল্টো দিকে। পৃথিবীতে যেসব হেলিকপ্টার রয়েছে তার থেকে Ingenuity- র গতি অন্তত পাঁচ গুণ বেশি। আর সেই জন্যেই মঙ্গল গ্রহের অত্যন্ত হাল্কা এবং পাতলা মার্সিয়ান অ্যাটমোসফিয়ারেও এই ব্লেডের ঘূর্ণণ শক্তির সাহায্যেই কপ্টার Ingenuity উড়েছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গল গ্রহে সফলভাবে অবতরণ করেছিল নাসার পাঠানো রোভার পারসিভের‍্যান্স। তার কয়েকদিন পর মার্চ মাসে মঙ্গলের মাটি ছুঁয়েছিল হেলিকপ্টার Ingenuity। প্রথমে ১১ এপ্রিল এই হেলিকপ্টারের ওড়ার কথা ছিল। তবে সামান্য যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায় প্রথম উড়ান পিছিয়ে দেন বিজ্ঞানীরা। এরপর ১৯ এপ্রিল প্রথমবার সফলভাবে পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহে উড়েছিল হেলিকপ্টার।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গল গ্রহে রাতে তাপমাত্রা -৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও নেমে যায়। এই পরিস্থিতিতে হেলিকপ্টার ঠিকভাবে থাকাটাই আসল ব্যাপার। এখানে রয়েছে একটি হিটার। হেলিকপ্টারে থাকা এই হিটার মার্স হেলিকপ্টারের ভিতরের অংশের তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে পারে। এর ফলে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ যেমন ব্যাটারি এবং অন্যান্য সেনসিটিভ ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট অত ঠাণ্ডাতেও ঠিক থাকবে। সঠিক ভাবে কাজ করবে হেলিকপ্টারের সোলার প্যানেল।

আরও পড়ুন- Unity 23: প্রথম কমার্শিয়াল রিসার্চ মিশন চালু করতে চলেছে ভার্জিন গ্যালাকটিক সংস্থা