Mamata-Nadda: হাসিমারায় কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’ নিয়ে সরব মমতা, নদিয়ায় নাড্ডা বললেন, রাজ্যের ‘দুর্নীতি’র কথা

Nadia: জেপি নাড্ডা বলেন, "মনরেগাতে এখানে দুর্নীতি হয়েছে। বলতে খারাপ লাগছে, এটা বাংলার কী অবস্থা? দিদি আপনি বাংলার কী অবস্থা করেছেন?"

Mamata-Nadda: হাসিমারায় কেন্দ্রের 'বঞ্চনা' নিয়ে সরব মমতা, নদিয়ায় নাড্ডা বললেন, রাজ্যের 'দুর্নীতি'র কথা
হাসিমারায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদিয়ায় জেপি নাড্ডা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 19, 2023 | 7:07 PM

আলিপুরদুয়ার ও নদিয়া: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) যখন উত্তরবঙ্গ থেকে একের পর এক কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলছেন, ঠিক সেই সময় দক্ষিণবঙ্গে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিষোদগার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার (JP Nadda)। রাজ্যে হাইভোল্টেজ বৃহস্পতিবার। পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও রাজ্যের শাসকদল ও প্রধান বিরোধী শিবির প্রচার শুরু করে দিয়েছে। যেহেতু পরের বছরই লোকসভা ভোট, তাই পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের সঙ্গেই চলছে লোকসভা ভোটের প্রচারও। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের হাসিমারায় সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেপি নাড্ডার সভা ছিল নদিয়ার বেথুয়াডহরিতে। হাসিমারা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সমস্ত ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে। রাজ্য নিজেদের চেষ্টায় কর্মদিবস তৈরি করেছে। অন্যদিকে জেপি নাড্ডা এদিন বলেন, “মনরেগাতে এখানে দুর্নীতি হয়েছে। বলতে খারাপ লাগছে বাংলার কী অবস্থা। দিদি আপনি বাংলার কী অবস্থা করেছেন?” দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্র প্রাপ্য টাকাও দেয় না বলে অভিযোগ রাজ্যের শাসকদলের। বৃহস্পতিবার হাসিমারার সভা থেকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের সব ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে। ১০০ দিনের কাজে যারা কাজ করেছেন, টাকা দেয়নি। ৬ হাজার কোটি টাকা পাই। জব কার্ড হোল্ডারদের টাকা দেয়নি। আমরা নিজেরা রাজ্যের থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডারকে কাজ দিয়েছি। ১০০ দিনে কাজ করালে অথচ টাকা দেবে না?”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একইসঙ্গে বলেন, রাজ্য সরকার করের টাকা নেয় না। তা নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় সরকার। মমতার কথায়, “করের টাকার ৬০ শতাংশ আমরা পাই। সেই টাকা পর্যন্ত দেয় না। এখান থেকে ইনকাম ট্যাক্স নিয়ে যাচ্ছে, আবার রেইডও করা হচ্ছে। কাস্টমস ডিউটি তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আবার রেইডও হচ্ছে। একটা শাড়ির দোকানে গেলে, একটা জিএসটি দিতে হয়, সেটাও তুলে নিয়ে যাচ্ছ। এরপর তো নকুলদানা কিনতেও কর লাগবে।” যদিও জেপি নাড্ডার বক্তব্য, “কেন্দ্র টাকা পাঠায়, এখানে দুর্নীতি হয়। আর তদন্ত হলেই মোদী সরকারের নামে বলতে থাকে। মোদী সরকার সততার সরকার, আপনার সরকার বেইমানের সরকার, এটা বুঝতে হবে।”

১০০ দিনের কাজের টাকার পাশাপাশি আবাস যোজনা নিয়েও এদিন সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “ইতিমধ্যে বাংলার আবাস যোজনায় ১১ লক্ষ বাংলার বাড়ি আমরা তৈরি করেছি। সেই টাকাও দেয়নি। প্রায় ৫০ লক্ষ আবেদন পড়ে আছে। তার মধ্যে অনেকের প্রাপ্য নয়, তবু পেয়েছিল বলে সার্ভে করে ১৭ লক্ষ নাম বাদ দিয়েছি। যারা পাওয়ার উপযুক্ত ১১ লক্ষ জনকে আমরা দিয়েছি। যদি কেন্দ্রীয় সরকার না দেয়, আগামিদিনে আমরা আমাদেরটা বুঝে নেব। আমরা লড়াই করে দেখিয়ে দেব, মানুষের জন্য লড়াই আমরা করতে পারি।” গ্রামীণ রাস্তা, নদীভাঙন থেকে বন্যার টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না বলেও এদিন উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা।

যদিও জেপি নাড্ডার দাবি, “এখানে আবাস যোজনার টাকাও খেয়ে নিয়েছে। আমার বলতে খারাপ লাগছে, শৌচালয়ের পয়সা, মনরেগা সবক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছে। সুকান্ত মজুমদার বলছিলেন, এখানে বালি, কয়লা সবই খেয়ে ফেলেছে এরা। পয়সা পাঠাচ্ছেন মোদীজী আর তুমি এখানে দুর্নীতি করছ? আর যখনই তদন্ত হবে, বলবে সরকার শত্রুতা করছে। চুরিও করবে, গায়ের জোরও খাটাবে? আবাস নিয়ে তদন্ত হলে রেগে যান। আপনারা বলেন কাজ করতে দিচ্ছে না। মনরেগায় কৃষকদের টাকা খাওয়ার তদন্ত হলে তাতেও চিন্তায় পড়ে যান।” ভোট যত এগিয়ে আসছে, রাজ্য-কেন্দ্র তরজা তত জোরাল হচ্ছে। বঞ্চনা বনাম দুর্নীতির অভিযোগের এই তরজা আগামিদিনে নতুন নতুন মোড় নেবে বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের।