তৃণমূলের উপর হামলার অভিযোগ আব্বাস সিদ্দিকির দলের বিরুদ্ধে, রণক্ষেত্র মধ্যমগ্রাম
দিন কয়েক আগে ভাঙড় ও মধ্যমগ্রামে আব্বাস সিদ্দিকির অনুগামীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে, এবার উল্টো অভিযোগ
মধ্যমগ্রাম: দিন কয়েক আগে ভাঙড় ও মধ্যমগ্রামে আব্বাস সিদ্দিকির (Abbas Siddiqui) অনুগামীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। এবার উল্টো অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামেই। ফুরফরা শরিফের পীরজাদা তথা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (ISF) দলের প্রধান আব্বাস সিদ্দিকির অনুগামীদের বিরুদ্ধে শাসক দলের নেতার বাড়ি ও পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠল মধ্যমগ্রাম থানার রহণ্ডা চণ্ডীগড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।
অভিযোগ, সিদ্দিকি দলের কর্মীরা তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি আজগর আলির বাড়িতে হামলা চালান। সেই সঙ্গে তৃণমূলের পার্টি অফিসেও তাণ্ডব চালানো হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় চণ্ডীগড়। স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি আজগর আলির অভিযোগ, রাতে হামলার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। বাড়ির মহিলারা তাঁকে ফোন করে জানান প্রায় ১০০ বাইক বাহিনী এসে বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। বাড়ির গেট ভাঙা হয়েছে। এমনকি মহিলাদের শ্লীলতাহানি হয়েছে বলে আব্বাস অনুগামীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অভিযোগ করেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, তৃমমূল নেতার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আব্বাস সিদ্দিকীর দলবল শাসক দলের পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। সেখানে কয়েক রাউন্ড গুলি চালান হয় বলে দাবি আজগরের। হামলার খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মধ্যমগ্রাম থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা হয়। এই ঘটনায় আব্বাস সিদ্দিকির দলের বিরুদ্ধে মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেষমেশ নতুন দলের ঘোষণা সিদ্দিকির .
কিন্তু কী কারণে এই হামলা তা পরিষ্কার হয়নি এখনও। তবে তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিদ্দিকির দল। আইআসএফের বরাসত মহকুমা সম্পাদক কুতুবউদ্দিন ফাতেহীর দাবি, তৃণমূল মিথ্যা কথা বলছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এই ঘটনা ঘটে বলে দাবি তাঁর। কুতুবউদ্দিনের কথায়, ‘ভাইজানের ছেলেরা কোনওভাবেই এই হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না।’
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে ভাঙড় ও মধ্যমগ্রামে আব্বাস সিদ্দিকির দলের সদস্যদের মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মধ্য়মগ্রামে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদার সভার আগে পতাকা লাগানো কেন্দ্র করে গণ্ডগোল হয়। সিদ্দিকির দলের অভিযোগ ছিল, বিনা প্ররোচনায় তাদের সমর্থকদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল। সেই ঘটনার রেশেই শুক্রবারের হামলা হল কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
২০১১ থেকে বাংলার প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট ছিল তৃণমূলের দিকে। কিন্তু এই ছবিটা পাল্টে যায় ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে। দেখা যায়, ১৮টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত লোকসভা আসনের ৪টি চলে গিয়েছে বিজেপির হাতে। বালুরঘাট, কোচবিহার, বনগাঁ ও রাণাঘাটের আসন বিজেপির হাতে চলে যাওয়া তৃণমূলের কাছে অবশ্যই একটা চিন্তার কারণ। তার মধ্যে একুশের ভোটে আব্বাস সিদ্দিকি একটা বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।