‘মজবুর’ নয়, সংখ্যালঘুদের ‘মজবুত’ হওয়ার বার্তা দিয়ে প্রচার শুরু মিমের
দলের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নির্দেশে মূলত একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এ রাজ্যে নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে মিমের রাজ্য নেতৃত্ব। আগামী দিনে ধাপে ধাপে রাজ্যজুড়ে সংখ্যালঘু এলাকাগুলোতে বেছে বেছে মিম সভা চালিয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: গত সপ্তাহেই বাংলার মিম (AIMIM) সংগঠনকে নিয়ে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে হায়দরাবাদে একটি বৈঠক করেছিলেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। সেই মতো বেছে বেছে এবার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় বিধানসভা (West Bengal Assembly Election 2021) ভোটের প্রচার শুরু করল মিম।
শনিবার বিকেলে উস্তির সংগ্রামপুরে জনসভা করল অল ইন্ডিয়া মজলিস এ ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম)। সভায় উপস্থিত ছিলেন মিমের রাজ্যস্তরের নেতা ইমরান সোলাঙ্কি, দিলওয়ার হোসেন, নিজামুদ্দিন কাসেমী-সহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃত্বরা। হাজারের বেশী কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য জনসভা থেকে মিম নেতারা স্লোগান তোলেন ‘মজবুর নন, মজবুত হন’। সভায় বক্তব্য রাখেন মিমের রাজ্য নেতা নিজামুদ্দিন কাসেমী। তিনি বলেন, ‘এলাকার উন্নয়ন আদৌ কি হয়েছে, তা এই এলাকার রাস্তাঘাটের হাল দেখলে পরিষ্কার। এখনও বেহাল হয়ে রয়েছে রাস্তাঘাট। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যের বেহাল পরিকাঠামোটা মানুষের চোখের সামনে পরিষ্কার। সংখ্যালঘুদের জন্য কোনও উন্নয়ন করেনি। ফলে এবার বদলা নয়, বদলের দিন আসছে। এখন থেকে একজোট হয়ে সতর্ক হোন।’
মিম সূত্রে খবর, দলের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নির্দেশে মূলত একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এ রাজ্যে নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে মিমের রাজ্য নেতৃত্ব। আগামী দিনে ধাপে ধাপে রাজ্যজুড়ে সংখ্যালঘু এলাকাগুলোতে বেছে বেছে মিম সভা চালিয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, এদিন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীও তৃণমূলের বিরোধিতা করে সংখ্যালঘুদের এক জোট করতে মাঠে নেমে পড়েছেন। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভার সংগ্রামপুরে এদিনের সভায় মিমের সমর্থনে সংখ্যালঘুদের ভিড় হওয়ায় কিছুটা হলেও তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বস্তিতে পড়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু জের: জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, কোথাও ছবিতে কালি, কোথাও জুতোর মালা!
যদিও মিমের সভা নিয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখতে আগামী দিনে ওই এলাকায় তৃণমূল নেতৃত্ব পাল্টা সভা করবে বলে জানা গিয়েছে। মগরাহাট ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের যুব সভাপতি ইমরান হাসান জানান, ‘শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষা, সারা বছরই মানুষের পাশে থাকে তৃণমূল। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু-সহ সর্বস্তরের অসহায় মানুষদের কথা ভেবে ৬৯টি প্রকল্প চালু করেছেন। যার সুফলও পাচ্ছেন এ রাজ্যের গরীব মানুষেরা। রাস্তাঘাট থেকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছেন। এতদিন এরা কোথায় ছিল? মানুষ কি বোকা? ভোট যত এগিয়ে আসছে, বহিরাগতরা উড়ে এসে এ রাজ্যের মানুষের শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ধর্মে ধর্মে বিভাজন তৈরি করতে চাইছে। এসব করে কোনও লাভ হবে না। শেষ হাসি হাসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
আরও পড়ুন: ঘড়িতে ১১টা ৩ মিনিট হতেই শান্তিকুঞ্জ থেকে বেরলেন শুভেন্দু! কারণ আছে, বলছেন অনুগামীরা