Viral: কনের সাজে পরীক্ষায় বসে ভাইরাল হয়েছিলেন গত বছর, এতদিন পর সামনে এল আসল সত্যিটা

Girl In Bridal Lehenga Gives Exam: কনের সাজে গত বার পরীক্ষা দিয়ে খুব ভাইরাল হয়েছিলেন। আর এবার জানালেন এমন ছবি ভাইরাল হওয়ার পিছনে আসল কারণটা কী ছিল। গুজরাতের সেই কন্যের গল্পটা আপনিও একবার শুনুন, অনুপ্রাণিত হবেন।

Viral: কনের সাজে পরীক্ষায় বসে ভাইরাল হয়েছিলেন গত বছর, এতদিন পর সামনে এল আসল সত্যিটা
কনের সাজে পরীক্ষা দিয়ে ভাইরাল হয়েছিলেন শিবাঙ্গী বাগাথারিয়া।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 27, 2022 | 1:37 PM

পরনে তাঁর লেহেঙ্গা। কনের (Bride) সাজে তিনি তৈরিই ছিলেন। কিন্তু হাতে যে তাঁর পেন। আর সেই পেন হাতেই তিনি আসমুদ্র হিমাচলের মন জয় করেছিলেন। পড়াশোনা শেষ না করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়া এমন অনেক ভারতীয় নারীর মনের গহীন করে আসন গেড়ে বসে পড়েছিলেন। কথা হচ্ছে, গুজরাতের রাজকোটের শিবাঙ্গী বাগাথারিয়া নামের এক মহিলার। গত বছর যিনি সমাজ মাধ্যমগুলির দৌলতে খুব ভাইরাল (Viral) হয়েছিলেন। কারণ? কারণ, তিনি বিয়ের সাজে সেজেই পৌঁছে গিয়েছিলেন পরীক্ষার (Examination) হলে। আরও অনেক পড়ুয়াদের মতো পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন শিবাঙ্গীও। তফাৎ ছিল একটাই। বাকিদের কাছে সেই দিনটা ছিল কেবলই পরীক্ষার দিন। কিন্তু শিবাঙ্গীর কাছে সেই দিনটা ছিল পরীক্ষা ছাড়াও আর এক কারণে স্পেশ্যাল। সে দিন ছিল তাঁর শুভ পরিণয়ও। কারণ, পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পরই তাঁকে বসতে হত বিয়ের পিঁড়িতে। তাই তো শিবাঙ্গী সে দিন কনের সাজেই পরীক্ষার হলে পৌঁছে গিয়েছিলেন। আর পরীক্ষা শেষ হতেই বাড়ি গিয়ে বসে পড়েন বিয়ের পিঁড়িতে। কিন্তু ঘটনা তো এক বছর আগের। তাহলে আবার কেন শিবাঙ্গী বাগাথারিয়াকে নিয়ে এত হইচই?

সম্প্রতি হিউম্যানস অফ বম্বে-র কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শিবাঙ্গী। আর সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, গত বছরের সেই ভাইরাল ঘটনাটি নিয়ে। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগেও যে পরীক্ষায় বসাটা কত জরুরি, পরীক্ষা এবং সর্বোপরি পড়াশোনার প্রতি তাঁর এমন আগ্রহ – এই সব কিছুর পিছনে কার অনুপ্রেরণা রয়েছে, হিউম্যানস অফ বম্বে-কে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে খোলসা করেছেন শিবাঙ্গী। জানিয়েছেন, পড়াশোনাই তাঁর কাছে সর্বদা গুরুত্বের। আর পড়াশোনার প্রতি এই আগ্রহটাও তাঁর এসেছে মায়ের কাছ থেকে, জানালেন শিবাঙ্গী।

হিউম্যানস অফ বম্বে তাদের ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্টে লিখছে, “মা যখন বাবাকে বিয়ে করেছিলেন, তখন তিনি ছিলেন কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী। তাঁর কয়েক মাস পরেই মা অন্তঃসত্ত্বা হন। আর তার জন্য মা’কে পড়াশোনা মাঝপথেই থামাতে হয়। কিন্তু মা আবার পড়াশোনাটা শুরু করতে চেয়েছিলেন। আমার যখন ৮ বছর বয়স, তখন মা তাঁর ডিগ্রি শেষ করার জন্য পুনরায় কলেজে ভর্তি হন।” শিবাঙ্গী ও তাঁর ভাই সেই কলেজের বাইরে বসে থাকতেন। সেই সময় তাঁর মা পরীক্ষার খাতায় লিখে চলেছেন। লক্ষ্য ছিল একটাই, মাঝপথে থমকে যাওয়া পড়াশোনাটা শেষ করে ফেলা। শিবাঙ্গীর কথায়, “তখন থেকেই মাথার মধ্যে একটা কথা আমি ঢুকিয়ে নিয়েছিলাম যে, আগে পড়াশোনা। তারপরে অন্য কিছু।”

মায়ের থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই ছোটবেলায় পড়াশোনায় খুব মনোনিবেশ করেন শিবাঙ্গী। এমনকী বেশ কয়েকটা বছর লাগাতার তাঁর ক্লাসে থার্ডও হয়ে আসছিলেন তিনি। শিবাঙ্গীর কথায়, “গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর আমি একটা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খুলতে চেয়েছিলাম। আর সেই মোতাবেক ২০১৮ সালে সোশ্যাল ওয়ার্কে স্নাতক পাশ করার জন্য কলেজে ভর্তিও হয়ে যাই।” তারপর এল সেই সময়টা, যখন দেখাশোনা করে বিয়ের জন্য পার্থ এবং শিবাঙ্গীর একে অপরকে পছন্দ হয়ে যায়।

শিবাঙ্গী বললেন, “প্রথম বার যখন আমার পার্থের সঙ্গে দেখা হয়, তখন আমি ওকে জানাই যে, আমার স্বপ্ন সফল করার জন্য যা যা করণীয়, সেগুলির সবই করব। এ বিষয়ে আমি কোনও আপস করতে পারব না।” শিবাঙ্গীর এমনতর দাবিতে পার্থ কী বলেছিলেন? সম্মতি তো জানিয়েই ছিলেন। সেই সঙ্গে বলেছিলেন, “আমিও আমার স্বপ্নপূরণ করতে চাই।” তাতে শিবাঙ্গী আরও যোগ করে বললেন, “যতই আমরা কথা বলতে শুরু করলাম, ততই একে অপরকে আরও পছন্দও করতে থাকলাম।”

এই ভাবে কথাবার্তা চলতে-চলতে এক সময় বিয়েটাও ঠিক হয়ে গেল। তারপর বিয়ের প্রস্তুতিও শুরু হল জাঁকজমক ভাবে। সব কিছু যখন ঠিক, হঠাৎই শিবাঙ্গী জানতে পারলেন বিয়ের দিনই তাঁর ফাইনাল পরীক্ষা। তাঁর কথায়, “এটা যেন আমার কাছে একটা দুঃস্বপ্ন ছিল। কল্পনাও করতে পারিনি যে, বিয়ের দিনই পরীক্ষা হবে। সঙ্গে সঙ্গে পার্থকে ফোন করি। ও আমাকে বলে যে, তুমি যা খুশি করতে পারো। কিন্তু পরীক্ষাটা খবরদার পিছিয়ে দিও না।”

পণ্ডিতকে বলা হয়েছিল, বিয়েটা সকালের পরিবর্তে দুপুরে করতে। আর বিয়ের আগের সারা রাতটা শিবাঙ্গীকে কাটাতে হয় বিউটি পার্লারেই। বললেন, “রাত দুটোর সময় আমি বিউটি পার্লারে পৌঁছে যাই। ওঁরা যখন আমাকে সাজাচ্ছিল, তখন আমি পড়াশোনা করছিলাম।” সেজেগুজে যখন পরীক্ষার হলে পৌঁছলেন, তখন সকাল সাড়ে ১০টা। হলে থাকা অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা তখন তাঁকে দেখে হতবাক। কিন্তু পরীক্ষার হলে থাকা সেই শিক্ষক বাহবা দিয়েছিলেন শিবাঙ্গীকে। বলেছিলেন, “এই পরিস্থিতিতে তোমাকে পরীক্ষার হলে দেখে আমি গর্বিত। পড়াশোনা যে সবার প্রথমে, তা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছো।”

দু’ঘণ্টা পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল শিবাঙ্গীর। এদিকে বিয়ের মণ্ডপে তাঁকে পৌঁছে যেতে হত দুপুর ১টায়। শেষমেশ সেখানে পৌঁছে যেতে পার্থ ও শিবাঙ্গী অনেকটাই সময় নিয়ে নেন। তাঁর কথায়, “দিনটা আমার কাছে এতটাই হেকটিক ছিল যে, বলে বোঝানোর উপায় নেই। কারণ, এই দিনটাই আমার জীবনের সবথেকে সুন্দর দিনগুলির একটি ছিল। আমরা দুজনে যখন মণ্ডপে গিয়ে বসলাম, পার্থ আমাকে বলল যে, আমিই তাঁর অনুপ্রেরণা। এটা শুনে যেন আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলাম।”

বিয়ের মাস ছয়েকের মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হন শিবাঙ্গী। কিন্তু তাতেও থেমে থাকেনি তাঁর স্বপ্নকে সফল করার জার্নিটা। বললেন, “বরং আজ আমি আরও বেশি উৎসাহিত। আমার সন্তানের জন্যও আমি একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ তৈরি করতে চাই। উদাহরণটা হল, আমি নিজের জন্য সবথেকে বেশি কাজ করার পরই অন্যদের হতে পারব। সর্বদা নিজের কাপটা আগে পূরণ করার চেষ্টা করুন।”

আরও পড়ুন: দইভাত ছাড়া খাবে না কুটুস, ফোনে গানও শোনা চাই, দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের এই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল

আরও পড়ুন: মহিলার চুলে আটকে ভয়ঙ্কর সাপের বাচ্চা, ভিডিয়ো দেখে আঁতকে উঠছেন নেটিজেনরা!

আরও পড়ুন: চারটি সংখ্যা লুকিয়ে রয়েছে এই ছবিতে, উত্তরটা বলতে পারবেন?