Buxa Tiger Reserve: ৪ বছরে না এল বাঘ, না মিলল অনুদান, আশঙ্কায় দিন কাটছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দুই বনবস্তির মানুষের

Buxa Tiger Reserve: বক্সা ব‍্যাঘ্র প্রকল্পে অন্তগত গাঙ্গুটিয়া বনবস্তিতে ৬৩ টি পরিবারের বসবাস এই গ্ৰামে। ১৯৫ জন প্রাপ্ত বয়ষ্ক মানুষের বসবাস যেমন করেন, অপরদিকে ভুটিয়া বস্তিতে প্রায় ১৫০ মানুষের বসবাস।

Buxa Tiger Reserve: ৪ বছরে না এল বাঘ, না মিলল অনুদান, আশঙ্কায় দিন কাটছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দুই বনবস্তির মানুষের
(নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 27, 2023 | 6:29 PM

আলিপুরদুয়ার: বক্সার দুয়ারে বাঘ ( Buxa Tiger Reserve)। বাঘ আনার নামে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দুটি বনবস্তিকে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প। কিন্তু আশ্বাস পাওয়া সত্ত্বেও মেলেনি আর্থিক অনুদান। কবে মিলবে প‍্যাকেজ, সঠিক উত্তর জানে না কেউ। অনুদান না‌ পাওয়ার দরুণ এই দুই বনবস্তির যুবতীদের বিবাহ আটকে রয়েছে।

দুশ্চিন্তায় আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা ব‍্যাঘ্র প্রকল্পের অন্তগত কালচিনি ব্লকের গাঙ্গুটিয়া ও কুমারগ্ৰাম ব্লকের ভুটিয়া বনবস্তির বাসিন্দারা। বক্সা ব‍্যাঘ্র প্রকল্পে অন্তগত গাঙ্গুটিয়া বনবস্তিতে ৬৩ টি পরিবারের বসবাস এই গ্ৰামে। ১৯৫ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ বসবাস যেমন করেন, অপরদিকে ভুটিয়া বস্তিতে প্রায় ১৫০ মানুষের বসবাস। এই দু’টো বনবস্তিতে প্রায় ৩৫০ জন মানুষ রয়েছেন। বক্সা জঙ্গলে বাঘ আনা হবে এবং বাঘের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন‍্য গাঙ্গুটিয়া ও ভুটিয়া বস্তি এই দুটি বনবস্তির প্রায় ৩৫০ জন বাসিন্দাকে অন‍্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেয় বনদফতর। একই সঙ্গে বয়স্ক নাগরিকদের প্রত‍্যেককে ১৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়ারও কথা হয়।

গাঙ্গুটিয়া ও ভুটিয়া বনবস্তির বাসিন্দারা জানান, চার বছর পূর্বে বনদফতর থেকে জানানো হয় বক্সা জঙ্গলে বাঘ ছাড়া হবে। এবং বাসিন্দাদের গ্ৰাম ছেড়ে অন‍্যত্র চলে যেতে হবে। এবং বাসিন্দাদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। অনুদান পাওয়ার আশ্বাসেই এই দু’টি বনবস্তি সমস্ত বাসিন্দারা লিখিতভাবে জানিয়ে দেন তাঁরা অন‍্যত্র যেতে ইচ্ছুক। কিন্ত দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এই দু’টি বনবস্তির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু হয়নি। মেলেনি আর্থিক অনুদান। এখনও আনা হয়নি বাঘও।

গাঙ্গুটিয়া বনবস্তির অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষিজীবী। গ্ৰামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে খরস্রোতা গাঙ্গুটিয়া নদী। এই গাঙ্গুটিয়া নদীর ভাঙনে ইতিমধ্যে গাঙ্গুটিয়া বস্তির অধিকাংশ জমি নদী গর্ভে চলে গিয়েছে এমনকী অনেকের ঘর নদী গর্ভে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বাসিন্দারা জানান, গ্ৰামে প্রবেশের সড়কও খারাপ। একে ভাঙনের সমস্যা অপরদিকে গ্ৰামে কোনও উন্নয়নের কাজ হচ্ছে না। এই বিষয়ে বিভিন্ন দফতরে আবেদন করলে জানানো হয় শীঘ্র এই গ্ৰামের বাসিন্দাদের অন‍্যত্র নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু গ্ৰামবাসীদের প্রশ্ন, কবে আর্থিক প‍্যাকেজ মিলবে। দীর্ঘ চারবছর হল ।

গাঙ্গুটিয়া বনবস্তি বাসিন্দারা জানান, গ্ৰামে কোনও উন্নয়ন নেই। ভাঙনে ভিটে মাটি সব যাওয়ার উপক্রম। অপরদিকে আর্থিক অনুদান কবে মিলবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। বর্তমানে দুশ্চিন্তায় তারা। বাসিন্দারা আরও জানান, বর্তমানে এমন অবস্থা এসেছে যে গ্ৰাম ছেড়ে অন‍্যত্র চলে যাওয়ার উপক্রম হয়ে এসেছে।

অপরদিকে, জয়ন্তী নদী পেরিয়ে অন‍্যতম প্রত‍্যন্ত এলাকা ভুটিয়া বনবস্তি বর্ষাকালে যখন খরস্রোতা জয়ন্তী নদীর জল বেড়ে যায় তখন ভুটিয়া বনবস্তির বাসিন্দাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় । এছাড়া এই গ্ৰামে রয়েছে আরও সমস‍্যা।

গত ৪ এপ্রিল আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটে এসেছিলেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। জানিয়েছিলেন, গাঙ্গুটিয়া ও ভুটিয়া এই দু’টি বনবস্তির প্রায় ৩৫০ জন বাসিন্দাদের শীঘ্র অন‍্যত্র স্থানান্তরিত করা হবে। এই দু’টি গ্ৰাম সরলে আস্তে আস্তে অন‍্য বনবস্তির বাসিন্দাদেরও সরানো সম্ভব হবে। সবাই পাবেন আর্থিক অনুদান। কিন্ত কবে দেওয়া হবে সেই অনুদান? এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এখনও অবধি কেন্দ্রের টাকা মেলেনি।

যদিও এই বিষয়ে বিজেপি নেতা রাজেষ বারলা জানান, “আমাদের দাবি শীঘ্র গাঙ্গুটিয়া ও ভুটিয়া বস্তির বাসিন্দাদের আর্থিক প‍্যাকেজ প্রদান করুক বনদফতর।”

তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি প্রকাশ চিকবরাইক‌ জানান, “সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। শীঘ্র আর্থিক প‍্যাকেজ প্রদান করে গাঙ্গুটিয়া ও ভুটিয়া বস্তির বাসিন্দাদের অন‍্যত্র স্থানান্তরিত করা হবে।”