Alipurduar : জাঁকজমক করে গরুর বিয়ে দিল গ্রামবাসীরা, কেন?
Alipurduar : গরুর বিয়ে দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষের ঢল নামে এই মেলায়। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন তাঁদের পূর্ব পুরুষেরা আগে মোষের বিয়ে দিত। কিন্তু, এখন মোষ সেই ভাবে না থাকায় গরুর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আলিপুরদুয়ার: আমরা এতদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ব্যাঙের বিয়ে দেখেছি। দেখেছি বট-পাকুঁড়ের বিয়ে। এবার কৃষকদের মঙ্গল কামনায় গরুর বিয়ে দিল গ্রামবাসীরা। এবারে ৫৮বছর বর্ষপূর্তি হলো ৷ আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) ২ নম্বর ব্লকের চাপারেরপাড় ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পলাশতলি বাজার এলাকায় গোরুর বিয়ে উপলক্ষে গোষ্ঠ মেলা অনুষ্ঠিত হল৷ গরুর বিয়ে দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষের ঢল নামে এই মেলায়। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন তাঁদের পূর্ব পুরুষেরা আগে মোষের বিয়ে দিত। কিন্তু, এখন মোষ সেই ভাবে না থাকায় গরুর বিয়ে (wedding ceremony of the cow) দেওয়া হচ্ছে।
এলাকার বেশিরভাগ মানুষই রাজবংশী সম্প্রদায়ের। হিন্দু রীতি মেনে এলাকায় নানারকম পুজোর প্রচলন রয়েছে দীর্ঘদিন থেকেই। এদিকে শ্রী কৃষ্ণের বাল্যকালেও তাঁর সঙ্গে দেখা যেত এই গরুকেই। দেবাদিদেব মহাদেবের বাহন আবার ষাঁড়। এই ভগবান বিষ্ণু, শিব ঠাকুরের পুজোরও বিশেষ প্রচলন রয়েছে। সেখানে গোষ্ঠ মেলা উপলক্ষে এই এলাকায় বরাবরই এই এলাকায় ব্যাপক উন্মাদনা দেখতে পাওয়া যায়। ছোটদের খেলনা থেকে মানুষের নিত্য প্রয়োজনের জিনিস, নানা সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেন বহু ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা। শীতের বিকালে গরম তেলেভাজা আর জিলিপির গন্ধে মম করে গোটা এলাকা। কচিকাচাদের কোলাহলে গমগম করে মেলার মাঠ।
এই মেলা একদিনই চলবে। মেলা প্রাঙ্গনে রয়েছে বিষ্ণু ও শিবের মূর্তি রয়েছে। পুজোও হয়। কৃষি প্রধান এলাকায় কৃষিকে বাঁচানোর জন্যই এই পুজোর আয়োজন করা হয় বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। মেলা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি ধ্রুব রায় বলেন, “এই এলাকা কৃষি প্রধান এলাকা। দীর্ঘ এত বছর ধরে পরম্পরা মেনে পুজো হয়ে আসছে। নিয়ম-নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয়।” এলাকার বাসিন্দা স্বাধীন রায় বলেন, “৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এই রীতি চলে আসছে। আগে মোষের বিয়ে দেওয়া হত। এখন মোষ ওত দেখতে পাওয়া পাওয়া যায় না। তা আমরা এখন গরুর বিয়ে দিই। এবার ৫৮তম বর্ষ। আড়ম্বরের সঙ্গে বসে গরুর বিয়ের অনুষ্ঠান। রাখালরা এদিন লাঠি খেলাতেও মেতে ওঠেন। এটাই আমাদের এই অঞ্চলের একটা সংস্কৃতি বলতে পারেন। কৃষকদের মঙ্গল কামনাতে সমস্ত রীতি-রেওয়াজ মেনে করা হয় এই বিয়ের আয়োজন।”