নাইটগার্ড থেকে আইআইএম- এর অধ্যাপক, কেরলের রামচন্দ্রন অনুপ্রেরণা দেবেন অনেককেই

বেঙ্গালুরুর ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে নতুন কেরিয়ার শুরু হয় রামচন্দ্রনের। এরপর রাঁচি আইআইএম- এ পড়ানোর সুযোগ পান তিনি।

নাইটগার্ড থেকে আইআইএম- এর অধ্যাপক, কেরলের রামচন্দ্রন অনুপ্রেরণা দেবেন অনেককেই
কেরলের যুবক রঞ্জিত রামচন্দ্রন।
Follow Us:
| Updated on: Apr 12, 2021 | 2:04 PM

স্বপ্নপূরণের তাগিদ থাকলে যে সমস্ত বাধাবিপত্তি কাটিয়েও নিজের লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়, সেকথা আরও একবার প্রমাণ করলেন কেরলের রামচন্দ্রন। রুজি-রুটির তাগিদে বেছে নিয়েছিলেন নাইটগার্ডের পেশা। রাতের অন্ধকারে অতন্দ্র প্রহরীর চোখে অবশ্য লেগে থাকত অন্য স্বপ্ন। জীবনে আরও কিছু করার নেশায় তখন বুঁদ ছিলেন বছর ২৮- এর এই যুবক। অবশেষে সাফল্য এসেছে রামচন্দ্রনের জীবনে। রাঁচি আইআইএম- এর অধ্যাপক (অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর) হিসেবে নতুন জীবন শুরু করেছেন কেরলের কাসারগোড় জেলার বাসিন্দা রঞ্জিত রামচন্দ্রন।

নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্মেছিলেন রামচন্দ্রন। বাবা পেশায় দর্জি। মা MNREGA কর্মী। বাড়ির বড় ছেলে রামচন্দ্রন ছোট থেকেই অভাব অনটন দেখেছেন সংসারে। বর্ষায় কুঁড়েঘরের ছাদ ভেঙে জল পড়া হোক বা দু’বেলা দুমুঠো অন্নের সংস্থান করতে হিমশিম খাওয়া, এইসব ছিল রামচন্দ্রনের নিত্যসঙ্গী। তাই অল্প বয়স থেকেই তিনি বুঝেছিলেন জীবনে সাফল্য এবং সম্মানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। একটু বড় হতেই কাজ শুরু করেন। বিএসএনএল টেলিফোন এক্সচেঞ্জে নাইটগার্ডের কাজ পান এই যুবক। কিন্তু হাজার বাধা-বিপত্তি, অভাব-অনটনেও নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন রামচন্দ্রন।

মাসিক চার হাজার টাকার বেতনে নাইটগার্ডের চাকরি শুরু করেন রামচন্দ্রন। স্কুল এবং কলেজের পর চাকরির জায়গাই ছিল তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি। নিজের বাড়িতে শুধু খেতে যেতেন তিনি। তবে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যেই নিষ্ঠা এবং সাধনার সঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। স্কুলের পর কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিও পেরিয়েছেন সাফল্যের সঙ্গে। এরপর মেধার জোরেই পৌঁছন আইআইটি মাদ্রাসে। পিএইচডি শুরুও করেছিলেন রামচন্দ্রন। কিন্তু মাঝপথেই ছাড়তে হয় পড়াশোনা। কারণ আইআইটি-তে গিয়ে সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি রামচন্দ্রন। কেউই তাঁকে আপন করে নেয়নি।

আরও পড়ুন- ১৫ ফুট গভীর কুয়ো থেকে উদ্ধার এক বছরের হস্তি শাবক, বনবিভাগের কর্মীদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজ়েনরা

সেই সময়েই রামচন্দ্রনের জীবনে আসেন প্রফেসর ডক্টর সুভাষ শশীধরন এবং তাঁর স্ত্রী বৈদেহি। আইআইটি মাদ্রাসের ক্যাম্পসেই থাকতেন তাঁরা। সেখানকারই শিক্ষক ছিলেন ডক্টর শশীধরন। পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য রামচন্দ্রনকে সমর্থন করেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের দৌলতেই ২০১৬ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি শেষ করেন রামচন্দ্রন।

বেঙ্গালুরুর ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে নতুন কেরিয়ার শুরু হয় রামচন্দ্রনের। এরপর রাঁচি আইআইএম- এ পড়ানোর সুযোগ পান তিনি।