Bankura: ‘আল্লাহর আপনাকে পছন্দ’! মাঝরাতে জিনের ফোন তুলে ব্যক্তির কী হাল দেখুন

Bankura: তবে হতবাক হওয়ার তখনো বাকি ছিল। ফোন ধরতেই ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তি নিজেকে জিন পরিচয় দেন। বলে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি বিশেষ জায়গায় মণি মাণিক্য,হিরে,জহরত ও সোনা ভর্তি সাত ঘড়া ধন রাখা আছে।

Bankura: 'আল্লাহর আপনাকে পছন্দ'! মাঝরাতে জিনের ফোন তুলে ব্যক্তির কী হাল দেখুন
বাঁকুড়ায় জিনের সঙ্গে কথা বললেন ব্যক্তি? Image Credit source: Tv9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 18, 2023 | 1:32 PM

বাঁকুড়া: রাত তখন হয়েছে অনেকটাই। আচমকাই এক অজানা নম্বর থেকে আসল ফোন। নিজেকে জিন মানে অশরীরি পরিচয় দিয়ে রাজমিস্ত্রিকে সাত ঘড়া মোহর-মণি-মাণিক্য পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন। তারপর ধর্মের ভয় দেখিয়ে ধাপে-ধাপে তাঁর কাছ থেকে ২ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা প্রতারণা। সব হারিয়ে ওই রাজমিস্ত্রি হাজির হলেন সাইবার ক্রাইম থানায়। বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের শ্যামনগর গ্রামের ঘটনা।

বিভিন্ন ভাবে মানুষকে প্রতারণা করার খবর আকছাড় উঠে আসছে। কখনও লিঙ্ক পাঠিয়ে, কখনও ওটিপি দিয়ে, কখনও আবার আধার-প্যান জালিয়ারি করে, কখনও বা বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট চুরি করে! আর এবার অশরীরির দোষ দিয়ে রাজমিস্ত্রির কাছ থেকে যাবতীয় সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ।

কী ঘটেছে?

বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের শ্যামনগর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুদ্দিন মণ্ডল। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। সামান্য রোজগারে কোনও মতে চলে যায়। গত অক্টোবরের শেষ দিকে গভীর রাতে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন আসে আমিনুদ্দিনের কাছে। এত গভীর রাতে ফোন দেখে অবাক হন তিনি।

তবে হতবাক হওয়ার তখনো বাকি ছিল। ফোন ধরতেই ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তি নিজেকে জিন পরিচয় দেন। বলে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি বিশেষ জায়গায় মণি মাণিক্য,হিরে,জহরত ও সোনা ভর্তি সাত ঘড়া ধন রাখা আছে। আল্লাহর নির্দেশে তিন হাজার তিনশো পয়ষট্টি জন জিন সেই সম্পত্তি পাহারা দিচ্ছে। সম্প্রতি দুষ্কৃতীরা ওই এলাকাটিকে অপবিত্র করে দিচ্ছে। তাই আল্লাহর নির্দেশ দ্রুত সেই সম্পদ সরিয়ে তা তুলে দিতে হবে কোনও ধর্মপ্রাণ মানুষের হাতে। সেক্ষেত্রে ধর্মপ্রাণ মানুষ হিসাবে আল্লাহ আমিনুদ্দিনকেই নির্বাচন করেছেন।

ফোনে এমন প্রস্তাব শুনে হকচকিয়ে যান ওই ব্যক্তি। এরপর থেকে প্রায়ই মাঝরাতে ফোন আসতে শুরু করে আমিনুদ্দিনের কাছে বলে তিনি জানান। শেষ পর্যন্ত আমিনুদ্দিন বিশ্বাস করেন সেই কথা।

এরপর জিন নির্দিষ্ট একটি দিনে সেই সম্পদ আমিনুদ্দিনের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা জানায়। তবে শেষ মুহুর্তে জিন জানায় আমিনুদ্দিনের বাড়িতে বাস্তু দোষ থাকায় সেই সম্পদ পৌঁছানো যাচ্ছে না। বাস্তু দোষ কাটাতে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার পালনের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ধাপে ধাপে আমিনুদ্দিনের কাছে অনলাইনে টাকা চাইতে থাকে অশরীরি। দেখানো হয় ধর্মের ভয়ও।

আমিনুদ্দিনের দাবি, প্রথমে জিনের প্রলোভনে পা দিয়ে এবং পরে ভয়ে ধার দেনা করে ধাপে ধাপে মোট ২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা পাঠায় আমিনুদ্দিন। এরপর আমিনুদ্দিন বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তখনই বাঁকুড়া সাইবার থানায় দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন আমিনুদ্দিন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।